ভেঙে ফেলা হবে মতিঝর্নার অবৈধ বহুতল ভবনগুলো

পাহাড়ে অবৈধ বসতি উচ্ছেদে অভিযান শীঘ্রই পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ৪ এপ্রিল, ২০২৩ at ৫:০২ পূর্বাহ্ণ

নগরীর লালখান বাজারের মতিঝর্না এলাকায় অবৈধভাবে গড়ে ওঠা কাঁচাপাকা, সেমিপাকা থেকে শুরু করে বহুতল ভবনগুলো ভেঙে ফেলা হবে। দখলে যেই থাকুক উচ্ছেদ করা হবে। এজন্য রেলওয়ের প্রতিনিধির কাছে তালিকা চাওয়া হয়েছে।

পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির ২৬তম সভায় জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান এ কথা বলেন। সভায় বিভাগীয় কমিশনার পাহাড়ে অবৈধ বসতি দ্রুত উচ্ছেদ করা হবে বলে জানান।

গতকাল বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে সরকারিবেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা ও দপ্তরের প্রতিনিধিদের নিয়ে এ সভা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন বিভাগীয় কমিশনার ড. মো. আমিনুর রহমান। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মাসুদ কামাল বিগত সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তগুলো তুলে ধরেন এবং নতুন করে কী কী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যায় সেটি উল্লেখ করেন।

সভায় মাসুদ কামালের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, নগরীর পাহাড়ে অবৈধভাবে বসবাসকারী পরিবারের তালিকা হালনাগাদ করা হয়েছে। বিভিন্ন সংস্থা ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী নগরীর ২৬টি পাহাড়ে অবৈধ বসবাসকারী পরিবারের সংখ্যা ৬ হাজার ৫৫৮টি। ২৬টি পাহাড়ের মধ্যে ১৬টি সরকারি সংস্থার এবং ১০টি ব্যক্তি মালিকানাধীন।

এ সময় পাহাড় কীভাবে ব্যক্তি মালিকানাধীন হয় তা জানতে চান বিভাগীয় কমিশনার। তিনি প্রশ্ন করেন, এই বন্দোবস্ত দেয় কে? মালিকের সোর্স কী?

এর জবাবে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) বলেন, ২০০২ সালের আগে হয়েছে এসব বন্দোবস্ত। এর পরে আর হয়নি।

সভায় পরিবেশ অধিদপ্তরের প্রতিনিধি বলেন, পাহাড় নিয়ে কোনো অসঙ্গতি দেখলে মামলা করা ছাড়া পরিবেশের আর কোনো কাজ নেই। এক বছরে বিভিন্ন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ৮৪টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

সভায় বক্তব্য রাখেন বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড, রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল ও বিজিবিসহ বিভিন্ন সংস্থা ও দপ্তরের প্রতিনিধি। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের প্রতিনিধি বলেন, অবৈধ বসতিদের আলীনগর ও সলিমপুরে আগে বিদ্যুৎ দেওয়া হতো ৭৮ ঘণ্টা। এখন কমিয়ে ২ থেকে আড়াই ঘণ্টা বিদ্যুৎ দেওয়া হচ্ছে।

বিভাগীয় কমিশনার ড. মো. আমিনুর রহমান বলেন, আমাদের সকলকে একত্রিত হতে হবে। তাহলে পাহাড়কে দখলমুক্ত করা যাবে। অবৈধদের উচ্ছেদ করতেই হবে। পাহাড় কাটা বন্ধ করতে হবে। যাদের উচ্ছেদ করা হবে তাদের একটা ব্যবস্থা হয়ে যাবে। এ বিষয়ে আমাদেরকে সচেতন হতে হবে।

সিটি কর্পোরেশনের পক্ষে সভায় উপস্থিত ছিলেন একজন স্পেশাল ম্যাজিট্রেট। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন একজন অথরাইজড অফিসার। বিষয়টি নজরে নিয়ে বিভাগীয় কমিশনার বলেন, আগামী সভা থেকে সেবা সংস্থাগুলোর হেড অব দ্যা ডিপার্টমেন্ট অথবা সর্বোচ্চ প্রতিনিধিকে উপস্থিত থাকতে হবে। তিনি বলেন, অবৈধ বসতিদের দ্রুত উচ্ছেদ করা হবে এবং সেটি আগামীকাল (আজ মঙ্গলবার) থেকেই শুরু হবে।

সম্প্রতি কর্ণফুলী নদীর তীরবর্তী অসংখ্য অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে উল্লেখ করে জেলা প্রশাসক বলেন, উচ্ছেদের ফলে নদী তীরবর্তী (মাদারবাড়ি) এলাকায় বিপুল পরিমাণ সরকারি জায়গা উদ্ধার হয়েছে। সিটি কর্পোরেশন ও সিডিএ চাইলে সেখানে পার্কের মতো কিছু একটা করতে পারে। কিছু একটা করতে পারলে ওই এলাকার লোকজন উপকৃত হবেন। বিকালে হাঁটাহাঁটি করতে পারবেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসেবায় শীর্ষে, বরাদ্দে পিছিয়ে
পরবর্তী নিবন্ধজাতীয় স্লোগান ‘জয় বাংলা’র সঙ্গে ‘জয় বঙ্গবন্ধু’ অন্তর্ভুক্ত করতে হাইকোর্টের রুল