আর্জেন্টিনা দলের দায়িত্ব নেওয়ার পর গোটা দলকেই বদলে দিয়েছেন লিওনেল স্কালোনি। কাতারে লিওনেল মেসিদের বিশ্ব জয়ের পর তার বন্দনা যেন শেষ করা সম্ভব নয়। তার হাত ধরেই আর্জেন্টিনার ফুটবলের নব জাগরণ। কোপা আমেরিকার ফাইনালে ব্রাজিলকে হারানো। এরপর ৩৬ বছরের আক্ষেপ ঘুচাতে ফ্রান্সকে হারানো।
সবটুকুর কৃতিত্ব কেবল খেলোয়াড়দেরই নয়। ডাগ আউটে দাঁড়িয়ে দলকে খেলানোর পুরো কৃতিত্বটুকুও উঠবে আর্জেন্টিনার কোচ লিওনেল স্কালোনির কাঁধে। গোটা টুর্নামেন্ট জুড়ে ট্যাকটিক্যালি দুর্দান্ত ছিল আর্জেন্টিনা। আর যার মাথা থেকে সব কৌশল এসেছে তিনি স্কালোনি। গ্রুপ পর্বের বাঁচামরার লড়াইয়ে মেঙিকো কিংবা পোল্যান্ড। শেষ ষোলোতে অস্ট্রেলিয়া, কোয়ার্টার ফাইনালে নেদারল্যান্ডস অথবা সেমিফাইনালেই ক্রোয়েশিয়াক। কাউকেই পাত্তা দেয়নি আর্জেন্টিনা।
আবার ফাইনালে ফ্রান্সের বিপক্ষে শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচ জিতে বিশ্ব জয়। সবটুকুতেই মেসিরা যেমন মাঠে থেকে খেলেছেন। ডাগ আউটে দাঁড়িয়ে ঠিক ততটাই খেলেছেন লিওনেল স্কালোনি।
লুসাইল আইকনিক স্টেডিয়ামে ফাইনালের রাতটাই আইকনিক। ৩৬ মিনিটে দুই গোল করে ম্যাচের ৮০ মিনিট পর্যন্ত লিড ধরে রাখে আর্জেন্টিনা। তবে ৯৭ সেকেন্ডের ব্যবধানে কিলিয়ান এমবাপের জোড়া গোলে ম্যাচ ২-২ গোলে সমতায় ফিরল ফ্রান্স। শেষ ১০ মিনিটে আর কোনো দল কোনো গোল করতে না পারায় নির্ধারিত ৯০ মিনিট শেষ হয় ২-২ গোলের সমতায়। আর তাতেই ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে।
আর অতিরিক্ত সময়ের দ্বিতীয়ার্ধে লিওনেল মেসির দুর্দান্ত এক গোলে বিশ্বকাপ জয়ের এক ধাপ দূরে তখন আর্জেন্টিনা। তবে লুসাইলে তখনও নাটকের অনেক বাকি। ম্যাচের ১১৮তম মিনিটে পেনাল্টি থেকে এমবাপে হ্যাটট্রিক পূরণ করে আবারও ফ্রান্সকে ৩-৩ গোলে সমতায় ফেরান।
অতিরিক্ত সময়ের আর কেউ কোনো গোল করতে না পারায় ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। আর টাইব্রেকারে ফ্রান্সকে ৪-২ ব্যবধানে হারিয়ে বিশ্ব জয় আর্জেন্টিনার। ৩৬ বছরের আক্ষেপ ঘুচিয়ে লিওনেল স্কালোনি নিজেকে রাখলেন পাদ প্রদীপের আলোর বাইরেই। আজ তার দিন নয়। আজ দিন খেলোয়াড়দের। স্কালোনি বলেন, আমি গর্বিত। অন্যান্য দিনের তুলনায় আমি কম রোমাঞ্চিত। কারন আজ আমি মুক্ত। এই দলটি আমাকে কেবল গর্বিতই করেছে। এটা তাদের দিন। আমি সবাইকে বলতে চাই উপভোগ করো। কারণ এটা ঐতিহাসিক মুহূর্ত।