রিজার্ভ চুরির ঘটনায় ফিলিপিন্সের রিজল ব্যাংকসহ আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে যে মামলা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক, সেই মামলায় আদালতের বাইরে সমঝোতার জন্য বিবাদীদের সুযোগ দিয়েছে নিউ ইয়র্ক সুপ্রিম কোর্ট। গত ১৩ জানুয়ারি নিউ ইয়র্কের আদালতের এই আদেশ আসে। তার অনুলিপি হাতে পাওয়ার পরদিন গতকাল সোমবার এই তথ্য জানান বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মেজবাউল হক। এই মামলা বাতিলে যে আবেদন করেছিল রিজল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশন (আরসিবিসি), তা খারিজ করে সমঝোতার আদেশ হয়েছে। এজন্য বিবাদীদের সময় দেওয়া হয়েছে ২০ কার্যদিবস। খবর বিডিনিউজের।
মেজবাউল সাংবাদিকদের বলেন, নিউ ইয়র্ক স্টেট কোর্ট আরসিবিসি ও অন্যান্য বিবাদীদের ২০ দিন বা আগামী ২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে জবাব দাখিল করতে আদেশ দিয়েছে। একইসাথে মধ্যস্ততার নির্দেশনা প্রদান করেছে। নিউ ইয়র্কে নিয়োজিত বাংলাদেশ ব্যাংকের আইনি প্রতিষ্ঠান মধ্যস্ততার বিষয়টি পর্যালোচনা করবে বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের পক্ষে এই মামলা পরিচালনার দায়িত্ব যুক্তরাষ্ট্রের ল ফার্ম কোজেন ও’কনরকে দেয় বলে আগে জানিয়েছিল। রিজার্ভ থেকে চুরি যাওয়া ৮ কোটি ১০ লাখের মধ্যে ৬ কোটি ৬৪ লাখ ডলার উদ্ধারে ২০২০ সালে এ মামলা করেছিল বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক। রিজল ব্যাংক ছাড়াও এ মামলায় সোলারি রিসোর্ট অ্যান্ড ক্যাসিনো ও ম্যানিলা বে পরিচালনাকারী ব্লুমবেরি রিসোর্ট কর্পসহ ২০টি প্রতিষ্ঠানকে দায়ী করা হয়।
২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে সুইফট সিস্টেমে ভুয়া বার্তা পাঠিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউ ইয়র্কে (ফেড) রাখা বাংলাদেশ ব্যাংকের ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার সরিয়ে নেওয়া হয় রিজল ব্যাংকে। ওই অর্থ স্থানীয় মুদ্রা পেসোর আকারে চলে যায় তিনটি ক্যাসিনোতে। এর মধ্যে একটি ক্যাসিনোর মালিকের কাছ থেকে দেড় কোটি ডলার উদ্ধার করে ফিলিপিন্স সরকার বাংলাদেশ সরকারকে বুঝিয়ে দিলেও বাকি ৬ কোটি ৬৪ লাখ ডলার আর পাওয়া যায়নি। তার তিন বছর পর ২০১৯ সালে ওই অর্থ উদ্ধারের আশায় নিউ ইয়র্কের ম্যানহাটন সাদার্ন ডিস্ট্রিক্ট কোর্টে একটি মামলা করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ওই মামলা খারিজে আবেদন করে আরসিবিসি। গত এপ্রিলে নিউ ইয়র্কের আদালতে আরসিবিসির বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ব্যাংকের মামলাটি খারিজ করে দেয়। রায়ে বলা হয়েছিল, ওই মামলা বিচারের ‘পর্যাপ্ত এখতিয়ার’ ওই আদালতের নেই। এরপর বাংলাদেশ বাংকের পক্ষ থেকে নিউ ইয়র্কের ‘এখতিয়ারভুক্ত’ আদালতে মামলা করা হয় বলে জানান মেজবাউর। তা আটকাতে রিজল ব্যাংকের আবেদন খারিজ হওয়ায় এখন আর মামলা চলতে বাধা থাকল না।