কোভিড-১৯ মহামারির কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শিক্ষার্থীরা। মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীরা পড়ালেখায় কতটা পিছিয়ে গেছে তা বোঝা যায় চলতি বছরের প্রথম সাময়িক পরীক্ষার ফলাফল দেখলে। মাধ্যমিকের ফলাফলের কথা উদাহরণ হিসেবে বললাম। প্রাথমিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত সব স্তরের শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন করোনার কারণে। সে ক্ষতি কাটিয়ে উঠার জন্য সংগ্রাম করছেন শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকবৃন্দ। এর মধ্যে জ্বালানি সাশ্রয়ের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সাপ্তাহিক ৩ দিন বন্ধের প্রস্তাবের কথা মিডিয়ায় দেখে আশ্চর্য লাগছে! যদি এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হয়, তাহলে শিক্ষার্থীরা আরো পিছিয়ে পড়বে। অনেক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। জ্বালানি সাশ্রয়ের জন্য লোডশেডিং সহ ইতিমধ্যে সরকার যত উদ্যোগ নিয়েছেন তাতে জনগণের তেমন কেনো বিরূপ প্রতিক্রিয়া ছিল না। কারণ, জ্বালানি সংকটের এই সমস্যা বৈশ্বিক। ‘রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে সৃষ্ট হওয়া এই সংকট মোকাবিলায় নানা উদ্যোগ নিন, তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে বাদ রাখুন’- এই একটা কথা দেশের অধিকাংশ অভিভাবকই বলবেন বলে আমার মনে হয়। একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের যত সংগ্রাম সবই তো সন্তানদের জন্য। সেই সন্তানেরা পিছিয়ে পড়ুক কেউ চান না। তাই লোডশেডিং এর কষ্ট সহ্য করা গেলেও স্কুল বন্ধ ( সাপ্তাহিক ১ দিনের জায়গায় ৩ দিন) কেউ মানতে চাইবেন না মন থেকে। তাছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রতি ক্লাসে ৫০-৭০ জন ছাত্রছাত্রীর জন্য ১/২ টা বৈদ্যুতিক পাখা চলে হয়ত। এই শিক্ষার্থীরা স্কুলের সময়টা বাসায় থাকলে কতটা পাখা চলবে? ওই এক ক্লাসের ১/২ টা পাখার জায়গায় ৫০/৬০ টা পাখা চলবে বাসায়। আবার দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাখাও নেই। এ জন্য বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে আরো উদ্যোগ নিন, শুধু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বন্ধ বাড়ানোর কথা বাদ দিন। বৈদ্যুতিক আলো সাশ্রয়ের জন্য শিক্ষার-আলো নিভু নিভু না হোক।