বৃষ্টি হলেও কমেনি গরমের তেজ

চট্টগ্রামে বেড়েছে ডায়রিয়ার প্রকোপ

আজাদী প্রতিবেদন | শুক্রবার , ১৫ জুলাই, ২০২২ at ৭:৪৬ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রামে গতকাল বৃহস্পতিবার সর্বোচ্চ ৩৪.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করে পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিস। তাপমাত্রা খুব বেশি না হলেও গরমের পারদটা যেন অনেক বেশি। এটুক তাপমাত্রাতেই গরমে মানুষের হাঁসফাঁস। ভ্যাপসা গরমে জনজীবন অনেকটা দুর্বিষহ। এ যেন ভরা বর্ষা মৌসুমেও খরতাপ। তাপমাত্রা বেশি না হলেও বেশি গরম অনুভূত হওয়ার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ মেঘনাথ আজাদীকে বলেন, বেশ কয়দিন ধরে বৃষ্টি হচ্ছে না। হলেও তা বিক্ষিপ্ত। বৃষ্টি কম হওয়ার কারণে বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ কমে গেছে। যার কারণে গরম বেশি অনুভূত হচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন- বাতাসও রয়েছে, এরপরও বেশি গরম অনুভূত হচ্ছে। এ বিষয়ে আবহাওয়াবিদরা জানান, মৌসুমি বায়ু আসে দক্ষিণ দিক থেকে। সেখানে সমুদ্রপৃষ্ঠের ওপরের অংশে তাপমাত্রা বেশি থাকে। এ কারণে ওই দিক থেকে বাতাস এলেও তা গরম থাকে। যার ফলে বাতাসও পাওয়া যায়, আবার গরমও অনুভূত হয়। এদিকে, গতকাল বিকেলে এক পশলা বৃষ্টি নামে চট্টগ্রামে। এরপরও গরমের তেজ কমেনি।
আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তারা বলছেন- মূলত বাতাসে আদ্রতার কারণেই মানুষের মধ্যে গরম লাগার অনুভূতি বেশি হচ্ছে। এ ছাড়া বর্ষায় কয়েক দিন বৃষ্টি বেশি হলে তাপমাত্রা কমে যায়। এখন কিছু জায়গায় বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টি হলেও সেভাবে কিন্তু বৃষ্টি হচ্ছে না। সে কারণে তাপমাত্রা কমছে না। ১৬ বা ১৭ জুলাই পর্যন্ত এ অবস্থা চলতে পারে। এরপর বৃষ্টিপাতের প্রবণতা ধীরে ধীরে বাড়বে। ভারি বৃষ্টিপাতেরও সম্ভাবনা রয়েছে। তখন অবস্থার পরিবর্তন হতে পারে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তারা। অন্যদিকে, ভরা বর্ষা মৌসুমেও কম বৃষ্টিপাতের বিষয়ে আবহাওয়াবিদরা বলছেন, মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশে দুর্বলভাবে অবস্থান করছে। যার কারণে বৃষ্টি কম হচ্ছে।
বেড়েছে ডায়রিয়ার প্রকোপ : গরমের সাথে পাল্লা দিয়ে রোগ-ব্যাধিও যেন বাড়ছে সমানতালে। বিশেষ করে ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েছে বেশি। চিকিৎসকরা বলছেন, এই সময়ে এমনিতেই সিজনাল জ্বর-ফ্লু থাকে। আবার করোনাও ফের চোখ রাঙাচ্ছে। তবে ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েছে বেশি। এই কয়দিনে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেশ বেড়েছে হাসপাতালে। একই সাথে হাসপাতালের আউটডোর এবং চিকিৎসকের ব্যক্তিগত চেম্বারেও ডায়রিয়া রোগী বেড়েছে। বিশেষ করে কোরবানের ঈদের পর উল্লেখযোগ্য হারে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগী পাওয়া যাচ্ছে জানিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. শাকিল ওয়ায়েজ আজাদীকে বলেন, এই সময়ে এমনিতে সিজনাল জ্বর-ফ্লু থাকে। তবে কোরবানের পর ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগী বেড়েছে। হাসপাতালের পাশাপাশি চেম্বারেও অনেক রোগী পাওয়া যাচ্ছে। অতি গরম এবং খাওয়া-দাওয়ায় অসতর্কতার কারণে এটি হতে পারে।
গরমে এসব রোগ-বালাই থেকে রক্ষা পেতে বেশ কিছু পরামর্শ দিয়েছেন ডা. শাকিল ওয়ায়েজ। এসব পরামর্শের মধ্যে রয়েছে- প্রয়োজন ছাড়া গরমে বের না হওয়া। অর্থাৎ গরম এভয়েড করা। বেশি করে পানি পান এবং ওরস্যালাইন খাওয়া। বাইরের পানি এবং খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকা। মাংস খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএসএসসি পরীক্ষা কবে, জানা যাবে রোববার
পরবর্তী নিবন্ধতীব্র রোদেও হাঁটু পানি