বিশ্বের নাট্য চর্চার ইতিহাসে বের্টোল্ট ব্রেখ্ট চিরস্মরণ্য নাম। কবি হিসেবেও তিনি ছিলেন খ্যাতিমান। মার্কসবাদী জীবন দর্শনের ব্যাপক প্রভাব রয়েছে তাঁর সৃষ্টিতে। তাঁর নাটক ও অ্যাবসার্ড রচনার বেশিরভাগই দুঃখভারাক্রান্ত।
জার্মান নাট্যকার ও কবি ব্রেখ্টের জন্ম ১৮৯৮ সালের ১০ই ফেব্রুয়ারি জার্মানির বাভারিয়ার আউসবার্গে। পড়াশোনা করেছেন মিউনিখ-এ চিকিৎসা শাস্ত্রে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় সামরিক বাহিনিতে চিকিৎসা সহকারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ছাত্রাবস্থায়ই ব্রেখ্ট কবিতা ও নাটক লিখতেন।
বিশ বছর বয়সে ‘মৃত সৈনিকের জন্য শোকগাথা’ কবিতাটি প্রকাশিত হলে কবি হিসেবে খ্যাতি লাভ করেন তিনি। সেই সাথে নাটকের প্রতি প্রবল আগ্রহের বশে ১৯২০ সালে মিউনিখের এক থিয়েটারে চাকরি নেন ব্রেখ্ট। এভাবে কেটে যায় অনেক বছর। জার্মানিতে হিটলারের নাৎসি বাহিনির দমন-পীড়নে বহু শিল্পী-সাহিত্যিকের মতো ব্রেখ্টকেও দেশ ছাড়তে হয়।
দীর্ঘ পনেরো বছর তাঁকে দেশ ছেড়ে থাকতে হয়েছে। যুদ্ধ শেষে ১৯৪৮ সালে তিনি ফিরে আসেন বিভাজিত জার্মানির পূর্ব অংশে। পূর্ব জার্মানিতে স্থায়ী হয়ে ব্রেখ্ট পুরোপুরি নাটক রচনা ও প্রযোজনায় মনোনিবেশ করেন। স্ত্রী বিখ্যাত অভিনেত্রী হেলেন ভাইগেলের সাথে যৌথভাবে গড়ে তোলেন ‘বার্লিনার অ্যাসাম্বেল’।
ব্রেখ্ট রচিত নাটকগুলোর মধ্যে ‘থ্রি পেনি অপেরা’, ‘বাল্’, ‘মাদার কারেজ’, ‘গ্যালিলিওর জীবন’ প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। ‘গেডিখটে’ নামে নয় খণ্ডের একখানা কাব্যসমগ্র রয়েছে তাঁর। ১৯৫৫ সালে তাঁকে ‘লেনিন পুরস্কার’ দেওয়া হয়। ১৯৫৬ সালের ১৪ই আগস্ট ব্রেখ্ট প্রয়াত হন।