প্রায় আড়াই বছর পরে কোভিড অতিমারি থেকে মুক্তি পেতে চলেছে পৃথিবী! বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান তেদ্রোস আধানম গ্যাব্রিয়েসুসের এমন মন্তব্যে এ বার ‘আশার আলো’ দেখা গেল।
কোভিড-১৯ মহামারীর ইতি টানতে বিশ্ব এর চেয়ে ভালো অবস্থানে আর কখনোই ছিল না বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। দুই বছর ধরে বিশ্বজুড়ে দাপট দেখিয়ে ৬০ লাখের বেশি মানুষের প্রাণ কেড়ে নেওয়া স্বাস্থ্য সংকট নিয়ে এটাই এখন পর্যন্ত তার সবচেয়ে আশাব্যঞ্জক বক্তব্য।
গত বুধবার এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক সাংবাদিকদের বলেন, আমরা এখনও সেখানে পৌঁছাইনি। কিন্তু শেষ দেখা যাচ্ছে।
গত এক সপ্তাহে সবচেয়ে কম সংখ্যক মানুষ নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন। ২০২০ সালের মার্চ মাসের পর এই প্রথম এত কম সাপ্তাহিক সংক্রমণ। যদিও আমেরিকা ও ব্রিটেনে বিএ.৪.৬ নামে ওমিক্রনের একটি উপপ্রজাতি ছড়াচ্ছে বলে ওই দুই দেশের সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে। কিন্তু তাতেও ভয়ের কিছু দেখছে না বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। বরং অতিমারির শেষ দেখতে পাচ্ছে তারা। তবে হু’র মহাপরিচালক জানিয়েছেন, এখনই শিথিলতা দেখানো উচিত নয়। তাঁর মতে, ম্যারাথন প্রতিযোগিতায় ফিনিশিং লাইনের কাছে এসে দৌড় থামিয়ে দেওয়া কখনওই উচিত নয়।
২০২০ সালের জানুয়ারিতে বিশ্বজুড়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণা এবং তিনমাস পর থেকে কোভিড-১৯ কে মহামারী বলতে শুরু করার পর জাতিসংঘের স্বাস্থ্য বিষয়ক সংস্থার সর্বশেষ এ মূল্যায়ন বিশ্বকে আশা দিচ্ছে। চীনে ২০১৯ সালের শেষদিকে আবির্ভূত হওয়া নতুন করোনাভাইরাস এরই মধ্যে বিশ্বের প্রায় ৬৫ লাখ লোকের মৃত্যুর কারণ হয়েছে, আক্রান্ত করেছে ৬০ কোটির বেশি মানুষকে। প্রাণঘাতী ভাইরাসটির সদম্ভ পদচারণা বৈশ্বিক অর্থনীতিকে ওলটপালট করে দিয়েছে, দেশে দেশে স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাপনাকে ভয়াবহ চাপের মুখে ফেলেছে। তবে টিকার উদ্ভাবন এবং ব্যাপক হারে টিকাদান কর্মসূচি ও নানান থেরাপি মৃত্যু এবং হাসপাতালে ভর্তি কমিয়ে আনতে সহায়তা করেছে; গত বছর আবির্ভাব ঘটা করোনাভাইরাসের ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট রোগের তীব্রতাও কমিয়ে এনেছে।
প্রসঙ্গত, আমেরিকা-ইউরোপের দেশগুলো আগেই ঘোষণা করেছে, অতিমারিকে সঙ্গে নিয়েই বাঁচতে হবে। এই যুক্তিতে করোনা-বিধি তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কয়েকটি দেশ। জাতিসংঘের স্বাস্থ্য বিষয়ক সংস্থার এ মহাপরিচালক বলেন, দেশগুলোর উচিত তাদের নীতি কঠোরভাবে পর্যালোচনা করা এবং কোভিড-১৯ কিংবা ভবিষ্যতে আসা ভাইরাস মোকাবেলার উপযুক্ত করে তৈরি করা। বেশি ঝুঁকিতে থাকা গোষ্ঠীগুলোতে শতভাগ টিকাদান এবং ভাইরাস শনাক্তে নিয়মিত পরীক্ষা চালিয়ে যেতেও দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।