বাবুলদের সাকো, পদ্মা সেতু ও আবদুল গাফফার চৌধুরী

কামরুল আনোয়ার চৌধুরী | শুক্রবার , ১৯ আগস্ট, ২০২২ at ৯:০২ পূর্বাহ্ণ

১৯৬৫ সাল। তখন তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ি। স্কুলের বাংলা পাঠ্য বইয়ের গদ্যাংশে একটি গল্প ছিল। গল্পটি এরূপ। বাবুল ও কামাল দু ভাই। তারা পাঁয়ে হেটে রোজ পাঠশালায় যায়। যাওয়ার পথে একটি খাল। খালের উপর একটি সাঁকো। সাঁকো পার হয়ে তারা স্কুলে যাতায়াত করে। গ্রামবাসীরা এ সাঁকো পার হয়ে বিভিন্ন কাজে থানা শহর, জেলা শহর বা বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করে। একদিন হঠাৎ এ সাঁকো ভেঙ্গে পড়লো। বাবুল ও কামাল আর স্কুলে যেতে পারে না। গ্রামের মাছ, শাকসবজী, দুধ ও মনোহারী দ্রব্য বিক্রেতারা শহরে যেতে পাওে না। মানুষজন যারা বিভিন্ন কাজে শহরে যেত তারাও আর শহরে যেতে পাওে না। গ্রামের মানুষ পড়লো মহা বিপদে। গ্রামের মধ্যে এমন সচ্ছল, প্রভাবশালী কেউ নেই যে এ সাঁকো তৈরির জন্য আর্থিক সহযোগিতা ও দেন দরবার করে তা তৈরির উদ্যোগ নেবে। বেশ কয়েকটা সমাবেশ বা বৈঠক করে তারা সিদ্ধান্ত নিল তারা নিজেরা সম্মিলিত সহযোগিতার মাধ্যমে এ সাঁকো মেরামত করবে। সিদ্ধান্ত মোতাবেক কেউ দিল লোহা, কেউ দিল পেরেক, কেউ দিল কাঠ, কেউ দিল কিছু অর্থকড়ি, কেউ দিল অন্যান্য উপকরণ। যারা কিছু দিতে পারলো না তারা গায়ে গতরে সাঁকো মেরামতের কাজে নেমে পড়লো। এভাবে সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে সাঁকোটি আবার তৈরি হলো। বাবুল ও কামাল আবার স্কুলে যাওয়া শুরু করলো। আবার শুরু হলো গ্রামবাসীদের যাতায়াত। গ্রামবাসী সবার মুখে হাসি ফুটলো। এ গল্পের লেখক সামপ্রতিক প্রয়াত লেখক, কবি, সাংবাদিক ও রাজনীতিবিদ আবদুল গাফফার চৌধুরী। পারস্পরিক বোঝাপড়ার মাধ্যমে যে সংঘবদ্ধ বা সামষ্টিক শক্তি সৃষ্টি হয় তা দ্বারা অনেক অসাধ্য সাধন করা যায়। তা হচ্ছে এ গল্পের সারকথা। আবদুল গাফফার চৌধুরীকে স্মরণ করার পাশাপাশি ঐতিহাসিক পদ্মা সেতু নির্মাণের পিছনে এ গল্প অনুপ্রেরণামূলক হয়ে উঠেছে। পদ্মা সেতুর তৈরির পিছনে যে বিরাট ইতিহাস তা সকলের জানা। বাঙালি জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমানের দুঃসাহসী আত্মার সুযোগ্য উত্তরসুরী, বঙ্গবন্ধু কন্যা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অদম্য ইচ্ছাশক্তি, দুঃসাহসী উদ্যোগ, এ দেশের বিশাল মেধাবী মানুষদের সক্রিয় অংশগ্রহণ ও আপামর জনসাধারণের সম্মিলিত সহযোগিতায় গড়ে উঠেছে বিশাল খরস্রোতা পদ্মা নদীর উপর