ভাঙাগড়ায় ৩০ বছরে সফট টাচ

সংস্কৃতি চর্চায় চট্টগ্রাম

আজাদী প্রতিবেদন | রবিবার , ১৯ ডিসেম্বর, ২০২১ at ১১:২০ পূর্বাহ্ণ

বাংলাদেশের সংগীত জগতটাকে ব্যান্ডের গান অনেকাংশেই দখল করে আছে। নব্বই দশকের তেমনি এক সাড়া জাগানো ব্যান্ড সফট টাচ, জন্ম যার চট্টগ্রামে। আগামীকাল ২০ ডিসেম্বর ৩০ বছরে পা রাখতে চলেছে সফট টাচ ব্যান্ড।
কেমন ছিল শুরুর দিনগুলি, জানতে চাইলে ব্যান্ড লিডার বেজ গিটারিস্ট সমর বড়ুয়া আজাদীকে বলেন, ১৯৯১ সালে সফট টাচের জন্ম। নানা ভাঙাগড়ায় দেখতে দেখতে ত্রিশটি বছর কেটে গেল। প্রয়াত গিটারিস্ট সাচ্চু, আলিমুর, সুমন কল্যাণ, রিয়াদ সরোয়ার, আর আমি মিলে নানা প্রতিবন্ধকতা, প্রতিকূলতা, বাদ্যযন্ত্রের স্বল্পতা সত্ত্বেও ব্যান্ড সঙ্গীতের জগতে সৃষ্টি করে এক হার না মানা ইতিহাস। নন্দনকাননে আমার বাসায় ড্রামসের বদলে বেতের মোড়া, একুয়েস্টিক গিটার, সুমনের ছোট একটি ক্যাসিও কী-বোর্ড, আলিমুরের খালি গলায় গানের চর্চা, হাওয়াইন গিটারকে একুয়েস্টিক বেস গীটার বানিয়ে দিনের পর দিন প্র্যাকটিস- এভাবে কি ব্যান্ড করা যায়? সদস্যদের অদম্য প্রাণশক্তি যেন অসম্ভবকেই সম্ভব করে দেখিয়েছিল। সুযোগ আসলো, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে ওপিএ রিইউনিয়ন ৯৩ এর পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে নিজেদের জাত চেনানোর। তারই ধারাবাহিকতায় ১৬ ডিসেম্বর দামপাড়া পুলিশ লাইন মাঠে ওপেন এয়ার কনসার্টে দারুণ ঝড় তোলে সফট টাচ। তবে ১৯৯৪ সালের মাঝামাঝি সময়ে সফট টাচের লাইনআপে প্রথম ভাঙন ধরে।
সফট টাচ ব্যান্ডের অন্যতম সদস্য সুমন কল্যাণ জানান, লাইনআপ ভেঙে গেলেও ভেঙে পড়েননি সমর। লিড ভোকাল হিসেবে যোগ দেয় আসিফ লোদী, কীবোর্ডে টিংকু আজিজুর রহমান এবং লিড গীটারে বাবন, ড্রামসে আসাদ। ভোকাল ও রিদম গীটারে চঞ্চল মাহমুদও যুক্ত ছিলেন ব্যান্ডের সাথে কিছুদিন। ১৯৯৬ সালে চট্টগ্রাম শিশু একাডেমি প্রাঙ্গনে সফট টাচ প্রথম সলো কনসার্টের আয়োজন করে। সেখানেও মৌলিক গান ছিল একটি, বাকি সব ইংরেজি গান। ১৯৯৮ সালের শেষ দিকে পেশাগত কারণে আসিফ লোদী ঢাকায় চলে গেলে তার স্থলাভিষিক্ত হন নাজিম। সাথে ড্রামসে অপু। নাজিমের অনবদ্য গায়কীতে আরও একবার জ্বলে উঠে সফট টাচ। ২০০০ সালে সফট টাচ বামবার সদস্য পদ লাভ করে। একই সাথে ১২ টি মৌলিক গান নিয়ে সফট টাচের প্রথম এ্যালবাম ‘বন্ধু আমার’ বের হয় সাউন্ডটেক থেকে। ২০০২ সালের ১৪ জুন হঠাৎ নিস্তব্ধ হয়ে পড়ে লিড গিটারিস্ট বাবনের মৃত্যুতে। ২০১৭ সালের শেষ দিকে পুরনো সদস্যরা আবারও ইচ্ছে প্রকাশ করে সফট টাচের প্রাণ ফেরানোর। তিসা দেওয়ান, ড্রামসে সোহেল, গীটারে অনি যোগ দেন। আগে থেকেই ছিলেন সমর বড়ুয়া ও সুমন কল্যাণ। পাশাপাশি করপোরেট অনুষ্ঠানে সফট টাচের উপস্থিতি ভক্তদের জানান দেয়; সফট টাচ বেঁচে আছে, নতুন উদ্যমে ভক্তদের জন্য সরব হয়ে উঠেছে। আগামীকাল সোমবার সন্ধ্যা ছয়টায় নগরীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে সফট টাচ উদযাপন করতে যাচ্ছে তাদের তিন দশক পূর্তি অনুষ্ঠান।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচবিতে প্রধান তথ্য কেন্দ্র ও কমফোর্ট সেন্টারের নির্মাণকাজ উদ্বোধন
পরবর্তী নিবন্ধবিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন