বেগম মুশতারী শফী : এক অগ্নিশিখার মহাপ্রস্থান

নেছার আহমদ | শুক্রবার , ২৪ ডিসেম্বর, ২০২১ at ১০:২৪ পূর্বাহ্ণ

স্বাধীনতা সংগ্রাম, মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, যুদ্ধাপরাধী ও ঘাতক দালাল নির্মূলে যে কয়জন ব্যক্তিত্ব তাঁদের কর্মদক্ষতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সর্বদা নিজেকে নিবেদিত রেখে ইতিহাসে স্থান করে নিয়েছেন তাঁদের মধ্যে দেশ বরেণ্য সাহিত্যিক, বীর মুক্তিযোদ্ধা নারী নেত্রী শহীদ জায়া বেগম মুশতারী শফী অন্যতম।
চট্টগ্রামের স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং পরবর্তীতে রাজনৈতিক ক্রান্তিকালে যিনি অভিভাবক হিসেবে মুক্তিকামী ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার মানুষদের পথ দেখিয়ে আলোকবর্তিকা হিসেবে কাজ করেছেন তিনি হলেন আমাদের প্রিয়জন বেগম মুশতারী শফী। আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষে লেখালেখি করি এবং সাংগঠনিক কাজে জড়িত তিনি আমাদের আদর্শ পথ প্রদর্শক এবং প্রেরণাদায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করেছেন।
বেগম মুশতারী শফী এক সংগ্রামী চেতনা, এক অগ্নিশিখা, এক বিদ্রোহ সত্তার অবিস্মরণীয় নাম। জীবন যে কত বড় এবং তাঁকে যে সাধনায়, ত্যাগে সদিচ্ছায়, শ্রমে অঙ্গীকারে কত সুন্দর ও তাৎপর্যপূর্ণভাবে নির্মাণ করা যায় তাঁর অনুপম দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন বেগম মুশতারী শফী। অশুভ, অসুন্দর, অকল্যাণ এর বিরুদ্ধে যিনি ছিলেন আজীবন সক্রিয় এক যোদ্ধা। এ মহান সংগ্রামী নারীর বিষয়ে কিছু লিখার সুযোগ পাওয়া মহা সম্মানের।
মুক্তিযোদ্ধা বেগম মুশতারী শফী ১৯৩৮ এর ১৫ জানুয়ারী পিতার কর্মস্থল ভারতের মালদহ জেলার কালিয়াচক নামক স্থানে জন্মগ্রহণ করলেও তাঁর আদিবাড়ি ফরিদপুর জেলার গেরদা গ্রামে। পিতা- খন্দকার নজমুল হক আনসারী অভিভক্ত ভারতবর্ষের পুলিশের ডি.এস.পি হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন।
বনেদি পরিবারের সন্তান মুশতারী শফীর দাদা খন্দকার হেলাল উদ্দীন আনসারী সাব রেজিস্টার হিসেবে কর্মরত থাকা অবস্থায় ১৮৫৭ সালে সিপাহী বিদ্রোহে পরোক্ষভাবে অংশগ্রহণের অপরাধে চাকরিচ্যুত হন। পারিবারিক সূত্রে স্বাধীনতা ও আন্দোলন সংগ্রামের রক্ত মুশতারী শফীর ধমনীতে প্রবাহমান। সে ধারাবাহিকতায় তিনি তাঁর জীবন গড়ে নিয়েছেন। মায়ের দিক দিয়েও সে ধারাবাহিকতার প্রমাণ মেলে। মায়ের নাম আরেফা খাতুন। নানা খান বাহাদুর কাজী আজিজুল হক অবিভক্ত ভারতের পুলিশের এস.পি হিসেবে চাকরী করেছেন। ১৯৩৩ সালে ফিঙ্গার প্রিন্ট আবিষ্কার করে ইতিহাসে স্থান করে নিয়েছেন।
শৈশবে মাত্র ৩ মাস বয়সে মাতৃবিয়োগ এবং ১০ বছর বয়সে বাবার মৃত্যুর কারণে অনেকটা ছিন্নমূল জীবন শুরু হয়। ফলে প্রাতিষ্ঠানিক উচ্চ শিক্ষা বলতে যা বুঝায় তা তাঁর হয়ে উঠেনি।
ছোট বয়সে তাঁর জীবনে যা ঘটেছে এবং পারিবারিক পারিপার্শিক সমাজ রাজনীতিতে যা ঘটতে দেখেছে, সেসব অবোধ সুপ্ত চিত্তকে এমন ঝাঁকুনি দিয়ে অবচেতন মনের গভীরে প্রবেশ করে গেঁথে গিয়েছে যা বোধের দিক থেকে অনেক বেশি তাঁকে এগিয়ে নিয়ে গেছে। সব বাঁধা বিপত্তি ও না পাওয়ার বেদনাগুলোকে স্কুলের খাতার পাতায় লুকিয়ে ডায়েরীর মতো করে সুখ দুঃখ ও উপলব্ধির কথাগুলো অজস্র ভুল বানানে লিখে ফেলতেন তিনি। এভাবেই বৃটিশ বিরোধী স্বরাজ আন্দোলন, পঞ্চাশের মম্বন্তর, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ, ৪৬ সালের রায়ট, ৪৭ সালের ভারত বিভক্তি ও ৫২ ভাষা আন্দোলন শৈশবের উপলব্ধির গভীরে যে রেখা টেনেছে, তা তাঁর জীবনে উজ্জ্বল হয়ে রয়েছে।
পঞ্চাশ দশকের শেষভাগে বাম রাজনীতির সঙ্গে ঘনিষ্ট সম্পর্ক গড়ে উঠে এবং সমাজতন্ত্রে বিশ্বাস ও প্রগাঢ় আস্থা জন্মে।
ষাটের দশকের শুরুতে নারীর প্রগতি, দারিদ্র বিমোচন ও নারী শিক্ষার জন্য ‘বান্ধবী সংঘ’ প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। সেখানে কেবল নারীদের হস্ত শিল্প, সেলাই, উলের মেশিনে গরম কাপড় তৈরির প্রশিক্ষণ দেওয়া হত। এছাড়াও সংগীত, যন্ত্র সংগীত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা ছিল। একই সাথে নিয়মিত সাহিত্য সভা হত। রক্ষণশীল পাকিস্তানের সে সময়ে নারী প্রগতির এ কার্যক্রম পরিচালনা চরম দুঃসাহসিক কাজ ছিল। নারীদের সংস্কৃতি চর্চা ও লেখনির জন্য মহিলাদের লেখা নিয়ে বান্ধবী সংঘের মুখপাত্র হিসেবে ‘মাসিক বান্ধবী’ ১৯৬৪ সাল থেকে এক নাগাড়ে ১১ বছর তিনি সম্পাদনা করেছেন। মাসিক বান্ধবী পত্রিকা বাংলার নারীর প্রগতি ও স্বাধীনতার জন্য লেখনির মাধ্যমে বিশেষ অবদান রাখে। মুশতারী শফী ১৯৬৯ এর গণ-আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন এবং মাসিক মহিলা মুখপত্র ‘বান্ধবী’র মাধ্যমে স্বৈরাচারী পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রচার এবং নারীদের উদ্বুদ্ধ ও সংগঠিত করেন।
১৯৭০ সালে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ চট্টগ্রাম শাখার তিনি প্রথম আহ্বায়ক নির্বাচিত হন।
১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী বেতার কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করার প্রথম পরিকল্পনা গড়ে ওঠে তাঁর বাসভবন ‘মুশতারী লজ’ এ। পরিকল্পক উদ্যোক্তা ও প্রধান প্রতিষ্ঠাতা বেলাল মোহাম্মদ সহ দশজনের পাঁচজন আব্দুল্লাহ আল ফারুক, আবুল কাশেম সন্দ্বীপ, কাজী হাবিবুর রহমান, রেজাউল করিম সহ সকলে তাঁর বাসভবনে অবস্থান করেন। এ বাড়িতে থেকেই তাঁরা গোপনে বিপ্লবী বেতারের কার্যক্রম চালান। ৩০ মার্চ কালুরঘাট বিপ্লবী বেতার কেন্দ্রে বিমান হামলার পর তা বন্ধ হয়ে যায়। ২৭ মার্চ মুক্তিযোদ্ধাদেরকে সরবরাহ করার জন্য ট্রাক ভর্তি গোলাবারুদ তাঁর গৃহ ‘মুশতারী লজ’ এ গোপনে সংরক্ষণ করা হয়।
প্রতিবেশি অবাঙালিদের অভিযোগ এবং পাকিস্তান সেনাবাহিনীর গোয়েন্দা রিপোর্টের ভিত্তিতে ৭ এপ্রিল মুশতারী লজ হতে পাক বাহিনীরা তাঁর স্বামী ডা. মোহাম্মদ শফী ও একমাত্র ছোট ভাই এহসানকে (চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র) ধরে নিয়ে হত্যা করে। পরবর্তীতে মুশতারী শফী পালিয়ে গিয়ে পায়ে হেঁটে ভারতের আগরতলায় আশ্রয় নেন এবং ফাস্ট এইড ট্রেনিং নিয়ে হাসপাতালে আহত যোদ্ধাদের সেবা মনোবল অটুট রাখার জন্য মুক্তিবাহিনীর ট্রেনিং ক্যাম্প ও শরণার্থী শিবিরে উদ্দীপকমূলক বক্তৃতা মাস্টার রোল করে শরণার্থীদের মধ্যে রিলিফের গুড়ো দুধ বিতরণ সহ অনেক অনেক সেবামূলক কাজে তিনি অংশ নেন।

দেশ স্বাধীন হওয়ার পর স্বামী বিহীন অসহায় অবস্থায় ছেলেদের নিয়ে দেশে ফেরত আসেন এবং বাংলাদেশ বেতার চট্টগ্রাম কেন্দ্রে ‘নিজস্ব লেখক শিল্পী’ পদে চাকরীতে যোগ দেন এবং ১৯৯৫ সালে চীফ স্কিপ রাইটার পদ থেকে অবসর নেন। বেতারে চাকরীকালীন সময়ে তাঁর লেখা ১৭টি নাটক প্রচারিত হয়। যার মধ্যে মৌলিক রচনা-৯টি। বিভিন্ন লেখকের গল্প উপন্যাসের বেতার নাট্যরূপ দিয়েছেন-৮টি এবং অসংখ্য নাটিকা ও জীবন্তিকা তিনি রচনা করেন। এছাড়াও বেতারে শিশু কিশোর অনুষ্ঠান, মহিলা অনুষ্ঠান, কৃষিভিত্তিক অনুষ্ঠান ও জনসংখ্যা কার্যক্রম অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেছেন এবং বিভিন্ন নাটকেও অংশ নিয়েছেন। বেতারে নিয়মিত চাকরীর বাইরে তিনি নারী মুক্তি ও বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকা- চালিয়ে গেছেন।
১৯৯০ সালে ইংল্যান্ড, বেলজিয়াম, সুইজারল্যান্ড, অস্ট্রিয়া, ইতালী ও ফ্রান্স সহ বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করেন। সে সময় বিবিসি থেকে তাঁর সাক্ষাৎকার প্রচার করা হয় এবং প্রবাসী লেখক সাংবাদিক কর্তৃক তাঁকে সংবর্ধনা দেয়া হয়। এছাড়াও তিনি ভারত, সিংগাপুর ও মালেশিয়ার বিভিন্ন স্থান সফর করেন।
১৯৯২ সালে শহীদ জননী জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি আন্দোলন শুরু করেন। সে সময় মুশতারী শফীকে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি চট্টগ্রাম জেলা শাখার আহ্বায়ক নির্বাচিত করা হয়। তাঁর নেতৃত্বে বিভিন্ন পেশাজীবী, সামাজিক, রাজনৈতিক সংগঠন ও ব্যক্তিত্বের সমন্বয়ে মহানগর সহ সম্পূর্ণ চট্টগ্রাম জেলায় ঘাতক দালাল নির্মূল আন্দোলন বেগবান করা হয়।
১৯৯৫ সালে শহীদ জননী জাহানারা ইমামের মৃত্যুর পর বেগম মুশতারী শফীকে ‘একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি’ কেন্দ্রের আহ্বায়ক পদে নির্বাচিত করা হয়। তাঁর নেতৃত্বে গোলাম আযমের বিচার তথা ‘গণ আদালত’ এর গণরায় কার্যকর সহ সকল যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবীতে জাহানারা ঈমামের মৃত্যুতে ঝিমিয়ে পড়া আন্দোলন পুনরায় তীব্রতর হয়েওঠে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবীর এই আন্দোলনে প্রবাসী বাঙালিদের সম্পৃক্ত করার জন্য সেই সময়ে বিভিন্ন দেশ যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র জার্মানীতে তিনি সাংগঠনিক সফর করেন। সে সময়ে জার্মানীর একটি প্রতিষ্ঠান ‘হেনরিচ বোল ফাউন্ডেশন’এর আমন্ত্রণে ও অর্থানুকূল্যে জার্মানীর ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির আয়োজনে হ্যানোভার শহরে ‘বিশ্বে মৌলবাদের উত্থান’ শীর্ষক সেমিনারে যোগদান করেন এবং মৌলবাদ ও জঙ্গীবাদ নির্মূলে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রেখে প্রসংশিত হন।
১৯৪৯ সালে দৈনিক আজাদী পত্রিকায় ‘মুকুলের মাহফিলে’ (ছোট গল্প), দৈনিক সংবাদ পত্রিকার ‘খেলাঘর’ এবং ‘সাপ্তাহিক বেগম’ এর মাধ্যমে তাঁর লেখালেখি শুরু। এই পর্যন্ত তাঁর ২৫টি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়াও তাঁর অসংখ্য প্রবন্ধ ও নিবন্ধ বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় ছাপা হয়েছে।
তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থ সমূহের নাম হলো ঃ দুটি নারী একটি যুদ্ধ, (১ম ও ২য় সংস্করণ), শঙ্খচিলের কান্না, জীবনের রূপকথা, এমনও হয়, মুক্তিযুদ্ধের গল্প, একুশের গল্প, বিপর্যস্ত জীবন। উপন্যাস সমূহ ঃ একদিন এবং অনেকগুলো দিন, বেলা অবেলা, অকাল বোধন। কিশোর গ্রন্থ ঃ একগুচ্ছ গল্প তোমাদের জন্য, মুক্তার মুক্তি (শিশুতোষ নাটক), একাত্তরের স্মৃতিচারণ গ্রন্থ সমূহ ঃ স্বাধীনতা আমার রক্ত ঝরা দিন (১ম হতে ৭ম সংস্কারণ)। মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক গ্রন্থ ঃ মুক্তিযুদ্ধে চট্টগ্রামের নারী, (১ম ও ২য় সংস্করণ), চিঠি ঃ জাহানারা ইমামকে। ভ্রমণকাহিনী ঃ আমি সুদূরের পিয়াসি, স্মৃতিতে অমলিন যাঁরা। প্রবন্ধ গ্রন্থ : আমার প্রতিরোধের আগুণ, নারী বলে আমরাও মানুষ। সম্পাদনা গ্রন্থ হলো ঃ বান্ধবী (নিয়মিত মহিলা মাসিক), হৃদয়ে অনুভবে (শ্রীমতি তরুণ ম-ল স্মারক গ্রন্থ), স্বাধিকার (মহিলা পরিষদ চট্টগ্রাম জেলা শাখার মূখপত্র) ইত্যাদি।
একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি ছাড়াও তিনি উদীচী, মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘর সহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে জড়িত থেকে দেশের ও জনসভার কাজ করেছেন।
বেগম মুশতারী শফীর সাংগঠনিক ও স্বাধীন দেশে তাঁর কর্মের স্বীকৃতি স্বরুপ অনেক অনেক সম্মাননা পুরস্কার পেয়েছেন। সম্মানীত হয়েছেন বিভিন্ন সংগঠন কর্তৃক। তাঁর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে বাংলা একাডেমি কর্তৃক ২০১৬ সালে মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ‘বাংলা একাডেমি সম্মানসূচক ফেলোশীপ’ প্রদান এবং ২০২০ সালে তাঁকে রাষ্ট্রিয় পুরস্কার ‘বেগম রোকেয়া পদকে’ ভূষিত করা হয়। এছাড়া সাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য বেগম মুশতারী শফীকে ‘অনন্যা সাহিত্য’ পুরস্কার প্রদান করা হয়।
বেগম মুশতারী শফী জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় মাথা উচু করে বীরের মতো বেঁচেছিলেন। অন্যায়ের কাছে কখনো মাথা নত করেননি। সাম্প্রদায়িকতা কখনো তাঁকে স্পর্শ করতে পারেনি। চেতনা ও দর্শনগতভাবে তিনি ছিলেন পুরোপুরি মানবতাবাদী। সারাজীবন তিনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় একটি মানবিক সমাজ গড়ার আন্দোলনে সম্পৃক্ত থেকে কাজ করেছেন। বেগম মুশতারী শফী বিবেক ও মানবতাবাদের স্বপক্ষে এক হিরন্ময় কণ্ঠস্বর হিসেবে কাজ করেছেন।
দেশের বিভিন্ন ক্রান্ত্রিকালে বিবেকের প্রতীক হিসেবে পথে নেমেছেন। বিনীত ও মার্জিত শব্দ বিন্যাসে ও মর্মভেদী কঠোর কঠিন বক্তব্য উচ্চারণে সকলকে উজ্জিবীত করেছেন। তাঁর সুগভীর দেশপ্রেম, সাহসীমন প্রাগসর চিন্তা ও মনন মুক্তিবুদ্ধির চর্চা এবং সংগ্রামী জীবন আমাদের প্রেরণা হয়ে থাকবে চিরকাল।
লেখক : প্রাবন্ধিক, সম্পাদক- শিল্পশৈলী

পূর্ববর্তী নিবন্ধজুম্’আর খুতবা
পরবর্তী নিবন্ধরাত