বাড়ছে আমদানি-রপ্তানি

চট্টগ্রাম বন্দরে কন্টেনার হ্যান্ডলিংও বেড়েছে

হাসান আকবর | সোমবার , ৮ মে, ২০২৩ at ৫:৫৪ পূর্বাহ্ণ

দেশের আমদানিরপ্তানি বাণিজ্য ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। প্রত্যাশিত গতিতে না হলেও বাড়ছে দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর চট্টগ্রামে কন্টেনার হ্যান্ডলিংসহ অন্যান্য কার্যক্রম। ইউক্রেনরাশিয়া যুদ্ধ, ডলার সংকটসহ এলসি নিয়ে দেখা দেওয়া সংকটে প্রায় থমকে গিয়েছিল বৈশ্বিক বাণিজ্য। সেই অবস্থা থেকে বের হয়ে ক্রমান্বয়ে ব্যবসা বাড়ছে। বাড়ছে আমদানিরপ্তানি। বিদ্যমান ধারা অব্যাহত থাকলে অর্থনীতি ক্রমে গতিশীল হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন সংশ্লিষ্টরা।

করোনাকালের ধাক্কার পর ইউক্রেনরাশিয়া যুদ্ধসহ ডলার সংকট দেশের আমদানিরপ্তানি খাতকে ভয়াবহ পরিস্থিতিতে ফেলে। এলসি খোলা অনেকটা বন্ধ হয়ে যায়। অতি নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য এবং নির্দিষ্ট অংকের বেশি অর্থের কোনো এলসি খোলা হচ্ছিল না। বিলাস দ্রব্য আমদানি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। অপরদিকে রপ্তানি বাজারেও ধস নামে। বৈশ্বিক সংকটে ইউরোপ, আমেরিকাসহ উন্নত বিশ্বের মানুষের ক্রয় ক্ষমতা কমায় দেশের তৈরি পোশাকসহ অন্যান্য পণ্য রপ্তানি দ্রুত কমতে শুরু করে। এর প্রভাব পড়ে চট্টগ্রাম বন্দরের সার্বিক কার্যক্রমে। চট্টগ্রাম বন্দর গত বছর ৩১ লাখ টিইইউএসের মতো কন্টেনার হ্যান্ডলিং করে। এর আগের বছর কন্টেনার হ্যান্ডলিংয়ের পরিমাণ ছিল ৩২ লাখ ১৪ হাজার টিইইউএস। বৈশ্বিক সংকটের কারণে এক বছরের ব্যবধানে কন্টেনার হ্যান্ডলিং ১ লাখের বেশি কমে যায়।

চলতি বছরের শুরুতে পরিস্থিতি নাজুক হয়ে উঠেছিল। ওই সময় চট্টগ্রাম বন্দর থ্রি মিলিয়নস ক্লাব থেকে ছিটকে পড়ার শঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছিল। আমদানিরপ্তানি কমে যাওয়ায় বাড়ছিল খালি কন্টেনারের সংখ্যা। মার্চ মাস থেকে পরিস্থিতি কিছুটা পাল্টাতে শুরু করেছে। স্বাভাবিক সময়ের মতো গতিশীল না হলেও আমদানিরপ্তানি কিছুটা বাড়তে শুরু করেছে। এপ্রিল মাসে এসে তা আরো বেড়েছে।

চট্টগ্রাম বন্দর থেকে গতকাল প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, সদ্য সমাপ্ত এপ্রিল মাসে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে ১ লাখ ৭ হাজার ৭৫২ টিইইউএস কন্টেনার আমদানি হয়েছে। একই সময়ে রপ্তানি হয়েছে ৫৫ হাজার ৯৪০ টিইইউএস কন্টেনার, যা মার্চ মাসের তুলনায় বেশি। মার্চে চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে ৯৮ হাজার ৭৩৬ টিইইউএস কন্টেনার পণ্য আমদানি হয়েছে। রপ্তানি হয় ৫৫ হাজার ১৬০ টিইইউএস। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে আমদানি হয়েছিল ৭৭ হাজার ৮৪১ টিইইউএস। রপ্তানি হয়েছিল ৫৬ হাজার ২২৪ টিইইউএস। গত ফেব্রুয়ারি অথবা মার্চের তুলনায় এপ্রিল মাসে আমদানিরপ্তানি বেড়েছে বলে বন্দর সূত্র জানিয়েছে। একই সাথে এপ্রিল মাসে এসে কন্টেনার হ্যান্ডলিংয়ের পরিমাণও বৃদ্ধি পেয়েছে।

বন্দর সূত্র জানায়, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে হয়েছে ১ লাখ ৯৭ হাজার ৭৪২ টিইইউএস কন্টেনার। ফেব্রুয়ারি মাসে তা কমে ১ লাখ ৬৮ হাজার ৭৪ টিইইউএস কন্টেনারে নেমে যায়। মার্চে এসে তা আবার বৃদ্ধি পেয়ে ২ লাখ ১ হাজার ৯৭৬ টিইইউএসে উন্নীত হয়েছিল। এপ্রিলে এসে আমদানিরপ্তানি এবং খালি কন্টেনার মিলে মোট ২ লাখ ১৫ হাজার ৮২৫ টিইইউএস কন্টেনার হ্যান্ডলিং হয়েছে। এটি স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় কম হলেও ক্রমান্বয়ে আমদানিরপ্তানিসহ কন্টেনার হ্যান্ডলিং বৃদ্ধি পাচ্ছে। এটাকে শুভ লক্ষণ বলা হচ্ছে।

চট্টগ্রামের একাধিক ব্যবসায়ী নেতা গতকাল বলেন, পরিস্থিতি ক্রমে স্বাভাবিক হচ্ছে। বিদ্যমান ধারা অব্যাহত থাকলে আগামী দুয়েক মাসের মধ্যে দেশের আমদানিরপ্তানি বাণিজ্য স্বাভাবিক গতিতে ফিরে আসবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকবিগুরুর ১৬২তম জন্মজয়ন্তী আজ
পরবর্তী নিবন্ধ৩৪ গ্রাম সিএনজি ও ব্যাটারি রিক্সা জব্দ