ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা নেপালে বিমানসফর

কোনোটা এভারেস্টের কাছে তো কোনোটার রানওয়ে ছোট

| মঙ্গলবার , ১৭ জানুয়ারি, ২০২৩ at ১১:৫২ পূর্বাহ্ণ

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য নেপাল যতটা আকর্ষণীয়, ঠিক ততটাই কুখ্যাত দেশের বিপজ্জনক বিমানবন্দরগুলির জন্য। শুধু তাইই নয়, গত তিন দশকে ২৭টি বিমান দুর্ঘটনার সাক্ষী থেকেছে এই দেশ। যে তালিকায় নতুন সংযোজন ১৫ জানুয়ারি পোখরার বিমান দুর্ঘটনা।

কেন নেপালে বার বার বিমান দুর্ঘটনা হয়? ভূবিজ্ঞানীরা বলছেন, এর আসল কারণ নেপালের ভৌগোলিক অবস্থান। আর তার থেকেও ভয়ঙ্কর যে বিষয়টি তা হল, এ দেশের বেশ কয়েকটি বিমানবন্দরের অবস্থান এবং সেগুলির রানওয়ে। পাহাড়ের কোলে বেশ কয়েকটি বিমানবন্দর থাকায়, হঠাৎ হঠাৎ আবহাওয়া বদলের কারণে এই সব বিমানবন্দরে বিমান নামানো অনেক বেশি বিপদসঙ্কুল হয়ে ওঠে। তা ছাড়া অত উচ্চতায় বিমানবন্দরগুলি হওয়ার কারণে তাপমাত্রা নামতেই তুষারপাতের কারণে রানওয়েগুলি আরও ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে। আরও একটি কারণ হল ছোট রানওয়ে।

এমন বিমানবন্দরও রয়েছে যেখানে রানওয়ে শেষেই কয়েকশো ফুট গভীর খাদ। ফলে একটু ভুলচুক হলেই সব শেষ। তাই এই সব বিপজ্জনক বিমানবন্দরে দক্ষ পাইলট ছাড়া বিমান ওঠানামা করানো হয় না। নেপালে সব মিলিয়ে মোট ৪৩টি বিমানবন্দর আছে। তার মধ্যে ১০টি বিমানবন্দর বেশ পরিচিত। এই বিমানবন্দরগুলি যেমন প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য বেশ জনপ্রিয়। এগুলোর মধ্যে একমাত্র ত্রিভুবন বিমানবন্দরই আন্তর্জাতিক মানের। আর যে বিমানবন্দরগুলি বিপজ্জনক, সেগুলি হললুকলা, সিমিকোট বা হুমলা, তালচা বা মুগু, মুস্তাং বা জমসম, ডোলপা এবং পোখরা বিমানবন্দর। শুধু নেপাল নয়, বিশ্বের মধ্যে অন্যতম বিপজ্জনক বিমানবন্দর বলে মনে করা হয় লুকলাকে। এই বিমানবন্দর তেনজিং হিলারি এয়ারপোর্ট নামেও পরিচিত।

এই বিমানবন্দর এভারেস্টের খুব কাছে। এই বিমানবন্দর জনপ্রিয়, কারণ এখান থেকেই এভারেস্টের বেস ক্যাম্পে পৌঁছনো যায়। কাঠমান্ডু থেকে লুকলা যাওয়ার জন্য প্রতি দিন বিমান রয়েছে। তবে শুধু দিনেরবেলাতেই এই রুটে বিমান চালানো হয়। আবহাওয়াও ভাল থাকতে হবে। না হলে বিমানবন্দর রন্ধ রাখা হয় অথবা বিমান বাতিল করা হয়। নিরাপত্তার খাতিরেই এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৯,৩৩৪ ফুট উঁচুতে রয়েছে লুকলা বিমানবন্দরটি। রানওয়েটি দৈর্ঘ্যে ১,৭২৯ ফুট এবং প্রস্থে ৯৮ ফুট। রানওয়ের চারপাশে প্রায় ২ হাজার ফুট গভীর খাদ। নেপালের আরও একটি বিপজ্জনক বিমানবন্দর হল সিমিকোট। নেপাল থেকে কৈলাস এবং মানস সরোবরে যাওয়ার মূল প্রবেশদ্বার হল এই সিমিকোট। এখানের আরেকটি বিপজ্জনক বিমানবন্দর হল তালচা। এটি মুগু বিমানবন্দর নামেও পরিচিত। এখানে বছরের বেশির ভাগ সময় বরফ পড়ে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধঅস্ত্র তৈরিতে মিয়ানমারকে সহায়তা করছে ১৩ দেশের কোম্পানি
পরবর্তী নিবন্ধকাবুলে বাড়িতে ঢুকে সাবেক নারী এমপিকে গুলি করে হত্যা