আনোয়ারার উপকূলীয় এলাকার তরমুজের ঐতিহ্য পুরনো। উপজেলার পারকি সমুদ্র সৈকত, রায়পুর, গহিরার তরমুজের সুনাম আছে চট্টগ্রামজুড়ে। কিন্তু কালের বিবর্তনে সেই ঐতিহ্য হারাতে বসেছিল। গত কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন উন্নত জাতের উদ্ভাবন ও কৃষি অফিসের সহযোগিতায় আবারও ফিরে এসেছে তরমুজের সোনালী অতীত।
কৃষি অফিস জানিয়েছে, চলতি মৌসুমে আনোয়ারা উপজেলার উপকূলীয় বারশত, রায়পুর, বরুমচড়া ও বটতলী ইউনিয়নে ৪২ হেক্টর জমিতে বিষমুক্ত তরমুজ চাষ হয়েছে। চাষিরা জাপান, চায়না ও ইন্ডিয়ান প্রযুক্তির উন্নত জাতের বীজ গ্লোরি, জাম্বু, টপইল্ড, বাংলা লিংক, চ্যাম্পিয়ন, বিগ ফ্যামিলি, ও পাকিজা জাতের তরমুজ চাষ করেছেন। তবে গ্লোরি ও চ্যাম্পিয়ন জাতের তরমুজের ভালো ফলনে কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে চাষিদের তরমুজ চাষে নানাভাবে সহায়তা দেওয়া হয়েছে। ফলনও বেশি হওয়ায় কৃষকের মুখে তৃপ্তির হাসি।
সরেজমিনে আনোয়ারার উপকূলীয় ইউনিয়নগুলো ঘুরে দেখা যায়, পারকি, রায়পুর ইউনিয়নের সাঙ্গু নদের মোহনা, বার আউলিয়া, গহিরা, বরুমচড়া ও বটতলী ইউনিয়নে তরমুজের ভাল ফলন হয়েছে।
স্থানীয় পারকী সমুদ্র সৈকত এলাকার তরমুজ চাষি এইচ এম মহিউদ্দীন মঞ্জুর বলেন, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রমজান আলীর অনুপ্রেরণা ও সহযোগিতায় পারকি সমুদ্র সৈকত এলাকায় এক একর ২০ শতক জমিতে বিষমুক্ত তরমুজ চাষ করে সফল হয়েছি।
এতে আমি ও আমার পরিবার অনেক খুশি। গত নভেম্বর মাসে উপ–সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা সরওয়ার আলম ও ইউনিয়ন উপ–সহকারী কর্মকর্তা সম্পদ তালুকদারের পরিকল্পনায় গ্লোরি ও চ্যাম্পিয়ন জাতের তরমুজ চারাগাছ রোপণ করি।
বর্তমানে প্রায় পাঁচ হাজারের বেশি তরমুজের ফলন হয়েছে। সব মিলিয়ে আমার ৬০ হাজার টাকার মত খরচ হয়েছে। দুই চার দিনের মধ্যে ইনশাল্লাহ তরমুজ বিক্রি শুরু করবো। আশা করি সব কিছু অনুকূলে থাকলে দুই থেকে আড়াই লাখ টাকার বেশি লাভ হবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রমজান আলী জানান, আনোয়ারার বিষমুক্ত তরমুজ চট্টগ্রামে বেশ জনপ্রিয়। কেননা এখানকার তরমুজ স্বাদে অতুলনীয়। বর্তমানে তরমুজ চাষে কৃষকের আগ্রহ বেড়েছে। আনোয়ারায় আটটি প্রদর্শনীতে চাষিদের মাঝে বিনামূল্যে বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে। সেই সাথে উপজেলা কৃষি অফিস চাষিদের সব ধরনের সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে।