দুর্নীতির জন্য ফৌজদারি শাস্তির পাশাপাশি খেলাপি ঋণ নিয়ন্ত্রণ এবং একত্রীকরণের বিধান সহজ করতে ব্যাংক-কোম্পানি আইন সংশোধনের প্রস্তাবে সায় দিয়েছে দিয়েছে মন্ত্রিসভা। ব্যাংক খাতের অনিয়ম দুর্নীতি নিয়ে ধারাবাহিক সমালোচনা এবং সুশাসন ফেরাতে বিভিন্ন মহলের দাবির প্রেক্ষাপটে আইনটি সংশোধন করতে যাচ্ছে সরকার। খবর বিডিনিউজের।
ব্যাংক কর্মকর্তারা দুর্নীতি করলে জরিমানার পাশাপাশি ফৌজদারি মামলায় বিচারের বিধান রাখা হচ্ছে সংশোধিত আইনে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে গতকাল সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘ব্যাংক-কোম্পানি (সংশোধন) আইন, ২০২১’ এর খসড়ায় নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ব্যাংকের পরিচালক বা যে কেউ দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থাকলে বড় জরিমানা দিতে হবে। পাশাপাশি ক্রিমিনাল প্রসিডিং ও তার বিরুদ্ধে চলবে। এ বিষয়ে ‘অত্যন্ত জোর’ দেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, কারো এক কোটি টাকা জরিমানা হলে, সে জরিমানা দিয়ে বেঁচে যেতে পারে। সে যদি ১০ বা ২০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে, সেজন্য পেনাল কোডের আইনও তার জন্য প্রযোজ্য হবে। তার যে জরিমানা হল, সেটা ক্রিমিনাল প্রসিডিংয়ের জন্য কোনো বাধা হবে না। বাংলাদেশে সব ব্যাংকের কার্যক্রম ব্যাংক-কোম্পানি আইন ১৯৯১ এর আওতায় পরিচালিত হয়। ব্যাংকের সংখ্যা, সম্পদ, আমানত, ঋণ, লিজ ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাওয়ায় সেই আইনে সবকিছু সামাল দেওয়া যাচ্ছিল না বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব। তিনি বলেন, ব্যাংকিং ব্যবসা পরিচালনা, তদারকি, খেলাপি ঋণ নিয়ন্ত্রণ, দেশের আর্থিক খাতের সুশাসন এবং স্থিতিশীলতার জন্য এই আইনটি সংশোধন করা প্রয়োজন ছিল। বিভিন্ন দেশের আইন পর্যালোচনা করে এ আইনটি করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণ গ্রহীতার সংজ্ঞা এবং তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টি আইনে যুক্ত হয়েছে। এটি আগের আইনে অতোটা ক্লিয়ার ছিল না।
আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, সংশোধিত আইনে দুর্বল ব্যাংক-কোম্পানির সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও পুনরুদ্ধার নিয়ে একটি ধারা যোগ করা হচ্ছে। সংকটাপন্ন অবস্থার জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টিও আছে। ব্যাংক-কোম্পানি পুনর্গঠন ও একত্রীকরণের বিধানও তাতে থাকছে। অনিয়ম ও খেলাপি ঋণে দুর্দশাগ্রস্ত ব্যাংকগুলোকে একীভূত করার বিষয়টি সহজ করতে আইনি কাঠামো তৈরির বিষয়টি এর আগে বিভিন্ন সময়ে আলোচনায় এলেও এতদিন তা এগোয়নি। ২০১৮ সালে ব্যাংক-কোম্পানি আইনে এক দফা সংশোধনে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে একসঙ্গে এক পরিবারের চার সদস্যের থাকার সুযোগ দেওয়া হয়, যা নিয়ে সে সময় ব্যাপক সমালোচনা হয়।