জীবনের জন্য, সফলতার জন্য এবং মানবসভ্যতার বিকাশের জন্য প্রয়োজন বই। বই পড়তে হবে, বই লিখতে হবে এবং বইয়ের সঙ্গে করতে হবে মিতালি। বই আমাদের জীবনের পরম বন্ধু। বই পড়লে জীবনের পদে পদে এর প্রভাব লক্ষ করা যায়। বই সম্পর্কে কথাগুলো বলছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় বাংলা বিভাগের প্রফেসর ড. মোহাম্মদ শেখ সাদী। আজ বই দিবস। বিশ্ব বই দিবস হলো পড়া, প্রকাশনা এবং কপিরাইট প্রচারের জন্য জাতিসংঘের শিক্ষা, বৈজ্ঞানিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন (ইউনেস্কো) দ্বারা আয়োজিত একটি বার্ষিক দিবস। ১৯৯৫ সালের ২৩ এপ্রিল ইউনেস্কো প্রথমবারের মত বিশ্ব বই দিবস উপযাপন করে। এরপর থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রতিবছর ২৩ এপ্রিল বিশ্ব বই দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।
বই নিয়ে প্রফেসর ড. মোহাম্মদ শেখ সাদী বলেন, মানুষের জীবনে বইয়ের কোনো বিকল্প নেই। বই পরিপূর্ণ জীবন তৈরি করার ক্ষেত্রে অবিকল্প। বই পড়লে মানুষের চিন্তার জগৎ, অন্তর জগৎ, উপলব্ধির জগৎ প্রশস্ত হয়। বর্তমানে পৃথিবীতে মানবিক মূল্যবোধের অভাব, এটা কেবল মাত্র দূর হতে পারে বই পড়ার মাধ্যমে। তিনি বলেন, বর্তমানে আগের মতো কেউ বই পড়ে না। বই পড়ার অনুপাত কমে গেছে। সেজন্য আমাদের মানবিক সংকটের জায়গাগুলো খুব তীব্র হয়ে গেছে। তাই মানুষ তৈরির ক্ষেত্রে বই পড়ার কোনো বিকল্প নেই। বর্তমানে প্রযুক্তির বদৌলতে নতুন মাধ্যম আসলেও বইয়ের প্রয়োজন থেকেই যাবে অনন্তকাল।
শেখ সাদী বলেন, বই পাঠকের মানসিক উত্তেজনা বৃদ্ধি করে। এক গবেষণায় দেখা গেছে, অধ্যয়ন ডিমেন্সিয়া ও আলজেহিমা নামের এই রোগ দুটিকে হ্রাস, এমনকি প্রতিরোধ করতেও সাহায্য করে। মস্তিষ্ককে সচল রাখলে তা কখনোই তার ক্ষমতা হারাবে না। মস্তিষ্ককে শরীরের একটি সাধারণ পেশি হিসাবে বিবেচনা করে বই পড়া চর্চার মাধ্যমে নিয়মিত ব্যায়াম করলে তা শক্তিশালী ও সজীব থাকে। তিনি বলেন, বই পড়লে শব্দভান্ডার সমৃদ্ধ হয় এবং শব্দচয়ন ও বাক্য বিন্যাসের অভিজ্ঞতা অর্জিত হয়। যত বেশি বই পড়া হয়, তত বেশি শব্দভান্ডারে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন শব্দ যোগ হতে থাকে। ফলে বই পড়া শব্দভান্ডার সমৃদ্ধিতে অনেক বেশি সাহায্য করে। নতুন কোনো ভাষা শিখতেও বই পড়ার বিকল্প নেই। এটি খুব দ্রুত নতুন যে কোনো ভাষাকে আয়ত্ত করতে সহায়তা করে। বই পড়ার মাধ্যমে অনেক অজানা শব্দ আয়ত্ত করা যায়, যা পাঠকের প্রাত্যহিক কথোপকথনে কাজে লাগে।