শাশ্বত ধ্বনি পরিষদের হযরত মুহাম্মদ (স.)-কে নিবেদিত আবৃত্তি অনুষ্ঠানে অতিথি আলোচকগণ বলেছেন, মানবতার দৃপ্ত বিজয় নিশানই ছিল নবীজীর (সা.) জাদুর কাঠি। নবীজী (সা.) ধূলির ধরণীতে এসেছিলেন প্রেমের সওগাত নিয়ে। হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ও শুদ্ধতম মহামানব। শাশ্বত ধ্বনি উচ্চারণের শুভ্রতম ও পরিপূর্ণতম প্রতিকৃতি তিনি। তাই মহানবী (স.)-কে শিল্প ও সংস্কৃতি চর্চার আওতামুক্ত রাখাকে আমরা মানসিক দীনতার পরিচায়ক মনে করি। সামাজিক ঐতিহাসিক অর্থে মুসলমান থেকেই আমরা সেকুলর হয়েছি। আল্লাহর সার্বভৌম সত্তাকে আল্লাহ অস্বীকৃত সেকুলার রাষ্ট্র সত্তার কাছে হাস্যকর চিন্তারূপে পর্যবসিত করেছি। গতকাল শুক্রবার চট্টগ্রাম থিয়েটার ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে শাশ্বত ধ্বনি পরিষদের ‘মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তুমি মহানবী প্রিয়তম সুন্দরতম’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি আলোচকগণ তাদের বক্তব্যে কথাগুলো বলেন। আমন্ত্রিত আলোচক হিসাবে বক্তব্য দেন, চবি ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. সরওয়ার মোরশেদ, বিশিষ্ট লেখক ও চিন্তক চৌধুরী গোলাম রব্বানী এবং কবি ও চিন্তক সৈয়দ আহমদ শামীম। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আবৃত্তি শিল্পের শিক্ষক, শাশ্বত ধ্বনি পরিষদের আহ্বায়ক মোসতাক খন্দকার। এ আয়োজনে অনুষ্ঠানের স্মারকের মোড়ক উন্মোচন করেন স্মার্ট গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক ক্যাপ্টেন মাঈনুল আহসান। সঞ্চালনায় ছিলেন শাশ্বত ধ্বনি পরিষদের সদস্য সচিব আবৃত্তি শিল্পী শরীফ মাহমুদ।
অতিথি আলোচক অধ্যাপক ড. সরওয়ার মোরশেদ বলেন, সপ্তডিঙ্গা মধুকর নয়, সহস্র অর্বুদ মহাকিশতি বোঝাই করে সিন্দাবাদের নাবিকদের লক্ষ যোজন পিছনে ফেলে তামাম জাহানে তিনি বিলিয়ে গেছেন মানব হিতৈষণার সওদা। অতিথি আলোচক চৌধুরী গোলাম রব্বানী বলেন, রাসূল (স.) সর্বোত্তম আদর্শ। এই সনদ কোন হার্ভার্ড, অক্সফোর্ড বা নোবেল কমিটি দেয় নি। স্বয়ং রাব্বুল আলামিন এই সনদ দিয়েছেন। পৃথিবীর সকল সত্যপ্রিয় মানুষের কাছেও এটি স্বীকৃত। অতিথি আলোচক সৈয়দ আহমদ শামীম বলেন, হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হলেন জগত ব্যবস্থাপনার মূল কেন্দ্র। মানুষ হিসেবে এবং মুসলমান হিসেবে আমাদের কর্তব্য ধারা নাজিলকৃত কোরআন আর রাসুলের জীবনব্যাপী কর্ম এবং সংকলিত হাদিসগ্রন্থে লিখিত সংরক্ষিত আছে। যদি তার যথাযথ অনুসরণ চেষ্টা চলে তাহলে আমরা আশ্বস্ত হতে পারি যে ইতিহাস যাত্রায় মানুষ ঠিক পথে হাঁটছে। মুসলমানের হৃদয়ে খিলাফত কোনও রাষ্ট্র বিকৃতির দূরাভিলাষ নয়। খিলাফত, হযরত মুহাম্মদ (দ.) এর ইতিহাস স্নেহবশত জগত ব্যবস্থাপনা যা হিন্দু বৌদ্ধ মুসলিম খ্রিস্টান অন্য যেকোনও ধর্ম, জাতিগোষ্ঠীর বিশ্বাস ও সংস্কৃতি, সম্পদ ও স্বপ্নকে বাস্তবসম্মত ভাবে নিরাপত্তার আশ্বাস দেয়। সভাপতির বক্তব্যে আবৃত্তি শিল্পের শিক্ষক শাশ্বত ধ্বনি পরিষদের আহ্বায়ক মোসতাক খন্দকার বলেন, মহানবী (স.) এর মুখনিঃসৃত বাণী সর্বকালের সকল মানুষের কাছে অবিনশ্বর ও চিরন্তন সৌন্দর্য। তিনি নিজেও বিশ্বাসী কবি এবং সত্য ও সুন্দরের কবিতাকে ভালবাসতেন। হৃদয়ের শুদ্ধতার জন্য শুদ্ধতম প্রচেষ্টা –এ বিশ্বাসের শৈল্পিক ও প্রায়োগিক চর্চায় নিবেদিত শ্রমনিষ্ঠ সাধনা প্রয়োজন। আর ঐশী বাণীর সাংস্কৃতিক রূপায়ন ও প্রসারে প্রয়োজন একটি প্ল্যাটফর্ম। তাই আত্মপ্রকাশ ঘটলো বাচনিক শিল্পকলার সম চারিত্রের বহুবিধ সংগঠন ও শিল্পীর অংশগ্রহণযোগ্য প্ল্যাটফর্ম শাশ্বত ধ্বনি পরিষদ। আলোচনাপর্ব শেষে হযরত মুহাম্মদ (স.)-কে নিবেদিত আবৃত্তি অনুষ্ঠানে আবৃত্তি ও সঙ্গীত পরিবেশন করেন আমন্ত্রিত শিল্পী মোহাম্মদ মামুনুর রশীদ, সৌভিক চৌধুরী, শরীফ মাহমুদ, মিজানুর রহমান, রাসেল সর্দার, মুবিন তুষার, আদনান করিম, ইব্রাহীম মাহমুদ, মুহতারিমা, মুনয়িম আসরা, রিদওয়ান, হামিদ, রাইয়ান, ইসলামুল হক তুষার এবং শিশু শিল্পী আরশাদ, মেহজাবিন, নাবিলা, সামিহা, আবদুল্লাহ ইকবাল, মুবাশ্শিরা, নওশিন, আসলিরাফ, জারিফ, রেঁনেসা, নুসাইবা, ফাবিহা, মুশফিকা, আফরিন ও মেহেরিমা। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।