মানুষ সুখটাকে মনে রাখে কম, বেশি মনে রাখে কষ্টগুলোকে

হামিদা খাতুন পান্না | মঙ্গলবার , ৩০ আগস্ট, ২০২২ at ৬:৪২ পূর্বাহ্ণ

কাউকে এতটা কষ্ট দিও না, যাতে সেই মানুষটা শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করার পূর্বক্ষণেও তোমার কষ্টের কথাটা মনে পড়লে চোখের কোণায় ক’ফোঁটা পানি না জমে যায়। আমাদের জীবনে অনেক মানুষ আসবে, আবার চলেও যাবে। এই আসা যাওয়ার মাঝখানে কারো কাছে মিলবে কষ্ট, কারো কাছে মিলবে একটুখানি সুখ। এই পৃথিবীতে কোনোকিছুই স্থায়ী নয়, এমনকি আমাদের জীবনটাও। এখন আছি, একটু পরে নাও থাকতে পারি। চোখের পলক পড়তে যতটুকু সময় লাগে, একটা মানুষের মৃত্যু ঘটতেও ততটুকু সময় লাগেনা। সেখানে আমাদের দাম্ভিকতা, অহংকার, কাউকে কষ্ট দেয়া, বাঁকা কথা বলা, কারো চোখের জলের কারণ হওয়াগুলো কিন্তু ইহকাল এবং পরকালে আমাদের জন্য শাস্তির সাক্ষীস্বরূপ।
প্রত্যেকটা মানুষ অন্যের কাছ থেকে সুখের চেয়ে দুঃখ পাবার কথাটাই বেশি মনে রাখে। কাউকে খুব করে কষ্ট দিলে, কষ্ট পাবার পর মানুষটা কিন্তু তোমার সীমানায় আর থাকবে না। চিরতরে হারিয়ে যাবে। কিন্তু যাবার বেলায় তোমার কাছ থেকে যে কষ্টটা নিয়ে গেল, সেটা কিন্তু শেষ নিঃশ্বাস অব্দি তার মনে থাকবে। দীর্ঘশ্বাস ফেলবে, কখনো বা আবার কাঁদবে। আর তোমার কাছ থেকে যদিও কোনো সময় সামান্য সুখ পেয়েও থাকে, তবে বিদায় বেলার এই কষ্টের কাছে সেটা কিন্তু কিছুই নয়। মানুষ সুখটাকে মনে রাখে কম, কষ্টগুলো মনে রাখে যুগের পর যুগ। সুখের সময়গুলো মানুষ যত দ্রুত ভুলে যায়, দুঃখের সময়গুলো কিন্তু ওতো সহজে ভুলে যায় না। কেননা দুঃখগুলো মনে কঠিনভাবে দাগ কাটে, বিষণ্নতায় ভোগায়, অনেক বেশি কাঁদায়। শেষ ভালো যার, সব ভালো তার। কাউকে কাছে না রাখতে পারো, তবে তাকে বুঝিয়ে শুনিয়ে পরামর্শ করে সুন্দরভাবে বিদায় করে দাও। কাউকে প্রচণ্ড কষ্ট দিয়ে, মনে আঘাত দিয়ে বিদায় করে দিও না। হতে পারে মানুষটার সাথে আর তোমার কোনোদিন দেখা হলো না, কথা হলো না, ক্ষমা চাওয়াটাও হলো না। কেউ হয়তো শেষ অব্দি থেকে যায়, কেউবা আবার শুরুতেই নয়তো মাঝপথে ছেড়ে যায়। তাই বলে যে কাউকে প্রচণ্ড কষ্ট দিয়ে ছেড়ে দিবে, তার কোনো মানে নেই। মানুষ মাত্রই ক্ষণিকের সম্পর্ক, মানুষ মাত্রই ভুল। ভুল মানুষকে এড়িয়ে চলতে পারি, কিন্তু প্রচণ্ড কষ্ট দিয়ে এড়িয়ে চলাটা মনুষ্যত্ববোধ হতে পারে না।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীবের বৈশিষ্ট্য কি হারিয়ে ফেলছি?
পরবর্তী নিবন্ধনোঙর হবে? কখন হবে?