মধ্যরাত থেকে ৯ ঘণ্টা বন্ধ থাকে গ্যাস, রাঙ্গুনিয়ায় ২০০০ গ্রাহকের ভোগান্তি

কেজিডিসিএল বলছে ‘নিরাপত্তার স্বার্থে’

জগলুল হুদা, রাঙ্গুনিয়া | মঙ্গলবার , ৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ at ৬:৫১ পূর্বাহ্ণ

কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি বিগত ৬ মাস ধরে রাঙ্গুনিয়ায় প্রতিদিন রাত ১১টা থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত ৯ ঘণ্টা গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রাখছে। এতে ভোরে কাজে বের হওয়া কর্মজীবী মানুষ ও শিক্ষার্থীদের জন্য খাবার তৈরি করা কঠিন হয়ে পড়েছে। ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে রাঙ্গুনিয়ার প্রায় দুই হাজার গ্রাহককে। গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

সম্প্রতি বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত আবেদন করেছেন ভুক্তভোগী গ্রাহকরা। আবেদনে ভুক্তভোগীরা উল্লেখ করেন, রাঙ্গুনিয়ায় প্রায় দুই হাজার পরিবার ও গ্রাহক গ্যাস সুবিধা ব্যবহার করেন। এর বাইরেও কর্ণফুলী পেপার মিল, জুট মিল, বিভিন্ন মাদ্রাসা, স্কুলকলেজসহ বহু সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে গ্যাস সুবিধার আওতায় রয়েছে। কিন্তু ৬ মাস ধরে রাঙ্গুনিয়ায় প্রতিদিন রাত ১১টা থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকে। ভোক্তারা বহুবার অফিসিয়ালি কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে বিষয়টি তুলে ধরেন। কিন্তু এরপরও গত ছয় মাসে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।

গ্রাহক সেতুল মির্জা, কাউসার হোসাইনসহ স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে চলমান এই পরিস্থিতি রাঙ্গুনিয়ার প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণের প্রমাণ। এই সমস্যার সমাধানে তারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কার্যকর পদক্ষেপ কামনা করছেন। ভুক্তভোগীরা জানান, রান্না করতে না পেরে অনেক শিক্ষার্থীকে প্রতিদিন স্কুলকলেজে না খেয়ে যেতে হচ্ছে। কেউ কেউ বাধ্য হয়ে দোকানের মানহীন খাবার খাচ্ছেন। এতে শিশুকিশোরদের স্বাস্থ্যের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।

তবে কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কর্তৃপক্ষ জানায়, গ্যাসের সিস্টেম লসের কারণে রাতের বেলা গ্যাস বন্ধ রাখা হচ্ছে। গ্যাস চুরি হচ্ছে, নাকি পাইপ লিকেজের কারণে সিস্টেম লস তা পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে।

কেজিডিসিএলের জোনাল ম্যানেজার মো. আশিক বলেন, সিস্টেম লসের কারণে নিরাপত্তার স্বার্থে রাত ১২টার পর থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত গ্যাস বন্ধ রাখা হচ্ছে। এটি সারানোর জন্য কোম্পানির পক্ষ থেকে উদ্যোগ জন্য কাজ চলছে। তবে রাত ১১টা থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত বন্ধ থাকার বিষয়ে গ্রাহকের অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটি ভুল ইনফরমেশন হতে পারে। তিনি বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন বলে জানান।

জোনাল ম্যানেজার মো. আশিক সংশ্লিষ্ট একজনের নম্বর দিয়ে তার সাথে কথা বলার জন্য অনুরোধ করেন। ওই নম্বরের সূত্র ধরে গ্যাস বন্ধ আর চালু রাখার দায়িত্বে নিয়োজিত ইঞ্জিনিয়ার বদিউল আলমের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি। তিনি অফিসে কয়েকজনকে নিয়ে গিয়ে কথা বলার জন্য পরামর্শ দেন। বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) উপপরিচালক (কনজ্যুমার অ্যাফেয়ার্স) মুহাম্মদ রফিকুল আলম ভুঁইয়া এ ব্যাপারে লিখিতভাবে জানানোর পরামর্শ দেন। তবে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে বললে, সেটি তার পর্যন্ত পৌঁছেনি বলে জানান। সেটি পেলে ব্যবস্থা নেয়ার কথা উল্লেখ করেন তিনি।

এদিকে রাঙ্গুনিয়ার গ্রাহকদের অভিযোগতারা গ্যাস বন্ধ রাখার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করলেও, তারা একজন আরেকজনকে দেখিয়ে দেন। কাজের কাজ কিছুই হয় না। এভাবে দিন যাচ্ছে, কিন্তু গ্যাস বন্ধের কারণে ভোগান্তি শেষ হচ্ছে না বলে অভিযোগ গ্রাহকদের।

পূর্ববর্তী নিবন্ধঠান্ডা-সর্দি লাগবে বলে ঘর থেকে বের হতে চায় না
পরবর্তী নিবন্ধচট্টগ্রাম বন্দরকে হাইটেক রাবার আইটেম দিবে খুশিলি