বিদেশি ঋণ ঝুঁকি সীমার নিচে : প্রধানমন্ত্রী

উন্নয়ন কাজ থামিয়ে হলেও সারে ভর্তুকির নির্দেশ

| বুধবার , ১৩ এপ্রিল, ২০২২ at ৬:৪০ পূর্বাহ্ণ

বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ এখনো ঝুঁকি সীমার অনেক নিচে রয়েছে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ ধারা অব্যাহত রাখতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, গতকাল মঙ্গলবার সকালে গণভবনে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও অর্থ বিভাগ কর্তৃক ‘শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক সংকটের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের সামস্টিক অর্থনীতি পর্যালোচনা’ শীর্ষক উপস্থাপনা অবলোকন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় শ্রীলঙ্কার চলমান সংকটের কারণ ও এর প্রতিক্রিয়া নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের অর্থনীতির বিভিন্ন সূচক পর্যালোচনা করে দেখা হয়। খবর বাংলা/বিডিনিউজের।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং জানায়, বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ এখনো ঝুঁকি সীমার অনেক নিচে রয়েছে এবং এ ধারা সামনের সময়ে অব্যাহত রাখতে সংশ্লিষ্ট সকলকে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দেন। বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, অর্থনীতির বিভিন্ন সূচক বিশ্লেষণ করে দেখা যায় যে, মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদে বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের বড় কোনো ঝুঁকির আশঙ্কা নেই। প্রায় সকল সূচকেই বাংলাদেশের অর্থনীতি তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল অবস্থায় আছে বলে মত প্রকাশ করা হয়। তবে, আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি, খাদ্যপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে ইমপোর্টেড ইনফ্লেশন হিসেবে সৃষ্ট অভ্যন্তরীণ বাজারে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ রাখতে একটি সমন্বিত রাজস্বনীতি ও মুদ্রানীতি বাস্তবায়নের ওপর জোর দেওয়া হয়। সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব ড. আহমদ কায়কাউস , বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর ফজলে কবির প্রমুখ।
উন্নয়ন কাজ থামিয়ে হলেও সারে ভর্তুকির নির্দেশ: এদিকে বিশ্ববাজারে সারের দাম অব্যাহতভাবে বাড়লেও কৃষকের যাতে অসুবিধা না হয়, সে লক্ষ্যে দরকার হলে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ‘থামিয়ে রেখে’ সারে ভর্তুকি দিয়ে যাবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল মঙ্গলবার সচিবালয়ে সার বিষয়ক জাতীয় সমন্বয় ও পরামর্শক কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী সারের ভর্তুকি দেওয়ার বিষয়ে অনড়’। কৃষিমন্ত্রী বলেন, আমরা ভেবেছিলাম সারের বাড়তি মূল্য এক পর্যায়ে কমে যাবে। এখন দেখা যাচ্ছে দাম অব্যাহতভাবে বাড়ছে। মনে হয় জুন পর্যন্ত ৩০ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হবে। এতো টাকা কোত্থেকে আসবে? প্রয়োজনে অন্যান্য উন্নয়ন কর্মকাণ্ড থামিয়ে রেখে সারে ভর্তুকি দিয়ে যাবেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। অর্থমন্ত্রণালয় থেকে প্রচন্ড চাপ দিচ্ছে। বলছে স্যার একটা কিছু করেন, আমরা কিভাবে দেশ চালাব। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী এখনও সারের ভর্তুকি দেওয়ার বিষয়ে অনড়। তবে সামনের বছর কী হবে আমরা জানি না। পাশের দেশ ভারতেও প্রতিটি সারের দাম বাংলাদেশের চেয়ে বেশি।
বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস মহামারীর পর ইউক্রেইন-রাশিয়া যুদ্ধসহ বিভিন্ন কারণে বিশ্বে সারের দাম বেড়েছে। সেকারণেই সারের জন্য অতীতের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি টাকা ভর্তুকি দিতে হচ্ছে। সভায় শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, কৃষি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি বেগম মতিয়া চৌধুরী, কৃষিসচিব মো. সায়েদুল ইসলাম, শিল্পসচিব জাকিয়া সুলতানা, কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব বলাইকৃষ্ণ হাজরা উপস্থিত ছিলেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবাকলিয়া থেকে ৩ চোর আটক
পরবর্তী নিবন্ধকৌতুক কণিকা