ভবঘুরে সেজে দিনরাত বাসা-বাড়িতে চুরি

স্বর্ণালংকার ও যন্ত্রপাতিসহ চক্রের চার সদস্য গ্রেপ্তার

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ১৫ জুন, ২০২২ at ৮:২৭ পূর্বাহ্ণ

কারো বয়স ১৯, কারও আবার ২০ থেকে ২২। ভবঘুরে সেজে দিনরাত ঘুরে বেড়ায় নগরীর অলি গলিতে, নজরদারিতে রাখে আশেপাশের ঘর বাড়ি। কোনো বাড়িতে আলো না থাকলে চুরির পরিকল্পনা সাজায়। আবার কোনো বাড়িতে দারোয়ান না থাকলে সুযোগ বুঝে ওই ভবনে উঠে লোহা কাটার ও ছেনী দিয়ে তালা ভেঙে ঢুকে পড়ে বাসার ভেতরে। এরপর স্বর্ণালংকার, নগদ টাকা ও মূল্যবান জিনিসপত্র হাতিয়ে নেয়। স্বর্ণ-টাকার পাশাপাশি ওরা চুরি করে দামি থ্রি-পিসও। গত চারমাসে এই চক্রটি চুরি করেছে একাধিক বাসা। চুরি শেষে জানালার গ্রিল কেটে ভবনের পেছন দিক দিয়ে বের হয়ে আসে। বয়সে ছোট হলেও, তাদের অপরাধের কৌশল বড় অপরাধীদের মতোই।
দীর্ঘদিন ধরে নগরীর বাসা-বাড়িতে চুরি করে আসা সিরিজ চোর চক্রের চার সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর কোতোয়ালী থানা পুলিশের পক্ষ থেকে এমন তথ্য জানানো হয়েছে। এর আগে গত সোমবার নগরীর কোতোয়ালী থানার বলুয়ারদিঘীর পূর্ব পাড় এলাকা থেকে আসামিদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এসময় আসামিদের কাছ থেকে চুরি যাওয়া ৩ ভরি ৭ আনা স্বর্ণ ও চোরাই কাজে ব্যবহার করা যন্ত্রপাতি উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার চোর চক্রের সদস্যরা হলো, বাকলিয়া থানার বউবাজার তালহা ভবনের ভাড়াটিয়া মো. জাকির হোসেনের ছেলে শাফায়েত হোসেন রিফাত (২২), কোতয়ালী থানার বলুয়ারদীঘির পূর্ব পাড়ের বুম্বাইওয়ালার ভাড়াটিয়া মৃত আবুল হোসেনের ছেলে মো. আশিক (১৯), কোতোয়ালী থানার একই এলাকার সন্তোষ দত্তের ছেলে বিজয় দত্ত (২০) ও কে সি দে রোডের ডেল মার্কেটের স্বর্ণের কারিগর জয় পাল (২৩)। জয় কঙবাজার জেলারর রামু থানার পাল পাড়ার শ্যামল পালের ছেলে।
পুলিশ জানায়, গেল ১৪ মার্চ কোতোয়ালী থানার রহমতগঞ্জ বাই লেইন ফুলকলি বিল্ডিংয়ের বিপরীত পাশের ১৬ রেসিডেন্স ভবনের ৫ম তলার একটি ফ্ল্যাট থেকে ৮ ভরি ৮ আনা ওজনের স্বর্ণালংকার ও নগদ ৭০ হাজার টাকা চুরি হয়। এ ঘটনায় ফরিদুল আলম থানায় মামলা করেন।
এরপর ১ এপ্রিল রাত সাড়ে ১১ টায় নগরীর দেওয়ান বাজার শুক্কুর আলী মুন্সেফ লেইন রুমঘাটা সংলগ্ন আলম ভবনের ৫ম তলা ভবন থেকে ৫ ভরি ৮ আনা স্বর্ণালংকার চুরি হয়। চুরির ঘটনায় মোহাম্মদ বোরহান উদ্দিন চৌধুরী বাদী হয়ে থানায় মামলা করে। ৫ এপ্রিল মোমিন রোড এলাকার একটি ফ্ল্যাটে এবং গত ২ মে রহমতগঞ্জ বাইলেনের একটি বাসায় চুরি করে। এরকম বেশ কয়েকটি ঘটনার পর নড়েচড়ে বসে কোতোয়ালী থানা পুলিশ।
কোতোয়ালী থানার ওসি জাহিদুল কবীর আজাদীকে বলেন, চুরির পর ঘটনাস্থল ও আশেপাশের এলাকায় নজরদারির বাড়ানো হয়েছিল। সিসিটিভি ফুটেজের সহায়তায় শাফায়েত হোসেন প্রকাশ রিফাতকে (২২) নগরীর টেরীবাজার মোড় থেকে গ্রেপ্তারের করে। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে চক্রের অন্য সদস্যদের বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি বলেন, এদের মধ্যে জয়-বিজয় স্বর্ণের কারিগর। বাকি তিন চোর, চুরি করা স্বর্ণালংকার জয়-বিজয়ের কাছে কম দামে বিক্রি করে। তারা অলংকারগুলো গলিয়ে স্বর্ণের বার বানিয়ে নগরীর বিভিন্ন স্বর্ণ ব্যবসায়ীর কাছে চড়া দামে বিক্রি করে। এই চক্রের সঙ্গে আরও কেউ জড়িত আছে কিনা সেটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধরাউজানে ইভটিজারকে এক বছরের কারাদণ্ড
পরবর্তী নিবন্ধসব ঠিক হয়ে যাবে, আশা ওমর সানী-মৌসুমী পুত্রের