প্রধানমন্ত্রীর অমর সৃষ্টি, অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সমন্বয়ে গড়া বর্তমানে বিশ্বের ১১নং সেতু বলে পরিচিতি লাভ করা পদ্মা সেতু। এখন যাদের বয়স সর্বনিম্ন ৫০ হতে ৫৫ তাদের স্মরণে আবদুল গাফফার চৌধুরীর গল্পটি অবশ্য থাকার কথা। স্মরণ হলেই বুঝতে পারবেন সমপ্রতি পদ্মা সেতুর নির্মাণে এ গল্পটি কত বড় অনুপ্র্রেরণার শক্তি হিসেবে কাজ করেছে। এ সেতু তৈরি হওয়ায় উত্তরবঙ্গের প্রায় সব জেলার ফসল ও তরিতরকারীর কৃষক, বিক্রেতা সহ খুদে পেশাজীবী ও যাত্রী সাধারণের সবার মুখে আনন্দের হাসি, আশার আলো।
বাঙালি মুসলিম সমাজে মাওলানা আকরাম খাঁ এর ‘আজাদ পত্রিকার মাধ্যমে সাংবাদিকতার যাত্রা শুরু হয়। এর আগে সাংবাদিকতায় বাঙালি মুসলিম সমাজে উল্লেখযোগ্য কেউ ছিল না। বাঙালি হিন্দু সমাজে এ-ঐতিহ্য আগে থেকে ছিল। এরপরে এগিয়ে আসেন নাসিরউদ্দীন, মুজিবুর রহমান খাঁ, কবি আবদুল কাদের, মোহাম্মদ মোদাব্বের, মাওলানা তমিজউদ্দীন, কমরেড মোজাফফর আহমদ, কবি নজরুল ইসলাম প্রমুখ তাদের প্রায় সকলেই লেখক, সাহিত্যিক ও রাজনীতিবিদ ছিলেন। আকরাম খাঁর ‘আজাদ’ বা নাসিরউদ্দীনের সাহিত্য পত্রিকা ‘সওগাত’ ও ‘বেগম’ ১৯৪৭ সালের দেশ বিভাগের পূর্ব হতে প্রকাশিত হয়ে পরবর্তী পাকিস্তান আমল হয়ে ১৯৭১ সাল পরবর্তী বাংলাদেশ আমলের প্রায় বিশ বছর পর্যন্ত চালু ছিল। বেগম পত্রিকা এখনও চালু। আছে বলে জানা যায়। এ-পত্রিকাগুলো ছিলো তিন প্রজন্মের সাক্ষী অর্থাৎ তিন পতাকার তলে। সাংবাদিকতা করেছেন কবি কাজী নজরুল ইসলাম অবিভক্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রী এ, কে, ফজলুল হক (শেরে বাংলা) সম্পাদিত ‘লাঙ্গল’ পত্রিকায়। কমরেড মুজাফফার আহমদের পত্রিকার নাম ‘স্ফুলিঙ্গ’। ১৯৪৭ সালের দেশ বিভাগের পূর্ব হতে পরে সাংবাদিকতা জগতে যারা বলিষ্ট অবস্থান সৃষ্টি করেছেন তাদের মধ্যে আছেন তোফাজ্জল হোসেন (মানিক মিয়া), জহুর হোসেন চৌধুরী, আবুল মনসুর আহমদ, মাওলানা ভাসানী, আবু জাফর, সামসুদ্দিন, আবদুছ সালাম, আবেদ খাঁন, ওবায়দুল হক, হামিদুল হক চৌধুরী, কামাল লোহানী, সৈয়দ নূরুদ্দীন, হাসান হাফিজুর রহমান, মুস্তফা নূরুউল ইসলাম, রনেশ দাশ গুপ্ত, সন্তোষ গুপ্ত, কবি ফররুখ আহমদ, সিকানদার আবু জাফর, সামসুর রহমান সহ আরো অনেকে। এদের কেউ কেউ ছিলেন রক্ষণশীল, কেউ কেউ ছিলেন আধুনিক প্রগতিশীল চিন্তাধারার অধিকারী। তবে সবাই মেধাবী ও জ্ঞান অনুশীলনকারী সাংবাদিক ছিলেন। তাদের ধারায় স্বতন্ত্র অবস্থান নিয়ে সাংবাদিকতা করেছেন লেখক ও কবি আব্দুল গাফফার চৌধুরী। প্রগতিশীল