‘বিনা শুল্কে চীনে যাবে সব পোশাক পণ্য’

| শনিবার , ২০ আগস্ট, ২০২২ at ৬:৫৬ পূর্বাহ্ণ

বাংলাদেশকে দেওয়া আরও ১ শতাংশ শুল্কমুক্ত পণ্যের তালিকায় সব ধরনের তৈরি পোশাক অন্তর্ভুক্ত থাকছে বলে জানিয়েছেন ঢাকায় দেশটির রাষ্ট্রদূত লি জিমিং। এক লিখিত সাক্ষাৎকারে এ তথ্য জানিয়ে তিনি বলেন, নতুন করে ১ শতাংশসহ ৯৮ শতাংশ পণ্যে দেওয়া শুল্ক সুবিধার মধ্যে সব ধরনের পোশাক পণ্য রয়েছে। খবর বিডিনিউজের।
চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই এর দুদিনের ঢাকা সফরের সময় ৭ আগস্ট বাংলাদেশ থেকে আরও ১ শতাংশ পণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশের সুযোগ দেওয়ার ঘোষণা আসে; যে সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে ১ সেপ্টেম্বর থেকে। এর আগে ২০২০ সালের ১ সেপ্টেম্বর থেকে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশটির দেওয়া আগের শুল্কমুক্ত সুবিধার তালিকায় তৈরি পোশাক খাতের নিট ও ওভেনের প্রায় সব পণ্য অর্ন্তভুক্ত করা হয়েছিল। তবে তখনও বাংলাদেশের প্রধান এ রপ্তানি পণ্যের কিছু আইটেমে চীন পুরো শুল্ক তুলে দেয়নি।
সাক্ষাৎকারে রাষ্ট্রদূত জিমিং জানিয়েছেন, নতুন ১ শতাংশের আওতায় এবার তৈরি পোশাকের সব পণ্য বিনা শুল্কের সুবিধা পাবে। আর তালিকায় আরও থাকছে বাদাম তেল, সূর্যমুখী তেল ও কটন সিড অয়েল, পলিইথিলিন ও পলিপ্রোপিলিনের মত রাসায়নিক ও জুতাসহ বিভিন্ন পণ্য বলে তিনি উল্লেখ করেন।
এর আগে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশের ৯৭ ভাগ পণ্যকে নিজেদের বাজারে শুল্কমুক্ত প্রবেশের সুযোগ দেয় চীন। এ সুবিধার আওতায় তখন ৮ হাজার ২৫৬ পণ্যকে বিনা শুল্কে প্রবেশাধিকার দেওয়া হয়। চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরে আরও ১ ভাগ পণ্যকে শুল্কমুক্ত প্রবেশের সিদ্ধান্তকে সেই সময় ‘সুসংবাদ’ হিসেবে বর্ণনা করেছিলেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। ওই সময় তিনিও আভাস দিয়েছিলেন, তৈরি পোশাকের সব পণ্য এবার নতুন শুল্কমুক্ত প্রবেশের সুযোগ পাওয়া পণ্যের মধ্যে থাকতে পারে।
বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্যের সবচেয়ে বড় খাত তৈরি পোশাক। বিশ্বে পোশাকের দ্বিতীয় বৃহত্তম রপ্তানিকারকও বাংলাদেশ। ২০২১-২২ অর্থবছরে মোট রপ্তানিতে ৮১ দশমিক ৮১ শতাংশই ছিল তৈরি পোশাক; যা টাকার অঙ্কে ৪২ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলার। ওই সময়ে মোট পণ্য রপ্তানি হয়েছিল ৫২ বিলিয়ন ডলার।
চীনের আগের দেওয়া ৯৭% শুল্কমুক্ত সুবিধার উপর ভর করে ২০২১ সালে বাংলাদেশ থেকে দেশটিতে পণ্য রপ্তানি প্রথমবারের মত এক বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছিল বলে জানান রাষ্ট্রদূত জিমিং। আগের বছরের তুলনায় যা প্রায় ৪০ শতাংশ বেশি। চীনে যাওয়া এসব পণ্যের ৬০ শতাংশের বেশি পোশাক বলে বাংলাদেশের পরিসংখ্যানের বরাত দিয়ে জানান তিনি। পোশাকের বাইরে অন্য পণ্যের শুল্কমুক্ত সুবিধার বিষয়ে ঢাকায় নিযুক্ত চীনের এই রাষ্ট্রদূত জানান, বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের কথা বিবেচনায় নিয়ে ৯৮ ভাগ শূন্য শুল্ক সুবিধায় বিভিন্ন ধরনের মৌলিক চামড়াজাত পণ্য অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বাংলাদেশি চামড়া শিল্পের রপ্তানিকারকদের জন্য যা ভালো খবর। নতুন সুবিধার আওতায় বাংলাদেশ থেকে আম, কাঁঠাল, পেয়ারা, মধু ও গরুর মাংসও চীনের বাজারে বিনা শুল্কে প্রবেশের সুযোগ পাবে বলে জানান রাষ্ট্রদূত।
তিনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, ৯৮% শুল্কমুক্ত সুবিধা চীনে বাংলাদেশি পণ্যের রপ্তানি বাড়ানো, রপ্তানি পণ্যের বহুমুখীকরণ এবং টেকসই উন্নয়নের ক্ষেত্রে অর্জনকে আরও সমৃদ্ধ করতে পারবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআইইডিসিআরের টিম চট্টগ্রামে, নমুনা সংগ্রহে মাঠে নামছে আজ
পরবর্তী নিবন্ধকক্সবাজার ও কুতুবদিয়ায় ফিশিং ট্রলার ডুবি