করোনাভাইরাস মহামারী সামাল দিতে সারা দেশে লকডাউনের দ্বিতীয় দিন এল একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু আর ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি নতুন রোগী শনাক্তের খবর। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর গতকাল মঙ্গলবার জানিয়েছে, গত একদিনে দেশে ৭ হাজার ২১৩ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে আরও ৬৬ জনের। একদিনে শনাক্ত রোগী ও মৃত্যুর এই সংখ্যা মহামারীর এই এক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।
নতুন রোগীদের নিয়ে দেশে এ পর্যন্ত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ৬ লাখ ৫১ হাজার ৬৫২ জনে। তাদের মধ্যে মোট ৯ হাজার ৩৮৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর আগে গত বছর ৩০ জুন একদিনে ৬৪ জনের মৃত্যুর খবর জানানো হয়, যা এতদিন ছিল একদিনের সর্বোচ্চ মৃত্যু। খবর বিডিনিউজের।
সোমবার আগের ২৪ ঘণ্টায় ৫২ জনের মৃত্যুর খবর দিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। রোববার জানানো হয়েছিল ৫৩ জনের মৃত্যুর খবর। শনিবার ৫৮ জনের মৃত্যুর খবর আসে।
এদিকে, ৯ দিনে ছয়বার রেকর্ড ভেঙেছে করোনা। গত বছরের ২ জুলাই একদিনে সর্বোচ্চ শনাক্ত হয় ৪ হাজার ১৯ জন। গত ২৯ মার্চ সেই রেকর্ড ভেঙে শনাক্ত দাঁড়ায় ৫ হাজার ১৮১ জন। সেই রেকর্ড ভেঙে ফের ৩১ মার্চ শনাক্ত হয় ৫ হাজার ৩৮৫ জন। ১ এপ্রিল শনাক্তের রেকর্ড ভেঙে দাঁড়ায় ৬ হাজার ৪৬৯ জন। ২ এপ্রিল আবারও রেকর্ড ভেঙে শনাক্ত দাঁড়ায় ৬ হাজার ৮৩০ জন। এরপর ৪ এপ্রিল ৭ হাজার ছাড়িয়ে একদিনে শনাক্ত দাঁড়ায় ৭ হাজার ৮৭ জন। এরপর গতকাল সব রেকর্ড ভাঙে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই মুহূর্তে উচ্চ সংক্রমিত এলাকায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে করোনা পরীক্ষা না করলে সংক্রমণের এই উচ্চ হার কমানো মুশকিল হয়ে যাবে।
গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার আগের দিনের চেয়ে কিছুটা কমেছে। গতকাল এ হার ছিল ২১ দশমিক ০২ শতাংশ। আগের দিন সোমবার যা ২৩ দশমিক ৪০ শতাংশ ছিল। মহামারীর শুরু থেকে এ পর্যন্ত পরীক্ষার তুলনায় মোট শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ১৩ দশমিক ৪৪ শতাংশ।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, বাসা ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও ২ হাজার ৯৬৯ জন রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন গত একদিনে। এ নিয়ে এ পর্যন্ত সুস্থ রোগীর মোট সংখ্যা বেড়ে ৫ লাখ ৫৮ হাজার ৩৮৩ জন হয়েছে। জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় বিশ্বে শনাক্তের দিক থেকে ৩৩তম স্থানে আছে বাংলাদেশ। মৃতের সংখ্যায় রয়েছে ৪০তম অবস্থানে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে মোট ২২৭টি ল্যাবে ৩৪ হাজার ৩১১টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ২১ দশমিক ০২ শতাংশ। এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৪৪ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮৫ দশমিক ৬৯ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৪ শতাংশ।
গত একদিনে যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে ৩৯ জন পুরুষ ও নারী ২৭ জন। তাদের মধ্যে ২ জন বাড়িতে মারা গেছেন, বাকিদের মৃত্যু হয়েছে হাসপাতালে। মৃতদের ৫৪ জন ঢাকা বিভাগের, ৪ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ৩ জন রাজশাহী বিভাগের, ২ জন করে খুলনা ও বরিশাল বিভাগের এবং ১ জন সিলেট বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।