‘বিপর্যয়’ থেকে বাঁচাতে কমিটি

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১ at ৫:৪৭ পূর্বাহ্ণ

২০ হাজার কোটি টাকার টানেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ও আউটার রিং রোডের সংযোগস্থলকে ‘বিপর্যয়’ থেকে বাঁচাতে পুলিশ কমিশনারকে প্রধান করে ১১ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। পতেঙ্গা এলাকায় তিনটি বড় প্রকল্পের ডিজাইন পরিবর্তন করে বৈজ্ঞানিকভাবে স্বীকৃত একটি ইন্টার-সেকশন ডিজাইন তৈরিতে এই কমিটি গঠন করা হয়।
সেতু মন্ত্রণালয়ের সচিবের পরামর্শে এই ডিজাইন পরিবর্তনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পতেঙ্গা এলাকার ইন্টার-সেকশন ডিজাইন তৈরি করতে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থার সাথে অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোর বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলীদের কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় গঠিত এই কমিটি আগামীকাল মঙ্গলবার প্রথম বৈঠকে বসছে।
চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানায়, আগামী বছর টানেল চালু হওয়ার সাথে সাথে পতেঙ্গা এলাকায় যানবাহন চলাচল ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাবে। শুধু টানেল হয়ে বছরে এক কোটি চল্লিশ লাখ গাড়ি চলাচল করবে। পাশাপাশি এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ও আউটার রিং রোড ধরেও চলাচল করবে বিপুল সংখ্যক গাড়ি। এর সাথে যোগ হবে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতসহ স্থানীয়ভাবে গড়ে ওঠা পর্যটনের সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসা দর্শনার্থীদের গাড়ি।
কর্ণফুলীর তলদেশে নির্মিত বঙ্গবন্ধু টানেল চালু হলে এটি দর্শনীয় স্থান হয়ে উঠবে। এতে করে পর্যটন এলাকা হিসেবে বর্তমানে পতেঙ্গায় যে পরিমাণ মানুষের আনাগোনা, আগামী বছর থেকে তা বেড়ে যাবে। এই বিপুল সংখ্যক মানুষের চলাচল যদি বৈজ্ঞানিকভাবে নিয়ন্ত্রিত এবং পরিচালিত না হয় তাহলে বিপর্যয় দেখা দেবে। বিপুল সংখ্যক গাড়ির জটলায় পুরো এলাকার যান চলাচলে স্থবিরতার পাশাপাশি দুর্ঘটনাস্থল হিসেবেও স্থানটি দেখা দিতে পারে।
সম্প্রতি সেতু মন্ত্রণালয়ের সচিব পতেঙ্গা এলাকা পরিদর্শন করতে এসে বিষয়টির প্রতি সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তিনটি সড়কের বহুমুখী গাড়ির যানবাহনের বাড়তি চাপের বিষয়টি মাথায় রেখে ডিজাইন প্রণয়নের পরামর্শ দেন তিনি। কারণ এই মোড়ের ইন্টার-সেকশন যান চলাচলের ওপর ২০ হাজার কোটিরও বেশি টাকার তিন প্রকল্পের সুফল নির্ভর করবে। এই মোড় দিয়ে যথাযথ গতি নিয়ে যান চলাচল করতে না পারলে টানেল, এলিভেটেড এঙপ্রেসওয়ে ও আউটার রিং রোড প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্দেশ্য ভেস্তে যাবে। পতেঙ্গা এলাকায় এমন একটি ডিজাইন করতে হবে যাতে কোনো রাস্তার গাড়ি অন্য রাস্তার গাড়িকে ডিসটার্ব না করে। এক রাস্তা থেকে যাতে সহজে অন্য রাস্তায় যেতে পারে। আবার প্রতিটি রাস্তায় যাতে আন্তঃসংযোগ থাকে। ইন্টার-সেকশন এই ডিজাইনটি প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার আগে সম্পন্ন করতে সেতু সচিবের পক্ষ থেকে তাগাদা দেওয়া হয়েছিল।
বিষয়টি মাথায় রেখে ডিজাইন প্রণয়নের জন্য সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় নগর পুলিশ কমিশনারকে প্রধান করে ১১ সদস্যের কমিটি গঠন করে। এতে সিএমপি কমিশনারকে সভাপতি এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল প্রকল্পের উপ-প্রকল্প পরিচালককে (কারিগরি) সদস্য সচিব করে কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিতে নৌবাহিনী, সিডিএ, সিটি কর্পোরেশন, চট্টগ্রামের সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক জোন কর্তৃপক্ষ (বেজা), পানি উন্নয়ন রোর্ড, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রতিনিধিকে সদস্য করা হয়েছে। এই কমিটি প্রয়োজনে অন্য বিশেষজ্ঞদের কোঅপ্ট করতে পারবে বলে সড়ক যোগাযোগ ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপসচিব রহিমা আকতার স্বাক্ষরিত পত্রে বলা হয়। এই কমিটি আগামীকাল সকালে সিএমপি কমিশনারের কার্যালয়ে প্রথম বৈঠকে বসছে। সিডিএর চিফ ইঞ্জিনিয়ার কাজী হাসান বিন শামস বলেন, পুলিশ কমিশনার মহোদয়কে প্রধান করে মন্ত্রণালয় থেকে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। আমরা বসে পতেঙ্গার তিন প্রকল্পের সংযোগস্থলের ইন্টার-সেকশন ডিজাইন তৈরিতে কাজ করব; যাতে যান চলাচলের ক্ষেত্রে কোনো প্রতিবন্ধকতা তৈরি না হয়। আগেভাগে এই ধরনের উদ্যোগ নেওয়ায় ভালো হয়েছে। অন্যথায় পরবর্তীতে সংকট আরো প্রকট হত। ইন্টার-সেকশন ডিজাইন প্রণয়ন করা হলে সিডিএ তা বাস্তবায়ন করবে বলে জানান তিনি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপ্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনে ৮০ লাখ ডোজ টিকা দেওয়া হবে কাল
পরবর্তী নিবন্ধদুজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা