বেপরোয়া গতির ব্যাটারিচালিত অটো রিকশার ধাক্কায় নগরে প্রাণ হারাল সাত বছরের এক শিশু। তার নাম মুনতাহা। তার মা–বাবার নবম বিবাহবার্ষিকীর দিনে গত সোমবার রাত সাড়ে ৯টায় ঘটে এই মর্মন্তুদ ঘটনা। নিজেদের আপন করে পাওয়ার দিনে একমাত্র সন্তান মুনতাহাকে হারিয়ে দিনটি আনন্দের বদলে শোকেই পরিণত হল আসাদুজ্জামান আসাদ ও শারমীন দম্পত্তির জীবনে। মুনতাহার বাবা আসাদুজ্জামান একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের (এসি বাজার লিমিটেড) একাউন্টস এক্সিকিউটিভ। তার গ্রামের বাড়ি ফেনীতে। নগরের টেক্সটাইল গেইট গ্রীন ভ্যালি আবাসিক এলাকায় তার বাসা। গতকাল সকালে মুনতাহার মরদেহ ফেনীতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে দুপুর ২টার দিকে জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
মুনতাহা গ্রীন পয়েন্ট রেসিডেন্সিয়াল স্কুলের কেজি শ্রেণির ছাত্রী। স্কুলের শিক্ষক–শিক্ষার্থী সবার পছন্দের ছিল। গতকাল মরদেহ নিয়ে য়াওয়ার সময় তাকে শেষ বারের মতো দেখতে ভিড় জমান তারা।
নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, বায়েজিদ থানার টেঙটাইল গেইট গ্রীন ভ্যালি আবাসিক এলাকার আলামিন মসজিদের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। বাসার পাশের দোকানে মেয়ে মুনতাহাকে নিয়ে চাল কিনতে যান মা শারমীন। রাস্তা পার হওয়ার সময় দ্রতগামী একটি ব্যাটারিচালিত রিকশা ধাক্কা দেয় মুনতাহাকে। এতে মাথায় ও শরীরে আঘাত পায় সে।
মুনতাহার বাবা আসাদুজ্জামান দৈনিক আজাদীকে বলেন, ঘটনার সময় আমি বাইরে অফিসের একটি পার্টিতে ছিলাম। সেখানেই ডিনার করার কথা ছিল। মুঠোফোনে দুর্ঘটনার খবর জানতে পারি। মেয়েকে প্রথমে স্থানীয় একজন চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। মেয়ের শরীরের উপরে তেমন আঘাত ছিল না। অভ্যন্তরে আঘাত পাওয়ায় চিকিৎসক মুনতাহাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
ঘটনার দিন সোমবার নিজেদের বিয়ে বার্ষিকীর দিন থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করে তিনি বলেন, আগের দিন রোববার মুনতাহার মায়ের জন্মদিন ছিল। আনন্দের দিন এভাবে আমাদের শোকে ভাসিয়ে মেয়েটি চলে গেল। মানতে পারছি না।
এ দিকে দুর্ঘটনার জন্য দায়ি রিকশাচালককে গ্রেপ্তার করেছে বলে জানিয়েছেন বায়েজিদ থানার ওসি মো. ফেরদৌস জাহান।