বিদ্যুতের দাম বাড়ল ৫%

কাযকর জানুয়ারি থেকেই প্রতিমাসে একটা সমন্বয়ে যাব : প্রতিমন্ত্রী

| শুক্রবার , ১৩ জানুয়ারি, ২০২৩ at ৯:২৫ পূর্বাহ্ণ

দুই বছর পর খুচরা পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম গড়ে ৫ শতাংশ বাড়িয়েছে সরকার; এতে ইউনিটপ্রতি দাম বাড়বে ৩৫ পয়সা। নতুন এ দর জানুয়ারি থেকে কার্যকর করার ঘোষণাও দেওয়া হয়েছে প্রজ্ঞাপনে। এতে খুচরায় গ্রাহক পর্যায়ে গড়ে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম ভারিত গড়ে দাঁড়াবে ৭ টাকা ৪৮ পয়সা। গতকাল বৃহস্পতিবার বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ গণমাধ্যমকে গড়ে ৫ শতাংশ হারে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর কথা জানিয়েছেন। এদিন এক প্রজ্ঞাপনে বিদ্যুতের নতুন দর বিভিন্ন গ্রাহক শ্রেণি অনুযায়ী বাড়ানো হয়। খবর বিডিনিউজের।

জ্বালানি খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিইআরসি গত ৮ জানুয়ারি গ্রাহক পর্যায়ে দাম বাড়াতে গণশুনানি করলেও এবার দাম বাড়ানো হয়েছে সরকারের নির্বাহী আদেশে। পাইকারিতে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর ঘোষণার এক মাসের মধ্যে খুচরায় গ্রাহক পর্যায়ে দাম বাড়ানোর ঘোষণা এল। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিইআরসির কারিগরি কমিটি বিতরণ কোম্পানিগুলোর দাম বাড়ানোর আবেদনের ভিত্তিতে ১৫ দশমিক ৪৩ শতাংশ বা ইউনিটপ্রতি এক টাকা ২১ পয়সা বাড়ানোর সুপারিশ করলেও সরকার ভারিত গড়ে দাম বাড়ালো ৩৫ পয়সা বা ৫ শতাংশ।

নতুন দর অনুযায়ী সাধারণ গ্রাহক পর্যায়ে (খুচরা) প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম আগের ভারিত গড় ৭ টাকা ১৩ পয়সা থেকে বাড়িয়ে করা হয়েছে ৭ টাকা ৪৮ পয়সা। এতদিন গণশুনানির পর বিইআরসি বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে আসলেও সরকার নিজেই দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়। এজন্য আইন সংশোধন করে অধ্যাদেশ জারি করা হয়।

দাম বাড়ানোর নতুন প্রজ্ঞাপনের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, বিদ্যুতে লাইফ লাইনে বা সর্বনিম্ন রেটের যারা আছেন তাদের ক্ষেত্রে ১৯ পয়সা মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে। আর সার্বিকভাবে গড়ে ৫ শতাংশ বেড়েছে। বিইআরসি শুনানি করে ১৫ শতাংশ মূল্যবৃদ্ধির সুপারিশ করেছিল। আমি মনে করি ১৫ শতাংশ খুব বেশি হয়ে যায়। এটা খুবই সামান্য মূল্যবৃদ্ধি।

হয়ত দেখা যাবে লাইফ লাইন গ্রাহকদেরকে বছর শেষে অতিরিক্ত ৮০ টাকা বেশি দিতে হচ্ছে, যোগ করেন তিনি। এ প্রজ্ঞাপনের ফলে গত ৮ জানুয়ারি বিইআরসি শুনানি করে বিদ্যুতের মূল্য পরিবর্তনের উদ্যোগ নিলেও সেটি কার্যত অপ্রয়োজনীয় হয়ে গেল।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা প্রতিমাসে একটা সমন্বয়ে যাব, পাশের দেশ যেভাবে করছে। এনার্জি প্রাইসের ওপর ভিত্তি করে কাজটি করা হবে। এলপিজির দাম এখন যেভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে সেভাবেই আমরা করার চেষ্টা করব। এর আগে ভর্তুকির ভার কমাতে ২০২২ সালের গত ২১ নভেম্বর পাইকারিতে বিদ্যুতের দাম ১৯ দশমিক ৯২ শতাংশ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত দেয় বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)।

এর ফলে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থাগুলোর কাছে বিক্রি করছে ৬ টাকা ২০ পয়সা, যা আগে ৫ টাকা ১৭ পয়সা ছিল। সবশেষ খুচরায় বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছিল দুই বছর আগে ২০২০ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি। গণশুনানির প্রক্রিয়া পেরিয়ে তখন সংবাদ সম্মেলনে বিইআরসি বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছিল। সেবারও দুই বছরের বেশি সময় পর বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছিল।

সেসময় একইসঙ্গে পাইকারি, খুচরা ও সঞ্চালন- তিন ক্ষেত্রেই দাম বাড়িয়েছিল সরকার। তখন পাইকারিতে দাম ৮ দশমিক ৪ শতাংশ বাড়ানোর পাশাপাশি সাধারণ গ্রাহক পর্যায়ে (খুচরা) বাড়ানো হয় ৫ দশমিক ৩ শতাংশ। এতে খুচরায় প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম গড়ে ৩৬ পয়সা বেড়ে ৭ টাকা ১৩ পয়সা হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধটেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রীর ছয় প্রস্তাব
পরবর্তী নিবন্ধকক্সবাজার উপকূলে বাড়ছে ডলফিনের বিচরণ