ভাষা আন্দোলনের উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ে সবখানে

আজাদী ডেস্ক | শনিবার , ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ at ৬:১৯ পূর্বাহ্ণ

পাকিস্তানের গভর্নর জেনারেল মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ১৯৪৮ সালের ২১ মার্চ পল্টন ময়দানে এবং ২৪ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার ঘোষণা দেয়ার পর এ নিয়ে রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদসহ আরো নেতৃবৃন্দ জিন্নাহর সাথে বৈঠক করেন।

রাষ্ট্রভাষা বিষয়ে দুই পক্ষ একটি সমঝোতায় পৌঁছে। তা ছাড়া ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ হরতালের পর রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবি মেনে নিয়ে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দিন একটি চুক্তি করেন আন্দোলনকারীদের সাথে। এর পর থেকে প্রায় চার বছর স্তিমিত থাকে ভাষা আন্দোলন।

কিন্তু ১৯৫২ সালের জানুয়ারি মাসে ভাষা আন্দোলন আবার নতুন রূপ লাভ করে। পূর্ব পাকিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী ঢাকার নবাব পরিবারের সন্তান খাজা নাজিমুদ্দিন তখন নিখিল পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী। ১৯৫২ সালের ২৪ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দিন ঢাকার পল্টন ময়দানে এক ভাষণে একমাত্র উর্দুকেই পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করা হবে মর্মে ঘোষণা প্রদান করেন। চুক্তি ভঙ্গ করে উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করার এ ঘোষণায় পূর্ব পাকিস্তানে আবার ব্যাপক ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। ফলে ভাষা আন্দোলন আবার একটি নতুনপর্যায়ে প্রবেশ করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ প্রতিটি

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এই ঘোষণার প্রতিবাদে ধর্মঘট পালন করে। ফেব্রুয়ারি মাসের শুরুতেই বাংলা ভাষার দাবি একটি আন্দোলন আকারে দানা বাঁধতে থাকে। ৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় ছাত্রধর্মঘট ও বিক্ষোভ কর্মসূচি এবং ২১ ফেব্রুয়ারি হরতালের ঘোষণা দেয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ।

সরকার ২১ ফেব্রুয়ারির হরতাল বানচালের জন্য ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে এক মাসের জন্য ঢাকা শহরে ১৪৪ ধারা জারি করে। এ পর্যায়ে ভাষা আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে গ্রামগঞ্জের প্রায় সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী আসাম ছেড়ে তার জন্মভূমি সিরাজগঞ্জে গিয়ে ভাষা আন্দোলনের গুরুত্ব তুলে ধরেন এলাকাবাসীর কাছে। সে সময় সিরাজগঞ্জে মুসলিম লীগ ছাড়া আর কোনো সংগঠন ছিল না।

সিরাজগঞ্জে ভাষা আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত হন প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য মাওলানা আব্দুর রশীদ তর্কবাগীশ। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি গুলির খবর সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে। ফুঁসে ওঠে ছাত্রজনতা। ঢাকাচট্টগ্রাসহ সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে ভাষা আন্দোলন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধগরিব ও মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে বিদেশি ফল
পরবর্তী নিবন্ধঅর্ধশতাধিক স্থানে নিত্য ছিনতাই