সোশ্যাল মিডিয়াসহ বিভিন্ন অনলাইন প্লাটফর্মে ভাইরাল হওয়া ব্যক্তিগত ভিডিও, ছবি অপসারণে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসির) ভূমিকা নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেছে হাই কোর্ট। সেই সঙ্গে আদালত প্রশ্ন তুলেছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ অনলাইন প্লাটফর্মে কেন ব্যক্তির গোপন ভিডিও, কথোপকথন, ছবি ভাইরাল হয়? এ সংক্রান্ত এক রিট আবেদনের শুনানিতে বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার ভার্চুয়াল হাই কোর্ট বেঞ্চ বিটিআরসিকে নিয়ে প্রশ্ন তোলে। কলেজছাত্রী মোসারাত জাহান মুনিয়া, চিকিৎসক সাবরিনা আরিফ চৌধুরী ও চিত্রনায়িকা পরীমনিসহ ব্যক্তির বিশেষ করে নারীর চরিত্র নিয়ে প্রচার-প্রকাশিত অবমাননাকর ব্যক্তিগত ছবি, ভিডিও ও প্রতিবেদন অপসারণের নির্দেশনা চেয়ে গত ২৫ আগস্ট রিট আবেদনটি করেছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী তাসমিয়াহ নুহিয়া আহমেদ। খবর বিডিনিউজের।
গতকাল রোববার আবেদনটির শুনানি শুরু হলে এর গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী। তিনি বলেন, বিটিআরসির কাছে কোনো আবেদন না করেই জনস্বার্থে এ রিট আবেদনটি করা হয়েছে। তাছাড়া আরেকটি বেঞ্চ থেকে একই ধরনের আদেশ হয়েছে, রুল জারি হয়েছে। তখন বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারক মো. মজিবুর রহমান মিয়া বলেন, বিটিআরসি কী করে? তাদেরকে প্রতিনিয়ত নির্দেশনা দিয়ে এগুলো বন্ধ করতে হবে? সমাজটা উচ্ছন্নে যাচ্ছে!
রাসেল চৌধুরী বলেন, অনলাইন নিউজ পোর্টালগুলো কোনো ধরনের গাইডলাইন ফলো করছে না। তাদের কোনো অনুমতিরও দরকার নাই অনেক সময়। যে কারণে অনুমতি ও গাইডলাইন ফলো করার জন্য একটি রুল ইস্যু হয়েছে।
তখন জ্যেষ্ঠ বিচারক বলেন, বিটিআরসি এগুলো (ভাইরাল ভিডিও, ছবি) সংরক্ষণ করে নাকি পরে? প্লেজার ফিল করে? দেখতে তাদের ভালো লাগে? তারা এসব উপভোগ করে? আমরা সন্তান-সন্ততি নিয়ে থাকি না? আমাদের একটি পরিবার আছে না? টোটাল সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়, কেন?
বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া রিট আবেদনকারী আইনজীবী তাসমিয়াহ নুহিয়া আহমেদের কাছে জানতে চান আবেদনটি করার আগে তাদের ব্যক্তিগত বা গোপন ভিডিও, ছবি, প্রতিবেদন অপসারণ করতে বিটিআরসিকে নোটিস দেওয়া হয়েছিল কিনা? জবাবে এ আইনজীবী ‘না’ বলেন। এরপর রিট আবেদনটি উত্থাপিত হয়নি বলে খারিজ করে দেয় হাই কোর্ট।
রিট আবেদনকারী আইনজীবী বলেন, মোসারাত জাহান মুনিয়া, সাবরিনা আরিফ চৌধুরী ও পরীমনির ব্যক্তিগত বা গোপন ভিডিও, ছবি, প্রতিবেদন অপসারণে বিটিআরসিকে আইনি নোটিস পাঠাব। নোটিস পাঠানোর পরও যদি বিটিআরসি কোনো পদক্ষেপ না নেয়, তবে আবার তিনি রিট আবেদনটি করবেন।