পাখি হলো প্রকৃতির সৌন্দর্য বর্ধক এক অপরূপ সৃষ্টি। সাম্প্রতিককালে সন্ধান পাওয়া গিয়েছে বিপন্নপ্রায় কিছুটা বড় আকারের ধূসর পাখি- যার নাম কাঠময়ূর। এটি বাহারি রঙের লেজের অন্তর্ভুক্ত। সাধারণত যেসব বনাঞ্চলে অধিক বৃষ্টি হয় অর্থাৎ চিরসবুজ, আর্দ্র ও ঘন বনাঞ্চলে এদের বসবাস। প্রাপ্তবয়স্ক হলে পুরুষ ও স্ত্রী কাঠময়ূর হিসেবে এদেরকে আলাদাভাবে চিহ্নিত করা যায়। এদের কণ্ঠস্বর বিভিন্ন পরিস্থিতিতে বিভিন্ন রকমের হয়। সচরাচর এদের কণ্ঠস্বর মোরগের মতো দৃঢ়। কিন্তু ভয় পেলে এদের কণ্ঠস্বর অনেকটা তিতিরের মত হয়ে যায়। এরা জোড়া বেঁধে ঘুরতে পছন্দ করে। শত্রুর আক্রমণের আশঙ্কা দেখা দিলে এরা দ্রুত দৌড়াঁতে পারে, এমনকি বিনা শব্দে দৌঁড়িয়ে দ্রুত লুকিয়ে যেতে পারে। বিভিন্ন প্রকারের ফুল ও ফল এদের পছন্দের খাবার। এছাড়াও ছোট সাপ, গিরগিটি, কাঁকড়া, শামুক, বিভিন্ন ধরনের লতা-পাতা খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে। মার্চ-জুন মাসে এদের প্রজনন ঘটে। এদের আয়ুষ্কাল সাধারণত ২০ বছর পর্যন্ত হয়ে থাকে। মনোহর এই পাখিটি বর্তমানে বাংলাদেশে বিলুপ্তপ্রায় প্রাণীতে পরিণত হয়েছে। বিলুপ্তির পিছনে অন্যতম কারণ হিসেবে রয়েছে কিছু অসাধু পাখি ব্যবসায়ী, যারা খাঁচায় বন্দি করে পাখি চোরাচালান করে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সাম্প্রতিক সময়ে এসব পাখির দেখা পাওয়া দুষ্কর হয়ে পড়েছে। তবে, সিলেটের মৌলভীবাজার ও চট্টগ্রামের হাজারিখিল অভয়ারণ্যে আজও কিছু কাঠময়ূরের সন্ধান পাওয়া যায়। প্রকৃতির সৌন্দর্য রক্ষাকারী এসব পাখি বাঁচাতে সরকারের কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া উচিত এবং বিচিত্র এসব পাখি নিয়ে জনগণের মধ্যেও সচেতনতা গড়ে তোলা উচিত। লেখক: শিক্ষার্থী