পূর্ব পাকিস্তান টালমাটাল। বাংলা ভাষার আন্দোলন চলছিল। আর মুসলিম লীগের অন্তঃকলহ ও ভগ্নদশা এবং প্রদেশব্যাপী অভাব ও আকালের পরিপ্রেক্ষিতে উৎসাহের সঙ্গে নতুন রাজনৈতিক দল পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক পরিবর্ধনের কাজ চলছিল। দলমত নির্বিশেষে সকলকেই আওয়ামী লীগে যোগদানের ডাক দেয়া হচ্ছিল। প্রধানত সভাপতি মওলানা ভাসানী, সাধারণ সম্পাদক শামসুল হক প্রদেশের সর্বত্র ঘুরে সভা করছিলেন, আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করার জন্য। স্থানীয় কমিটিসমূহ গঠিত হচ্ছিল। মুসলিম লীগের নেতা ও কর্মীরা আওয়ামী লীগে যোগ দিচ্ছিল। কারণ সামনে ছিল প্রদেশের সাধারণ নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি।
মুসলিম লীগ সরকারের এই সময়ে দেশের বিশেষ করে পূর্ব বাংলার অবস্থা কী ছিল তা অনুমান করা যায় ভাষা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সারাদেশের মানুষের ক্রোধে ফেটে পড়া দেখেই। একদিকে মাথাভারী শাসনব্যবস্থা, রাষ্ট্রের তহবিল থেকে মন্ত্রী ও বড়দের আরাম-আয়েশের জন্য লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয় এবং এই ব্যয়সঙ্কুলানের জন্য দিনদিন জনসাধারণের উপর নতুন নতুন কর চাপানো হয়। ফলে পাকিস্তানের সর্বত্র বেকারত্ব ও দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়। ক্ষমতাসীন মুসলিম লীগ সরকার দেশে ও দেশের বাইরে প্রচণ্ড চাপ সামলাতে ব্যস্ত ছিল। পাকিস্তান সরকার এই সময় পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদী চক্রান্তের সঙ্গেও নিজেদের জড়িত করে ফেলে। এই নীতির বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ধ্বনিত হয়। অপরদিকে রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন আরো বেগবান লাভ করে।












