যেকোনো কাজের মূল্যায়ন করা হয় ভালো কিংবা মন্দ। ঠিক তেমনি নেশারও ভালো-মন্দ দিক আছে। কিছু নেশা মানুষকে উপরের দিকে উঠায় আর কিছু নেশা মানুষকে নিচের তলানিতে মিশিয়ে দেয়। ভালো নেশা যেমন বই পড়া কম্পিউটার খেলাধুলা গল্পগুজব নাটক সিনেমা দেখা ইত্যাদি। খারাপ নেশা হচ্ছে মদ খাওয়া বারে যাওয়া গাজা খাওয়া ইয়াবা হেরোইন ফেনসিডিল সেবন মন্দ সংঘ ইত্যাদি। এক কথায় বলতে গেলে যেসব নেশা মানুষের দেহ ও মনকে আসক্ত করে তাই হচ্ছে মাদক। মাদকাসক্ত ব্যক্তি খুবই ভয়ঙ্কর। মাদকের নেশা একটি মানুষকে একটি পরিবারকে একটি সমাজকে ধ্বংস করে দিতে পারে। কথায় আছে সৎ মানুষ ভিক্ষা করে খাবে, তবুও সে চুরি করবে না। তবে মাদকাসক্তের ব্যাপারে পুরোটাই উল্টো। মাদকাসক্ত ব্যক্তি নেশার টাকা জোগাড় করতে চুরি ডাকাতি রাহাজানি ছিনতাই লুটপাট এমনকি খুন করতেও দ্বিধাবোধ করে না। আজকে গ্রামে বলুন আর শহরেই বলুন যতো অপকর্ম সংঘটিত হয় সবগুলোর শিকড় অনুসন্ধান করলে উঠে আসে মাদকের সম্পৃক্ততা । নেশাগ্রস্ত ব্যক্তি কর্তৃক মা-বাবা ভাই-বোনের সুন্দর পরিবারে নেমে আসে চরম দুর্ভোগ ও অশান্তি। তাই পরিবারই পারে মাদকমুক্ত দেশ গড়তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা । সন্তান কোথায় যায়, কার সাথে মিশে দেখভালের সম্পূর্ণ দায়িত্ব অভিভাবকের। সন্তান লেখাপড়ায় অমনোযোগী উদাসীনতা ব্যর্থতা কাজের প্রতি অনীহা ধৈর্য ধারণ করে অন্তরে অনুভব করা উচিত। অভিভাবকের উচিত সন্তানের সাথে বন্ধুত্ব সুলভ আচরণ করে ভালো-মন্দের ভবিষ্যৎ সবকিছু শেয়ার করা। তাকে যদি সবসময় বকাঝকার স্টিমরোলার চালানো হয় তাহলে স্বাভাবিকভাবে সে ভুল পথে ধাবিত হবে। মাদকের ধ্বংসাত্মক কবল থেকে শুরুতেই যদি বিনষ্ট করা না যায় তাহলে ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার হতে হয়।
একটি চারা গাছ যেমন ভালো মাটি জল সার ও নিরাপদ বেষ্টনী দিয়ে পরিচর্যা করে তাহলে সুন্দরভাবে বেড়ে উঠে ভালো ফল দেয়। ঠিক তেমনি উঠতি বয়সী তরুণদের যদি সঠিক দিকনির্দেশনায় ভালোবাসায় গড়ে তোলা হয় তাহলে সে অবশ্যই ভুল পথে পা বাড়াবে না; প্রকৃত মানুষ হবে। পরিবারের সুশীতল ছায়া স্নেহ আদর ভালোবাসা সুদৃঢ় নিরাপত্তা সৃজনশীল সাংস্কৃতিক চর্চা তরুণ সমাজকে ভয়াবহ মাদক থেকে মুক্ত রাখতে পারে। তাহলেই পরিবার সুন্দর হবে, সমাজ সুন্দর হবে, দেশ পাবে মেধা মননশীল সৃজনশীল একটি জাতি।