ভুলটা কার?

রোগী ও ডাক্তারের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ

আজাদী প্রতিবেদন | শুক্রবার , ১৯ মার্চ, ২০২১ at ৫:৩১ পূর্বাহ্ণ

কিডনিতে পাথর জটিলতা নিয়ে অপারেশনের পর চিকিৎসকের বিরুদ্ধে পেটে নল জাতীয় বস্তু রেখে দেয়ার অভিযোগ করেছেন এক রোগী। ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে নগরীর দুই নম্বর গেটের চিটাগং ইউরোলজি অ্যান্ড জেনারেল হসপিটালে জাহাঙ্গীর আলম (৩০) নামে ওই রোগীর এ অপারেশন হয়। ইউরোলজিস্ট ও অ্যান্ড্রোলজিস্ট ডা. মো. জাহাঙ্গীর হোসাইন এ অপারেশন করান। এখন রোগী ও ডাক্তার পরস্পরের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করছেন।
রোগীর অভিযোগ- অপারেশনের পর প্রথম কয়েকমাস কোনো সমস্যা না হলেও ধীরে ধীরে পেটের ব্যথা বাড়তে থাকে। সর্বশেষ তলপেটে প্রচণ্ড ব্যথা ও প্রশ্রাব বন্ধ হয়ে গেলে পাঁচ বছর পর একই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন রোগী। পরে এক্স-রে রিপোর্টে রোগীর পেটে স্যালাইনের লম্বা পাইপ সদৃশ বস্তু ধরা পড়ে। তবে অপারেশনের এক মাস পর এসে স্টেন্ড বা নালী খোলানোর জন্য রোগীকে বলে দেয়া হয় দাবি করে ডা. জাহাঙ্গীর হোসাইন আজাদীকে বলেন, কিডনি নালীতে যদি কোনো অপারেশন করা হয়, তবে ওখানে একটি স্টেন্ড বা নালী রেখে আসতে হয়। এটাই নিয়ম। অপারেশনের এক মাস পর ওই নালীটা খোলাতে হয়। অপারেশনের পর বিষয়টি রোগীকে বলে দেয়া হয়। এমনকি ছাড়পত্রেও লিখে দেয়া আছে। লিখে দেয়া আছে- স্টেন্ড খোলানোর জন্য অমুক তারিখ ৪ হাজার টাকাসহ নিয়ে আসবেন। কিন্তু তখন তারা না এসে ৬ বছরের মাথায় এসেছে। যার কারণে এমন পরিস্থিতি। ঠিক সময়ে এসে নালীটা বের করে ফেললে কোনো জটিলতা হতো না। এখানে আমাদের দোষ কতটা।
ছাড়পত্রে ডাক্তার লিখে দিলেও নিজে পড়তে না পারায় বিষয়টি বুঝতে পারেন নি বলে স্বীকার করেন রোগী জাহাঙ্গীর আলম। তবে ২য়বার অপারেশন করলেও পাইপের একটি অংশ এখনো পেটে রয়ে গেছে অভিযোগ করে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, পেটে থাকা পাইপ বের করতে সমপ্রতি উনি ২য়বার অপারেশন করেন। কিন্তু পরবর্তীতে এক্স-রে করলে দেখা গেছে পেটে পাইপের অংশ রয়ে গেছে। এখন তিনি আর কিছু করতে চাইছেন না। আমাকে মেডিকেলে ভর্তি হতে পরামর্শ দিচ্ছেন। এ বিষয়ে ডা. জাহাঙ্গীর হোসাইন বলেন, ২য়বার অপারেশনের টাকাও তারা দেয়নি। তবে দেরি হওয়ায় নালীর উপর পাথর জমে যায়। যার কারণে ২য়বার অপারেশনেও কিছু অংশ থেকে গেছে। এখন আবার অপারেশন করতে হলে রোগীকে অন্তত ৫/৭ দিন হাসপাতালে থাকতে হতে পারে। আর বেসরকারিভাবে করলে খরচও বেশ পড়বে। তাই তাদের মেডিকেলে ভর্তি হতে বলেছি। ওখানে ডাক্তারকেও বলে দিয়েছি। কিন্তু তারা সেটি না করে কখনো পুলিশের কাছে, আবার কতক্ষণ সাংবাদিকের কাছে ছুটোছুটি করছে।
সবই তাদের ভুলে হয়েছে। এখন দায়টা আমার ওপর দিতে চাচ্ছে। অথচ, সময়মতো এসে নালীটা বের করে গেলে কোনো জটিলতাই হতো না। ছাড়পত্রে বাংলায় স্পষ্ট করে লিখে দেয়া হয়েছে। নিজে পড়তে না পারলেও বাংলা বুঝে এমন মানুষ কি তাদের আশেপাশে একজনও ছিল না। এমন প্রশ্ন রাখেন ডা. জাহাঙ্গীর হোসাইন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামে আক্রান্ত ছাড়াল ৩৭ হাজার
পরবর্তী নিবন্ধভোটে হারেননি, কিন্তু করোনার কাছে হেরে গেলেন কাউন্সিলর মিন্টু