বাড়ছে অলস জাহাজের সারি

নৌযান ধর্মঘট : সংকট সুরাহায় বৈঠক আজ

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ২২ অক্টোবর, ২০২০ at ৮:৫৪ পূর্বাহ্ণ

খোরাকি ভাতা প্রদানসহ ১১ দফা দাবি আদায়ে সারাদেশে অনির্দিষ্টকালের নৌযান ধর্মঘট অব্যাহত রয়েছে। দেশের অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন রুটে পণ্য পরিবহনের পাশাপাশি নানা ঘাট ও চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে পণ্য খালাস পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। এই সংকট সুরাহায় আজ সকাল ১১টায় ঢাকায় সরকারি একটি গোয়েন্দা সংস্থার দফতরে এবং বিকেলে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের আহ্বানে ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের কথা রয়েছে।
জাতীয় শ্রমিক লীগের আওতাধীন ছয়টি শ্রমিক সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত মোর্চা এবং বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনসহ কয়েকটি শ্রমিক সংগঠন এই কর্মবিরতি শুরু করে। গত সোমবার সন্ধ্যা থেকে শুরু হওয়া কর্মবিরতির প্রথম দিনেই সংকট সুরাহার উদ্যোগ নেয়া হলেও পরবর্তীতে আর কোনো দৃশ্যমান ফলাফল দেখা যায়নি। গত মঙ্গলবারের মতো গতকালও কোনো ধরনের উদ্যোগ পরিলক্ষিত হয়নি। তবে আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় ঢাকায় সরকারি একটি গোয়েন্দা সংস্থার উদ্যোগে জাহাজ মালিক এবং শ্রমিক নেতাদের নিয়ে জরুরি বৈঠকের আহ্বান জানানো হয়েছে। সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের নির্দেশনায় আমদানি বাণিজ্যে দেখা দেয়া এই সংকট সুরাহায় বৈঠকটি আহ্বান করা হয়। ওই বৈঠকেই সংকটের সুরাহা হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে। অপরদিকে আজ বিকেল সাড়ে ৩ টায় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ মালিক ও শ্রমিক নেতাদের নিয়ে ত্রিপক্ষীয় একটি বৈঠকের আয়োজন করেছে। এই বৈঠকে বন্দর ব্যবহারকারী বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দও অংশগ্রহণ করবেন।
নৌযান শ্রমিকদের কর্মবিরতির কারণে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে পণ্য খালাস এবং দেশের অভ্যন্তরীণ নদীপথে পণ্য পরিবহন পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। এতে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে ৪০টির মতো মাদার ভ্যাসেল বিভিন্ন ধরনের আমদানি পণ্য নিয়ে অলস ভাসছে। প্রতিদিনই বন্দরে পণ্য নিয়ে জাহাজ আসছে। আজও কয়েকটি জাহাজ আসার কথা রয়েছে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মোহাম্মদ ওমর ফারুক জানান, বহির্নোঙরে লাইটার জাহাজ চলাচল না করলেও বন্দরের মূল জেটি জিসিবি, সিসিটি, এনসিটি, রিভারমুরিং, ডলফিন অয়েল জেটি ও স্পেশাল বার্থে কোনো সমস্যা হচ্ছে না। বন্দরের অভ্যন্তরে কন্টেনার এবং পণ্য খালাস স্বাভাবিকভাবে চলছে। বন্দর থেকে লরি, ট্রাক, কাভার্ডভ্যানে পণ্য ও কন্টেনার ডেলিভারি স্বাভাবিক রয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেলের (ডব্লিউটিসি) নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ মাহবুব রশীদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি গতকালও কোনো ধরনের বার্থিং মিটিং না হওয়া এবং কোনো লাইটারেজ বরাদ্দ না নেয়ার কথা উল্লেখ করেন। তিনি বহির্নোঙরে গম, ভুট্টা, ডাল, সার, চিনি, সিমেন্ট ক্লিংকার, পাথর, কয়লা, ভোজ্যতেলসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য বোঝাই ৪০টির মতো মাদার ভ্যাসেল রয়েছে বলে উল্লেখ করেন। শ্রমিকদের আন্দোলনের কারণে অলস বসে থাকা এক একটি মাদার ভ্যাসেলকে হাজার হাজার ডলার গচ্ছার কবলে পড়তে হচ্ছে উল্লেখ করে সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, দেশের আমদানি বাণিজ্যকে প্রতিদিন কোটি কোটি টাকার ক্ষতির শিকার হতে হচ্ছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধখুলশীতে স্ক্যাভেটর চাপায় শিশুর মৃত্যু
পরবর্তী নিবন্ধধস ও পিকআপ চাপায় দুই শ্রমিক নিহত