বেড়িবাঁধ ঘিরে দুশ্চিন্তা দুই লক্ষাধিক মানুষের

আনোয়ারা প্রতিনিধি | শনিবার , ২০ মে, ২০২৩ at ৬:১০ পূর্বাহ্ণ

আনোয়ারায় তলিয়ে যাওয়া স্লুইচ গেইট দুই বছরেও নির্মিত না হওয়া ও বাঁধ নির্মাণ কাজে ধীরগতিতে শংকায় আছে উপকূলের দুই লক্ষাধিক মানুষ। উপজেলার চাতরী, রায়পুর, জুঁইদন্ডিসহ বিভিন্ন এলাকায় জোয়ার বাড়লেই আতংক ভর করে সাধারণ মানুষের মনে।

তলিয়ে যাওয়া স্লুইচ গেইট সময়মত নির্মিত না হওয়া, বেঁড়িবাঁধ নির্মাণে নানা অনিয়মের দীর্ঘদিনের অভিযোগের কোনো সুরাহা না হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দাদের মাঝে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। বর্তমানে চাতরী ইউনিয়নের কেয়াগড় বাঘখাইনের তলিয়ে যাওয়া বাঁধ দিয়ে জোয়ারের পানি উঠানামার কারণে চাষাবাদসহ দৈনন্দিন জীবনে প্রভাব পড়েছে এলাকার মানুষের। সেইসাথে সামনে বর্ষা, দুর্যোগ মোকাবেলা নিয়ে দুশ্চিন্তার শেষ নেই ক্ষতিগ্রস্ত ইউনিয়নের বাসিন্দাদের।

জানা যায়, আনোয়ারা উপজেলার চাতরী ইউনিয়নের কেয়াগড় বাঘখাইনের বেড়িবাঁধের ওপর নির্মিত স্লুইচ গেইটটি গত দুই বছর আগে তলিয়ে যায়। এতে চাতরী ইউনিয়নে কেয়াগড়, বাঘখাইন, সিংহরা গ্রামের শত শত একর জমির চাষাবাদের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। আনোয়ারার সাথে বাঘখাইন গ্রামের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গত দুই বছর ধরে নৌকা দিয়ে যাতায়াত চলছে। যে কারণে এ এলাকায় বসবাসকারী স্থানীয়দের মাঝে দুঃখ দুর্দশার শেষ নেই বলে জানায় স্কুল শিক্ষক পুস্পল দত্ত। স্থানীয়রা জানান, ক্ষতিগ্রস্থ বাঁধ নির্মাণে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ নির্দেশনা রয়েছে। পানি উন্নয় বোর্ড চলতি বর্ষার আগে বাঁধ নির্মাণ ঘোষণা দেওয়ার পরও এখনো বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু করতে পারেনি। এদিকে উপকূলীয় রায়পুর, জুঁইদন্ডি ইউনিয়নের চলমান বেড়িবাঁধের কাজে ধীর গতি, কাজের মান নিয়ে স্থানীয়দের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। বর্তমানে রায়পুর ইউনিয়নের ঘাটকূল ও বাইঘ্যার ঘাট এলাকায় বেড়িবাঁধ ঝুঁকিতে রয়েছে। বাইঘ্যার ঘাট এ বর্তমানে ৮০ মিটার বাঁধ চরম ঝুকিতে আছে যে কোনো মুহুর্তে জোয়ারে এ বাঁধ তলিয়ে যাবে বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দা বদরুজ্জমানের। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান বার আউলিয়া জামালিয়া এন্টারপ্রাইজের স্বত্তাধিকারী বদরুল হক জানায়, বাইঘ্যার ঘাট এলাকার ৮০ মিটার বাঁধ রক্ষায় গত সপ্তাহে জরুরি মেরামতের আওতায় একটি টিউব ও ২শ জিও ব্যাগ বসানো হয়েছে।

জুঁইদন্ডী ইউনিয়নের বেড়িবাঁধের অবস্থা চরম নাজুক বাঁধ নির্মাণে ধীর গতি ও অনিয়মের কারণে স্থানীয়রা চরম আতংকে রয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ সময়মত বাঁধ তৈরি না হওয়ায় আগামী বর্ষাতে চরম ঝুঁকিতে রয়েছে।

চাতরী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আফতাব উদ্দীন চৌধুরী সোহেল জানান, কেয়াঁগড় বাঘখাইনের তলিয়ে যাওয়া স্লুইচ গেইটের কারণে স্থানীয়দের দুঃখ দুর্দশার শেষ নেই। যার কারণে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের নির্দেশে ও ডিও লেটারে কেয়াঁগড় বাঘখাইনের তলিয়ে যাওয়া স্লুইচ গেইট ও বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শওকত শহীদ জানান, বাঘখাইনের তলিয়ে যাওয়া স্লুুইচ গেটটি ত্বত্তাবধায়ক প্রকৌশলীর পরামর্শে বিকল্পভাবে হলেও বাঁধ নির্মাণ করা হবে। রায়পুর ইউনিয়নের বাইঘ্যার ঘাট এলাকায় বর্ষার আগে জরুরি মেরামত করা হবে। তিনি উপকূলীয় জুঁইদন্ডিসহ বিভিন্ন এলাকায় বেড়িবাঁধ অরক্ষিত আছে বলেও জানান।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপটিয়ায় দুই ভাইকে কুপিয়ে জখমের ঘটনায় মামলা
পরবর্তী নিবন্ধ গুমাইবিল কি বাঁচবে