প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিদ্যুৎ ও গ্যাসের ভর্তুকি থেকে ধীরে ধীরে সরে আসার নির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। তিনি বলেছেন, মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে বিদ্যুতের একটি প্রকল্প নিয়ে আলোচনার সময় প্রধানমন্ত্রী এ নির্দেশনা দেন। রাজধানীর শেরে বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে এ বৈঠক হয়। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী। খবর বিডিনিউজের।
একনেক বৈঠক পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, বৈঠকে বিদ্যুতের একটি প্রকল্প নিয়ে কথা হচ্ছিল। তখন মিটারিংয়ে বিদ্যুতের মূল্য, বিদ্যুতের কস্ট, বিদ্যুতের নানা ব্যবহার নিয়ে অনেক কথাবার্তা হচ্ছিল। তখনই এই কথাটা এসেছে, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ভর্তুকি আর কত? ভর্তুকি থেকে আমাদেরকে সরে আসতে হবে। ভর্তুকি ন্যায়সঙ্গত নয়। ভর্তুকি কোনো খয়রাতিও নয়। তবে একবারে ভর্তুকি তুলে নিলে যে গ্রাহকের চাপ হবে, সেটা স্বীকার করে মন্ত্রী বলেন, কোনো না কোনো ব্যক্তি পাচ্ছে, আর কোনো না কোনো ব্যক্তি দিচ্ছে- এটা অবশ্যম্ভাবী সত্য। তাই ভর্তুকি থেকে সরে আসা দরকার। ধীরে ধীরে পর্যায়ক্রমে। একবারে করলে তো পড়ে যাব। এটা থেকে আমাদের ধীরে ধীরে বেরিয়ে আসার পথ খুঁজে বের করতে হবে। ভর্তুকি ইজ আ ভেরি সিরিয়াস ম্যাটার। উই মাস্ট গেট আউট অব দিস সিস্টেম।
তবে খাদ্য নিরাপত্তার জন্য কৃষিখাতের ভর্তুকি রাখার কথা জানিয়ে এম এ মান্নান বলেন, খাদ্যে ভর্তুকি দেওয়া এক বিষয়, আর আমার ঘরের এসি চালানোর জন্য বিদ্যুতে ভর্তুকি দেওয়া ভিন্ন বিষয়। পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক ড. শামসুল আলম সংবাদ সম্মেলনে বলেন, কৃষি ভর্তুকি কিন্তু অব্যাহত থাকবে। এটা বিনিয়োগ হিসেবে দেখি আমরা।
প্রধানমন্ত্রী বিদ্যুতের একটি প্রকল্প নিয়ে আলোচনার সময় বলেছেন, গ্যাস শুধু দরিদ্ররাই ব্যবহার করে না। শিল্প কারখানায় অনেক গ্যাস ব্যবহার হয়। আর বিদ্যুৎ দিয়ে এসি চালান। (ভর্তুকি) যেহেতু অনেক ব্যয়বহুল, তাই ক্রমান্বয়ে এটি কমিয়ে আনতে হবে। তবে কৃষিরটা অব্যাহত রাখা হবে।
ভর্তুকি সবার জন্য ন্যায়সঙ্গত নয়- এমন মন্তব্য করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বস্তিবাসী, কৃষক, দরিদ্র শ্রেণি- তাদেরকে ভর্তুকি দেওয়া হবে। আর যারা গুলশানে থাকে, তাদের সাথে তো দরিদ্র শ্রেণি এক নয়। সুতরাং গ্যাস এবং বিদ্যুতে যেখানে উৎপাদন আছে, সেখান থেকে কমিয়ে (ভর্তুকি) আনা হবে।
একনেক সভায় প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া কিছু অনুশাসনের কথা তুলে ধরে মান্নান বলেন, প্রধানমন্ত্রী হাসপাতালগুলোতে আধুনিক মেশিন ও যন্ত্রপাতি ভালভাবে পরিচালনার স্বার্থে প্রয়োজনীয় জনবল প্রস্তুত রাখতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ প্রদান করেছেন। যেসব জেলায় এই মুহূর্তে নভোথিয়েটার নেই, সেসব জেলায় একটি বড় প্রকল্পের আওতায় নভোথিয়েটার স্থাপনের জন্য প্রধানমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ প্রদান করেন। তিনি নভোথিয়েটারের কার্যক্রম তত্ত্বাবধানের জন্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অধীনে একটি পৃথক সংস্থা গঠনেরও পরামর্শ দেন।