জাতীয়তাবাদী রাজনীতি, সুস্থ সংস্কৃতির চর্চা, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ সৃষ্টির ব্যাপারে আবদুল গাফফার চৌধুরীর বলিষ্ঠ অবস্থান ছিল। বরিশালে জন্মগ্রহণকারী আব্দুল গাফফার চৌধুরী ঢাকায় লেখাপড়া করতে এসে সাংবাদিকতায় জড়িয়ে পড়েন। সাংবাদিকতা করেছেন দৈনিক সংবাদ, দৈনিক মিল্লাত, দৈনিক পূর্বদেশ, সাহিত্য পত্রিকা সওগাত, বেগম সহ আরো বিভিন্ন পত্রিকায়। কলাম লিখেছেন দৈনিক আজাদ, দৈনিক ইত্তেফাক সহ বেশকিছু পত্রিকায়। সাংবদিক ও কলামিস্ট আব্দুল গাফফার চৌধুরী ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন সহ এর পরের বিভিন্ন রাজনৈতিক আন্দোলন, সাংস্কৃতিক আন্দোলনে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত ছিলেন।
বাঙালিদের প্রতি পাকিস্তান সরকার ও অবাঙালি ক্ষমতাধর জনগোষ্ঠীর বৈষম্যমূলক আচরণ, দমন, নিপীড়ন, নির্যাতনের প্রতিবাদে বঙ্গবন্ধু মুখর ছিলেন আন্দোলনে আর আবদুল গাফফার চৌধুরীর কলাম লেখার মাধ্যমে পালন করেছেন ঐতিহাসিক ভূমিকা। এসব আন্দোলনে দৈনিক ইত্তেফাকের ভূমিকা ছিল প্রাতঃস্মরণীয়। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে ভারতে বসে আবদুল গাফফার চৌধুরী সাপ্তাহিক ‘জয় বাংলা’ পত্রিকা প্রকাশ করেন। উক্ত পত্রিকায় প্রবন্ধ-নিবন্ধ প্রকাশ করে তিনি আমাদের মুক্তিযুদ্ধে জনসমাজের সমর্থন আদায় করতে সক্ষম হন। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর দৈনিক ‘জনপদ’ পত্রিকা প্রকাশ করেন। তিনি নিজেই এ পত্রিকার সম্পাদক। সদ্য স্বাধীন দেশের সরকারকে বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের জন্য লেখনির মাধ্যমে পরামর্শ প্রদান করতেন। আবদুল গাফফার চৌধুরী বঙ্গবন্ধুর সরকার ও আওয়ামী লীগের মেন্টর হিসেবে ভূমিকা পালন করেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত এ দায়িত্ব পালন করেছেন। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, মূল্যবাধ, আদর্শ, ঐতিহাসিক ঐতিহ্য, সুসংস্কৃতির অনুশীলন ও প্রগতিশীল শিক্ষা চেতনা সমুন্নত ও চলমান রাখতে তিনি রাষ্ট্রপতির এরশাদের শাসনামলে ‘যায় যায় দিন’ পত্রিকায় অনবরত লিখেছেন। পাঠক সমাজ তার কলামগুলো পড়ে ঋদ্ধ হতো। মুক্তিযুদ্ধ, গণতন্ত্র, ইতিহাস, ঐতিহ্য সম্পর্কে আত্মবিশ্লেষণ করার সুযোগ পেত। মৃত্যুপূর্বকালীন গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় ও বিশুদ্ধ জ্ঞানের আলোকে বাংলাদেশে ধর্মনিরপেক্ষ সমাজ তৈরির প্রচেষ্টায় ব্রতী ছিলেন। সাংবাদিক ছাড়া আবদুল গাফফার চৌধুরী ছিলেন কবি, উপন্যাসিক। তাঁর বেশ কয়েকটি কবিতা ও উপন্যাসের কারণে তিনি সুপরিচিত। তবে একটি কবিতার জন্য লাভ করেছেন বিশ্বময় পরিচিতি ও গৌরবজনক অবস্থান। তিনি সক্রিয়ভাবে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন। এ আন্দোলনের মিছিলে পুলিশের গুলিতে প্রথমে আহত ও পরে নিহত হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবুল বরকত সহ সালাম, রফিক, শফিক, জব্বার সহ কয়েকজন। এরূপ শোকাকুল ও মর্মান্তিক ঘটনায় বিবেকতাড়িত হয়ে রচনা করেন কবিতা ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারী’। এ কবিতাটি একটি শোকের গান হিসেবে রূপ লাভ করে। প্রথমে সুরকার আবদুল লতিফ পরে সুরকার আলতাফ মাহমুদ পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে। সুরারোপ করে এটিকে সঙ্গীতে রূপ দেন। প্রতি বছর ২১শে ফেব্রুয়ারি ভোরের প্রথম প্রহর হতে আকাশে বাতাসে পুরো দিগন্ত জুড়ে শহীদমিনারমুখী হাজার লক্ষ জনতার মিছিলে সবার কণ্ঠ হতে ধ্বনিত প্রতিধ্বনিত হয় আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি।
২০০০সালে ২১ শে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হওয়ায় এ-গান এখন বিশ্ব সঙ্গীতের মর্যাদা লাভ করেছে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে, বিভিন্ন ভাষায় ২১ শে ফেব্রুয়ারি তারিখে এ গান গাওয়া হয়। কবি কাজী নজরুলের ‘জাগো যত অনশন বন্দী উঠরে যত’ ঐতিহাসিক মে দিবসে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালনকারী জন হেনরির গান ‘আমরা করব জয় একদিন’ এর পর্যায়ের গানগুলোর মতো আবদুল গাফফার চৌধুরীর একুশের এ-কবিতা বা গান লাভ করেছে বিশ্ব সঙ্গীতের মর্যাদা। পৃথিবীর অনেক বিখ্যাত কবি লেখকদের একটি বিশেষ লেখা সেসব কবি লেখকদের দিয়েছে স্বতন্ত্র পরিচয়। ঐ লেখাই তাদের সব রচনার মধ্যে মুখ্য রচনা। কবি কাজী নজরুল ইসলামের ‘বিদ্রোহী কবিতা, কবি জীবনানন্দ দাশের ‘বনলতা সেন’, সুকান্ত ভট্টাচার্যের ‘রানার’, ডি.এল, রায়ের ‘ধনধান্যে পুষ্পে ভরা আমাদের এই বসুন্ধরা, সৈয়দ আলী আহসানের ‘আমার পূর্ব বাংলা কবিতা, কবি ইকবালের ‘দুনিয়ার যত গরীবদের আজ জাগিয়ে দাও’, ইংরেজী কবি ‘Tomas Gray এর ‘Elegy written in a country churchyard Charles Kingslay এর The Sands of Dee প্রভৃতি ঐসব কবিদের অনন্য স্বতন্ত্র পরিচয় তুলে ধরে। উল্লেখ করতে হয় কয়েকটি মর্মস্পর্শী গল্পের কথা। যেমন শরৎ চন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘মহেশ’, বনফুলের ‘তাজমহল’ আবুল মনসুর আহমদের ‘আদু ভাই’, ড. আশরাফ সিদ্দিকীর ‘গলির ধারের ছেলেটি’, নরেন্দ্র নাথ মিত্রের ‘হেড মাস্টার’ Edger Allen Poe এর The last Leaf O Henery এর The Gift of Mgai প্রভৃতি ঐসব লেখকদের স্বতন্ত্র তুলে ধরেন। তেমনিভাবে আবদুল গাফফার চৌধুরীর লেখা কবিতা আমার ভায়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি তাঁর পরিচয় সর্বাগ্রে তুলে ধরেছে। বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একবার আবদুল গাফফার চৌধুরীকে অনুরোধ করেছিলেন একুশের এ-কালজয়ী কবিতার মতো আরেকটি কবিতা লিখতে। তিনি হেসে উত্তর দিয়েছিলেন আপনি ৭ই মার্চের ভাষণের মত আরেকটা ভাষণ দিতে পারলে আমি ঐরূপ আরেকটা কবিতা লিখতে পারবো। একুশে ফেব্রুয়ারির প্রেক্ষাপট তৈরি হবার আগে থেকে ২১ শে ফেব্রুয়ারির আন্দোলন ও একুশের মর্মান্তিক ঘটনা দিয়ে সৃষ্টি হয়েছে শক্তিশালী সাহিত্য। আন্দোলন নিয়ে কবিতা লিখেছেন মাহবুবুল আলম চৌধুরী, হাবিবুর রহমান, শামসুর রাহমান, আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ, ফররুখ আহমদ, আল মাহমুদ, ফজলে লোহানী প্রমুখ। প্রবন্ধ লিখেছেন ডঃ মুহম্মদ শহিদুল্লাহ, আবুল মনসুর আহমদ, আবু জাফর সামশুদ্দিন, রণেশ দাশগুপ্ত, এম, আর আকতার মুকুল প্রমুখ। অধ্যাপক মুনীর চৌধুরী রচনা করেছেন ‘কবর’ নাটক। বদরুদ্দীন ওমর, সৈয়দ মুজতবা আলী রচনা করেছেন ঐতিহাসিক তথ্যসমৃদ্ধ মূল্যবান গ্রন্থ। হাসান হাফিজুর রহমান প্রকাশ করেছেন সংকলন। সবকিছু ছাপিয়ে মহৎ সৃষ্টি হয়ে উঠেছে আব্দুল গাফফার চৌধুরীর কালজয়ী এ-কবিতা বা গান।
আবদুল গাফফার চৌধুরী তাঁর সৃষ্টি সম্ভারের জন্য পেয়েছেন বাংলা একাডেমি পুরস্কার, একুশে পদক, স্বাধীনতা পদক সহ দেশে বিদেশে অসংখ্য পুরস্কার। এসব পুরস্কারের চেয়ে শ্রেষ্ঠ একটি পুরস্কার তিনি পেয়েছেন। ভাষা আন্দোলনের মিছিলে অংশগ্রহণ করার কারণে পুলিশের লাঠিচার্জে কার্জন হলে অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেলে তাঁকে ধরাধরি করে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। জ্ঞান ফিরলে তিনি দেখতে পান তাঁর পায়ে বরফ ঘষে শুশ্রূষা করছেন জ্ঞান তাপস, বহুভাষাবিদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, ভাষা আন্দোলনের প্রারম্ভ সৈনিক ডঃ মুহাম্মদ শহিদুল্লাহ। ডঃ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর সেবাই আবদুল গাফফার চৌধুরীর জীবনে পৃথিবীশ্রেষ্ঠ পুরস্কার।

পূর্ববর্তী নিবন্ধহাইকু কবিতা
পরবর্তী নিবন্ধরউফাবাদে মানসিক প্রতিবন্ধী স্কুলে খাবার বিতরণ