ভুল সম্বোধন আর এক দলের চিঠি আরেক দলকে পাঠিয়ে গোল পাকানোর বিষয়টি সামনে আসার পর তা সংশোধন করেছে নির্বাচন কমিশন; আট দলকেই দেওয়া হয়েছে নতুন চিঠি।
অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় বসতে ভুলে ভরা চিঠি পাঠিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর ক্ষোভের মুখে গতকালই তা ঠিক করার উদ্যোগ নেয় কমিশন। এদিন বিশেষ বাহকের মাধ্যমে সবগুলো দলের দপ্তরে আবার চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিইসির একান্ত সচিব রিয়াজ উদ্দিন। তিনি জানান, করণিক ত্রুটি সংশোধন করে একই চিঠি দলগুলোকে আবার দেওয়া হয়েছে। খবর বিডিনিউজের।
এর আগে গত শুক্রবার সিপিবি ও বিএমএলকে আমন্ত্রণ জানিয়ে দেওয়া চিঠিতে ভুলের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ জানিয়েছিলেন, কোনো ধরনের ভুল থাকলে পুনরায় দলগুলোকে চিঠি দেওয়া হবে।
গতকাল এ দুই দলের বাইরে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজও ভুল শুধরে পাঠানো চিঠি পেয়েছেন বলে জানান। আগেরবার তাদেরও ভুলে ভরা চিঠি দেওয়া হয়েছিল বলে তিনি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, আমাদের কাছেও ভুল চিঠি পাঠিয়েছিল। সেখানে সাধারণ সম্পাদকের নামও ভুল লিখেছিল। কপি–পেস্ট করে পুরনো এ ধরনের চিঠি লজ্জার বিষয়। তিনি সংশোধিত চিঠি পাওয়ার কথা জানিয়ে বলেন, আমন্ত্রণে যাই বা না যাই দলীয় ফোরামে আলোচনার পর সিদ্ধান্ত নিয়ে কমিশনকে জানাব।
গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টিকে (সিপিবি) পাঠানো চিঠিতে ভুল থাকার বিষয়টি জানার দুদিনের মাথায় আবার দলটিকে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
গতকাল রাতে সিপিবি সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, কিছুক্ষণ আগে আরেকটি চিঠি পেলাম। দুটি চিঠি আমাদের কাছে। আগেরটা প্রত্যাহার করা হয়নি। এই চিঠিতে এ বিষয়ে কোনো কথা নেই। ইসির চিঠিতে ভুল থাকায় তা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে শুক্রবার তিনি বলেছিলেন, এটা রাজনৈতিক দলের প্রতি ইসির এক ধরনের অবজ্ঞা।
সিপিবিকে দেওয়া চিঠির শুরুতে দলের সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্সকে সম্বোধন করা হয়েছে। কিন্তু চিঠির মাঝখানের বক্তব্যে দেখা যাচ্ছে, অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় ডাকা হয়েছে বাংলাদেশ মুসলীম লীগকে (বিএমএল)।
আবার বিএমএলকে দেওয়া চিঠিতে দলটির সভাপতি শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরীর পদ লেখা হয়েছে ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব। পাশাপাশি দলের কার্যালয়ের ঠিকানাও ভুল করা হয়েছে। গতকাল বিএমএল’র সভাপতি সংশোধিত চিঠি পাওয়ার কথা জানিয়েছেন। আর আগের দিন জানিয়েছিলেন, সরকার হটাতে সমমনা দলগুলোর সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে অংশ নেওয়ায় তারা বিএনপির সঙ্গে কথা বলে আলোচনায় যাবেন কিনা সেই সিদ্ধান্ত নেবেন।
গত ২৩ মার্চ অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় বিএনপি ও তার মিত্র দলের নেতাদের নিয়ে আলোচনায় আসার অনানুষ্ঠানিক চিঠি দেওয়া হয়। এক সপ্তাহ ধরে এ নিয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো সাড়া না পাওয়ার পর সংলাপ বর্জন করা আরও ৮ দলকে বৃহস্পতিবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার আলাদা আলাদা চিঠি দেন।
সিপিবি, বাসদ ও বিএমএল এ ছাড়া বাকি দলগুলো হচ্ছে– বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি), লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি)।