বিমানবিহারী মজুমদার : বৈষ্ণব সাহিত্যের অন্যতম লেখক ও কবি

| শনিবার , ১৮ নভেম্বর, ২০২৩ at ৫:৪৪ পূর্বাহ্ণ

বিমানবিহারী মজুমদার (১৯০০১৯৬৯)। তিনি ছিলেন বিংশ শতকের প্রথমার্ধে একাধারে ইতিহাস ও অর্থনীতির পণ্ডিত অন্যদিকে বৈষ্ণব সাহিত্যের এক অন্যতম লেখক ও কবি। বিমানবিহারী মজুমদার ১৯০০ খ্রিস্টাব্দের ৭ জানুয়ারি জন্ম ব্রিটিশ ভারতের নদীয়া জেলার কুমারখালিতে। পিতার নাম শ্রীশচন্দ্র মজুমদার। ১৯২৩ খ্রিস্টাব্দে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে এম.এ পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণিতে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেন এবং পরে অর্থনীতিতেও এম.এ পাশ করেন। পাটনা’র বি.এন কলেজে ইতিহাস ও অর্থনীতির অধ্যাপনা দিয়ে তিনি তাঁর কর্মজীবন শুরু করেন। এখানে অধ্যাপনাকালে ঊনবিংশ শতকের রাজা রামমোহন রায়ের সময়কাল হতে দয়ানন্দের সময়কাল (১৮২১ ৮৪) পর্যন্ত সময়ে রাজনৈতিক চিন্তাধারার ইতিহাস ও তার সহায়ক গ্রন্থ রচনা করে ১৯৩২ খ্রিস্টাব্দে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেমচাঁদরায়চাঁদ বৃত্তি লাভ করেন। চৈতন্যচরিতের উপাদান’ গবেষণাগ্রন্থ বাংলায় রচনা করে ১৯৩৭ খ্রিস্টাব্দে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় হতে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। তার বাংলায় রচিত গবেষণাগ্রন্থ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে প্রথম এই সম্মান লাভ করে। কর্মজীবনে বিমানবিহারী ইতিহাস ও অর্থনীতিতে পাণ্ডিত্য এবং প্রতিষ্ঠা অর্জন করলেও বৈষ্ণব সাহিত্যের উপর মূল্যবান গ্রন্থ রচনা করেন এবং কালক্রমে বৈষ্ণব সমাজে শীর্ষ স্থানীয় শ্রদ্ধেয় ব্যক্তির স্থান অর্জন করেন এবং ‘ভাগবতরত্ন’ উপাধিতে ভূষিত হন। জীবনের বেশির ভাগ সময় পাটনাতেই অতিবাহিত করেন। ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দে বিহারের আরায় অবস্থিত হরপ্রসাদ দাস জৈন কলেজের অধ্যক্ষ হন। ১৯৫২ খ্রিস্টাব্দে বিহার বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজপরিদর্শক নিযুক্ত হন এবং ১৯৫৯ খ্রিস্টাব্দে অবসর নেন। বিমানবিহারী বৈষ্ণব সাহিত্য ছাড়া অন্যান্য বিষয়ের উপরও গ্রন্থ রচনা করেছেন। তাঁর রচনাবলীর মধ্যে ‘চৈতন্যচরিতের উপাদান’ (১৯৫৯), ‘চণ্ডীদাসের পদাবলী’ (১৯৬০), ‘ষোড়শ শতাব্দীর পদাবলী সাহিত্য’ (১৯৬১), ‘পাঁচশত বৎসরের পদাবলী’ (১৯৬১), ‘জ্ঞানদাস ও তাঁহার পদাবলী’ (১৩৮২ ব), ‘রবীন্দ্রসাহিত্যে পদাবলীর স্থান’ (১৯৬১) ‘গোবিন্দদাসের পদাবলী ও তাঁহার যুগ’ (১৯৬১) ‘ভারতের শাসন পদ্ধতি’ (১৯৬৩) উল্লেখযোগ্য। তিনি ১৯৬৯ খ্রিস্টাব্দের ১৮ নভেম্বর মৃত্যুবরণ করেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএই দিনে
পরবর্তী নিবন্ধমানুষ মানুষের জন্য