বিপ্লবতীর্থ চট্টগ্রামের উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিকতা

| রবিবার , ৪ ডিসেম্বর, ২০২২ at ৬:১১ পূর্বাহ্ণ

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, চট্টগ্রামে আপনাকে স্বাগত জানাচ্ছি। আপনার আগমন উপলক্ষ্যে চট্টগ্রাম সেজেছে অপূর্ব সাজে। কয়েক দিন ধরে চলছিল সাজ সাজ রব। ‘৪ ডিসেম্বর বিকেলবেলা,পলোগ্রাউন্ডে জমবে মেলা’, ‘প্রধানমন্ত্রীর জনসভায়, চাটগাঁবাসী আয় ছুটে আয়’ ইত্যাদি স্লোগানে মুখর হয়ে উঠেছিল চারদিকে। পত্রিকাগুলোতে প্রতিবেদন বেরোয় এভাবে : ‘রঙের আঁচড়ে বিবর্ণতা দূর করে নবরূপ পেতে চলেছে নগরী। স্থাপত্যে জমে থাকা ময়লা পরিষ্কার করতে কাজ করছে চট্টগ্রামের বিভিন্ন সেবা সংস্থা। সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে ভাঙা ডিভাইডারগুলো মেরামত করে রং করা হচ্ছে।

আগ্রাবাদ বারিক বিল্ডিং থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত চলাচলের অনুপযোগী হয়ে ওঠা সড়কে চলছে জরুরি মেরামত। আগে রাতে সড়ক সংস্কার করা হতো। গত কয়েক দিন ধরে দিনে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করে কাজ চলছে। ফুটপাত, সড়কদ্বীপ, ফ্লাইওভারে পড়ছে রঙের ছোঁয়া। প্রধানমন্ত্রীর আগমন আনন্দঘন করতে রাস্তাঘাট ও স্থাপত্যগুলোকে প্রাণ দিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভার থেকে এমএ মান্নান ফ্লাইওভারের মাঝের অংশটির ল্যাম্পপোস্টে ৭০-এর নির্বাচনে বিজয় ও স্বাধীনতার প্রতীক নৌকার আকৃতিতে এলইডি বাতি লাগিয়ে আলোকসজ্জা করেছে চসিকের বিদ্যুৎ বিভাগ।’ বলা যায়, নগরীকে পরিপাটি করে সাজানো হয়েছে। জনসভার প্রবেশ পথ সুগম ও মসৃণ করে তোলা হয়েছে। আমাদের ভালো লাগাটা পূর্ণতা পায়, যখন প্রত্যক্ষ করি পরিচ্ছন্ন একটা নগরী। চাইলে যে এ শহরকে সুন্দর, পরিচ্ছন্ন ও ঝকঝকে রাখা যায়, তা আবারও প্রমাণিত হলো। মাঝে মাঝে মনে হয়, প্রধানমন্ত্রী যদি প্রতিমাসে আমাদের শহরে আসতেন, তাহলে শহরটা এমনই সুন্দরভাবে পরিচ্ছন্ন থাকতো।

আমরা আরো সৌভাগ্যবান, আমাদের চট্টগ্রামের জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রাণ পোড়ে । মাত্র কয়েকদিন আগে তিনি বলেছেন, আমার মন পড়ে থাকে চট্টগ্রামে। কী আনন্দই না আমরা পেলাম! তিনি বললেন, চট্টগ্রাম একসময় অবহেলিত ছিল। আমরা ক্ষমতায় আসার পর ব্যাপক কাজ করেছি। টানেল স্থাপনের ফলে চট্টগ্রামের গুরুত্ব আরও বেড়ে যাবে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চট্টগ্রামের উন্নয়ন মানে সারাদেশের উন্নয়ন। চট্টগ্রামের উন্নয়নের জন্য সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী এ ব্যাপারে আন্তরিক। কিভাবে চট্টগ্রামের আরও উন্নয়ন করা যায়, তা নিয়ে নতুন করে তিনি ভাবছেন। অস্বীকার করার উপায় নেই যে, চট্টগ্রামের উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী যেসব প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছেন তাতে আন্তর্জাতিকভাবে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বলসহ সারাদেশের অর্থনৈতিক কার্যক্রম আরো গতিশীল হবে।
এদেশের প্রথম নদীর তলদেশ দিয়ে একটি টানেল নির্মিত হলো। বিশেষজ্ঞরা বলেন, ‘ইতিহাসের সাথে চট্টগ্রাম দুভাগে যুক্ত হয়ে থাকলো। প্রথমত কিংবদন্তীর কর্ণফুলী নদীর অভ্যন্তরে এই বিস্ময়কর স্থাপনা নির্মিত হলো। দ্বিতীয়ত বঙ্গবন্ধুর নামে এই টানেল পরিচিত হবে। চট্টগ্রামের জন্য এর চেয়ে গৌরবের আর কিছু হতে পারে না।

দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম টানেলটি বাংলাদেশের গর্ব, মর্যাদা এবং একটি মেগা কাঠামো সম্পন্ন করার সক্ষমতার প্রতিফলন ঘটাবে। টানেলের কারণে সড়ক নেটওয়ার্কে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে। এতে চট্টগ্রামের দক্ষিণাঞ্চলের অর্থনীতির চাকায় গতি সঞ্চারিত হবে এবং জীবনযাত্রার মান ও কর্মসংস্থান বাড়বে। দীর্ঘমেয়াদে অর্থনীতির উন্নয়নে এই টানেল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’ এই উন্নয়নের ধারায় দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা আশা করতে পারি, কোনো অপশক্তি উন্নয়নের ধারাকে নস্যাৎ করতে পারবে না।

বিপ্লবতীর্থ চট্টগ্রাম সবকিছুতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে ইতিহাসের অংশ হয়েছে। মহান মুক্তিযুদ্ধে চট্টগ্রামের গৌরবময় ভূমিকা রয়েছে। স্মরণ করা যেতে পারে, পাকিস্তান কারাগার থেকে বঙ্গবন্ধু মুক্ত হয়ে ফিরে এসে এই ঐতিহাসিক পলোগ্রাউন্ডে এক বিশাল জনসমুদ্রে চট্টগ্রামবাসীকে সম্ভাষণ জানাতে এসেছিলেন। তারই সুযোগ্য কন্যা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঐতিহাসিক বিজয় দিবসকে সামনে রেখে আগামী জাতীয় নির্বাচন প্রস্তুতির দিকনির্দেশনা দেবেন আজকের জনসভায়। আমরা প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাতে চাই, চট্টগ্রামকে অন্তরে রাখার জন্য। চট্টগ্রামের যাবতীয় উন্নয়নের জন্য আপনি প্রশংসার দাবিদার। আপনার হাতেই আমাদের উন্নয়নের চাবি। এই জনসভা থেকে আপনার কণ্ঠ শুনবে চট্টগ্রামবাসী। শুনবে আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা। আমরা কায়মনোবাক্যে আপনার সাফল্য চাই।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ৭৮৬
পরবর্তী নিবন্ধএই দিনে