বাহারি রঙের ফুলের পসরা

লাল গোলাপ, ফুলের গহনা ও রিং দাম এবার একটু বেশি

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ at ৫:১৪ পূর্বাহ্ণ

আহা আজি এ বসন্তে, এত ফুল ফুটে,/এত বাঁশি বাজে, এত পাখি গায়।’ ঋতুরাজ বসন্ত এলেই মনে পড়ে যায় কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের সেই পরিচিত গান। আজ পহেলা ফাল্গুন। ঋতুরাজ বসন্তের প্রথম দিন। অন্যদিকে আজ ভ্যালেন্টাইন ডে বা ভালোবাসা দিবস। তবে বসন্ত মানে বাঙালির প্রাণের উৎসব। এদিন তরুণতরুণীরা বাসন্তী রঙের পাঞ্জাবিশাড়ি পড়ে সামিল হয় বসন্ত উৎসবে। তরুণীরা মাথায় রিং ও খোঁপায় গাঁদা ফুল গুঁজে দিনভর খুনসুটিতে মেতে থাকে।

অপরদিকে ভালোবাসা দিবসে প্রেমিকপ্রেমিকা ও দম্পতিরা লাল শাড়িপাঞ্জাবি ও সেলোয়ারকামিজ পরে দিনটি উপভোগ করে থাকেন। তবে ভালোবাসা দিবসের প্রধান উপসঙ্গ হচ্ছে ফুল। ফুল ছাড়া ভালোবাসা দিবসকে যেন কল্পনা করা যায় না। এই দিবস দুটিকে কেন্দ্র করে নগরীর ফুলের দোকানগুলো ফুলে ফুলে ভরে গেছে। ফুল ব্যবসায়ীরা বলছেন, বসন্ত উৎসবে সাধারণত গাদা ফুলের চাহিদাই বেশি থাকে। তবে ফুলের প্রধান বিক্রি হয় ভালোবাসা দিবসে। স্বাভাবিকভাবে ভালোবাসার প্রতীক ‘লাল গোলাপ’ এর চাহিদা থাকে সবচেয়ে বেশি।

গতকাল সোমবার নগরীর কয়েকটি ফুলের বাজারে ঘুরে দেখা যায়, দোকানগুলোতে বাহারি রঙের ফুলের পসরা সাজিয়ে বসেছেন বিক্রেতারা। কেউ আবার ফুলের গহনা, মাথার রিং ও খোঁপায় পরার নানান ধরনের ফুলের লহর তৈরি করছেন। বিক্রেতারা জানান, ভালোবাসা দিবসকে কেন্দ্র করে তরুণতরুণীরা চন্দ্রমল্লিকা, জারবেরা ও গোলাপ ফুলই বেশি কিনছে। বসন্ত উৎসবের জন্য তরুণীরা গাঁদা ফুলের পাশাপাশি মাথার রিঙের অর্ডার দিয়েছে বেশি। তবে ফুলের উৎপাদন খরচ বাড়ার কারণে আগের বছরের তুলনায় দাম আগের চেয়ে বেড়েছে।

ফুলের দোকানে আসা তরুণীরা জানান, ফুল এখন আর সৌখিনতার বস্তু নয়। ফুলের আদানপ্রদানের মাধ্যমে পারস্পরিক বিশ্বাস, প্রতিশ্রুতি, শ্রদ্ধা আর ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ ঘটে। এছাড়া নিজেকে সাজাতে ফুলের জুড়ি নেই। প্রেমিক যুগলের কাছে পৃথিবীর সবচেয়ে দামি উপহার হলো ফুল। অন্যদিকে বসন্তে নানা বয়সী মেয়ে ফুলের রিং মাথায় পরে ঘুরে বেড়ায়। এছাড়া কানে দুল, গলায় মালা ও হাতে ফুলের বাহারি অলঙ্কার পরার পাশাপাশি চুলের এক পাশে তাজা ফুল ক্লিপ দিয়ে সাঁটিয়ে থাকেন তরুণীরা।

ফুলের দোকানে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভালোবাসা দিবসে লাল গোলাপের চাহিদা একটু বেশি থাকে। বর্তমানে প্রতিটি গোলাপ বিক্রি হচ্ছে ৩০৪০ টাকা, চীনা গোলাপ ৭০৮০ টাকা, রজনীগন্ধা স্টিক ২৫৩০ টাকা, জারবেরা ৩৫৪০ টাকা, গাঁদা ফুল লহর ৭০৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। হচ্ছে ১৫২০ থেকে টাকা দরে। তবে চীনা গোলাপ বিক্রি হচ্ছে ১২০১৫০ টাকায়। এছাড়া চন্দ্রমল্লিকা স্টিক ১২০১৫০ টাকা, জারবেরা প্রতিটি ৪০৪৫ টাকা, প্রতিটি দেশি গ্লাডিওলাস ৪০৫০ টাকা, প্রতি বান্ডেল জিপসি ফুল ৭০৮০ টাকা এবং গাঁজরা ফুল বিক্রি হচ্ছে ৬০৭০ টাকায়।

নগরীর চেরাগীর মোড়ের একটি ফুলের দোকানে সামনে কথা হয় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী সানজানা ইসলামের সাথে। তিনি জানান, প্রতি বছরের মতো এ বছরও বিশেষ করে বসন্ত উৎসব উপলক্ষে বান্ধবীদের সাথে ঘোরাঘুরির পরিকল্পনা আছে। তাই অগ্রিম মাথার রিং অর্ডার দিতে এসেছি। এছাড়া সারাদিন বাসন্তী রঙের শাড়ি পড়ে মজা করবো। সারা বছর এই একটি দিনের অপেক্ষায় থাকি।

চেরাগীর পাহাড় এলাকার ফুল ব্যবসায়ী মোহাম্মদ মনসুর আলম বলেন, বাজারে এখন এখন আর্টিফিসিয়াল ফুলের ছড়াছড়ি। তাই বিশেষ দিন ছাড়া কাঁচা ফুলের কদর তেমন নেই বললেই চলে। এছাড়া ফুল চাষিদের উৎপাদন খরচও বেড়ে গেছে। তাই গত বছরের তুলনায় এ বছর ফুলের বাজার চাঙা। তারপরেও বছরের এই একটি দিন প্রিয় মানুষকে শুভেচ্ছা জানাতে বিভিন্ন বয়সের নারী পুরুষেরা ফুলের দোকানে ভিড় করেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধঅল্পের জন্য রক্ষা পেল অর্ধশত যাত্রী
পরবর্তী নিবন্ধধ্বংসস্তূপে ১২৮ ঘণ্টা, উদ্ধারের পর খাবার খেয়েই হেসে উঠল শিশু