বোয়ালখালীর শ্রীপুরে ১২ বছর আগে প্রবাসী আব্দুস সালাম হত্যা মামলায় অভিযুক্ত আপন ভাইকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত। একই রায়ে মা ও বোনের যাবজ্জীবন সাজা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার পঞ্চম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ অশোক কুমার দত্ত এই রায় ঘোষণা করেন। তবে রায় ঘোষণার সময় আসামিরা অনুপস্থিত ছিলেন। রায়ে দণ্ডিতরা হলেন- মো. আজম (৩৩), তার মা ফরিদা বেগম (৬২) ও বোন কামরুন নাহার জুলি (৩২)। একই সাথে আদালত ফরিদা ও জুলিকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরো ১ বছরের কারাদণ্ড দেন। চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা আদালতের ভারপ্রাপ্ত পিপি অ্যাডভোকেট মো. লোকমান হোসেন চৌধুরী জানান, হত্যাকাণ্ডের শিকার আব্দুস সালাম বোয়ালখালী উপজেলার শ্রীপুর গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মো. আজম তার ভাই। এছাড়া যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ফরিদা তার মা এবং জুলি তার বোন।
অ্যাডভোকেট লোকমান হোসেন চৌধুরী জানান, আসামি ও ভিকটিমের পরিবার পাশাপাশি বাস করেন। খুনের ঘটনার সাতদিন আগে নিহত আব্দুস সালাম বিদেশ থেকে দেশে আসেন। আসামিদের সাথে তার পূর্ব থেকেই ভিকটিমের জায়গা সংক্রান্ত বিরোধ ছিল। ঘটনার দিন (২০০৯ সালের ১৯ অক্টোবর) নিজ বসতঘরের সামনে গোয়াল ঘর নির্মাণ নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। পরে আব্দুস সালাম ভাত খেতে বসলে অভিযুক্তরা এসে তার উপর হামলা চালান। এতে তার মৃত্যু হয়। পরে আব্দুস সালামের স্ত্রী পারভীন আক্তার বাদী হয়ে চারজনের নামোল্লেখ করে বোয়ালখালী থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। জানা যায়, ২০১০ সালে ৯ জানুয়ারি তদন্তকারী কর্মকর্তা চারজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দেন। ওই বছর ৭ সেপ্টেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জগঠনের মাধ্যমে বিচার শুরু হয়। এ মামলায় মোট ২১ জন সাক্ষীর মধ্যে আদালতে ১৬ জন সাক্ষীকে রাষ্ট্রপক্ষ উপস্থাপন করেন। গতবছর ১৫ নভেম্বর মামলাটি রায়ের জন্য প্রস্তুত হয়।
ভারপ্রাপ্ত পিপি জানান, এ মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত তিনজনের পাশাপাশি ফরিদার স্বামী আব্দুর রাজ্জাকও আসামি ছিলেন। তবে মামলা বিচারাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হলে তাকে অভিযোগপত্র থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এছাড়া মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মো. আজম শুরু থেকে পলাতক থাকলেও ফরিদা বেগম এবং কামরুন নাহার জুলি গ্রেপ্তার হয়ে জামিনে ছিলেন। তবে রায় ঘোষণার তারিখের আগ পর্যন্ত তারা আদালতে হাজিরা দিয়ে আসলেও গতকাল রায়ের দিন অনুপস্থিত ছিলেন।