বিভিন্ন জায়গায় লোকজনের জটলা, বেড়েছে যানবাহন

পৃথক মামলায় ১৬৬ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে সোয়া লাখ টাকা জরিমানা

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ২৯ জুলাই, ২০২১ at ১০:২২ পূর্বাহ্ণ

সংক্রমণের ঝুঁকি, সরকারের নিষেধাজ্ঞা ও প্রশাসনের নজরদারি কিছুই মানছেন না লোকজন। তারা প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে বের হচ্ছেন রাস্তায়। সুযোগ পেলেই দিচ্ছেন আড্ডাও। কোভিড-১৯ রোধকল্পে চলমান কঠোর বিধিনিষেধের ষষ্ঠ দিনে গতকালও নগরের বিভিন্ন জায়গায় সাধারণ লোকজনের জটলা দেখা গেছে। সড়কে আগেরদিনের চেয়ে যানবাহনের সংখ্যাও ছিল বেশি। পৃথক মামলায় ১৬৬ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে সোয়া লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে গতকাল সকাল থেকে নগরীতে দিনভর ভারী বৃষ্টি হয়েছে। তলিয়ে যায় শহরের অনেক এলাকা। পানিবন্দী হয়ে পড়েন নিঁচু এলাকার বাসিন্দারা। ধারণা করা হয়েছিল, বিধিনিষেধে উপেক্ষা করে রাস্তায় বের হওয়া লোকজনের প্রতিবন্ধক হবে বৃষ্টি। যদিও বাস্তবতা ছিল ভিন্ন। শহরের প্রধান সড়কের বিভিন্ন মোড়ে দেখা গেছে নানা বয়সী লোক। অবশ্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জিজ্ঞেস করলে রাস্তায় বের হওয়ার নানা কারণ দেখিয়েছেন তারা। এছাড়া অলিগলিতেও মানুষের সরব উপস্থিতি দেখা গেছে। তবে আগের দিনের চেয়ে এ সংখ্যা ছিল কম।
এদিকে গতকাল শহরের বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা গেছে, বেড়েছে বিভিন্ন ধরনের যানবাহনের সংখ্যা। এর মধ্যে যথারীতি রিকশার ভিড় তো ছিলই। পাশাপাশি প্রচুর ব্যক্তিগত গাড়ি দেখা গেছে। বিভিন্ন জায়গায় সিএনজি চলতেও দেখা গেছে। এছাড়া মোটরসাইকেলের দাপটও ছিল অন্যদিনের চেয়ে বেশি। এমনকি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মোটর সাইকেলের অনেক চালককে রাইড শেয়ার করতে দেখা গেছে।
প্রসঙ্গত, কোভিড-১৯ বিস্তার রোধকল্পে গত ২৩ অক্টোবর সকাল ৬টা থেকে শুরু হয়েছে ১৪ দিনের বিধিনিষেধ। চলবে ৫ আগস্ট দিবাগত রাত ১২ টা পর্যন্ত। সরকারের দায়িত্বশীলদের ভাষায় ‘কঠোর লকডাউন’। এ লকডাউন কার্যকর করতে অন্যদিনের মত গতকালও কঠোর অবস্থানে ছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনী। মাঠে ছিল জেলা প্রশাসন, সিটি কর্পোরেশন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, বিজিবি ও সিএমপিসহ সংশ্লিষ্টরা। এর মধ্যে জেলা প্রশাসন, সিটি কর্পোরেশন ও বিআরটি’এর উদ্যোগে পরিচালিত পৃথক ভ্রাম্যমাণ আদালতের মামলায় ১৬৬ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে এক লাখ ২৮ হাজার ১৫০ টাকা জরিমানাও করা হয়েছে। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, অভিযানে সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে দোকানপাট ও শপিংমল খোলা রাখা, অপ্রয়োজনে রাস্তায় ঘুরাফেরা করা, ড্রাইভিং লাইসেন্স ব্যতীত রাস্তায় বের হাওয়াসহ বিভিন্ন অপরাধে জরিমানা করা হয়।
এর মধ্যে চকবাজার, বাকলিয়া ও কর্ণফুলী এলাকায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাঈমা ইসলাম সাতজনকে দুই হাজার টাকা জরিমানা করেন। এছাড়া আকবরশাহ, বায়েজিদ, হালিশহর ও পাহাড়তলী এলাকায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী ও জিসান বিন মাজেদ ১৮ জনকে মামলায় মোট সাড়ে আট হাজার টাকা, খুলশী, চাঁন্দগাও ও পাঁচলাইশ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফাহমিদা আফরোজ, মো. মাসুদ রানা ও আব্দুল্লাহ আল মামুন ২৬ জনকে ৪০ হাজার ৮০০ টাকা জরিমানা করেন। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ ইনামুল হাছান ও আশরাফুল হাসান হালিশহর, পাহাড়তলি এলাকায় ১৩ জনকে সাড়ে আট হাজার টাকা, ফিরিঙ্গীবাজার সদরঘাট ও ডবলমুরিং এলাকায় নিবার্হী ম্যাজিস্ট্রেট এহসান মুরাদ, মাসুমা জান্নাত ও সোনিয়া হক ৩৮ মামলায় ১০ হাজার ৭০০টাকা জরিমানা করেন। বন্দর, পতেঙ্গা ও ইপিজেড এলাকায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিমাদ্রি খীসা, পিযুষ কুমার চৌধুরী ও প্লাবন কুমার বিশ্বাস ২৭ জনকে ২৬ হাজার ৮৫০ টাকা জরিমানা করেন। নতুনব্রীজ, মইজ্জারটেক এলাকায় বিআরটিএ এর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শান্তনু কুমার দাস ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শাহারিয়ার মুক্তার ১৬ মামলায় ২২ হাজার ৭০০ টাকা জরিমানা করেন।
এদিকে গতকাল সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা গেছে, বিকেলে বৃষ্টি এবং পানির মধ্যেও দুই নম্বর গেইট এলাকায় প্রচুর লোকজন ছিল। এদের অনেকের মুখে ছিল না মাস্ক। প্রাইভেট কার, ট্রাক, মোটরসাইকেল ও সিএনজির কারণে সেখানে হালকা জ্যামও দেখা গেছে। মুরাদপুরে বিভিন্ন দোকানপাট খোলা দেখা গেছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধহ্যাক হয়নি সুরক্ষা অ্যাপ, জিডি প্রত্যাহার
পরবর্তী নিবন্ধচীন, ভিয়েতনাম ও ভারতের চেয়ে পিছিয়ে বাংলাদেশ