আগস্ট আমার কাছে বেদনার মাস। আমার বাবা আগস্টে মৃত্যুবরণ করেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুবার্ষিকী আগস্টে এবং বঙ্গবন্ধুর হত্যার প্রথম প্রতিবাদকারী মৃত্যুর মাস আগস্ট।
স্বাধীনতার পূর্বে পটিয়ার ধলঘাট ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য (১৯৫৮) জগদীশ চৌধুরী। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের দীপ্তি আমার পিতা নিজের আদর্শের মাঝে ছড়িয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুর হত্যার প্রথম প্রতিবাদী কণ্ঠ মৌলভী সৈয়দ। আত্মগোপনে ছিলেন আমাদের বাড়িতে। মৌলভী সৈয়দ আমাদের পরিবারের অস্তিত্বের অংশ। আমাদের ঘর, চৌধুরীর পাকা ঘাট, চৌধুরীর ব্রীজ বা সেতু (ধলঘাটের তেকোটা-গৈড়লা সংযোগের সেতু সংলগ্ন) তিনিই বসে থাকতো। যে সেতু দিয়ে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের অগ্রনায়ক মাস্টারদা সূর্য সেন যাওয়া-আসা করতেন। প্রত্যক্ষদর্শী ধলঘাট ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি এমরান ভাইয়ের মুখে মৌলভী সৈয়দের সেই স্মৃতিচারণ শুনে অভিভূত হলাম। চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দেবব্রত দাশ দেবুদা বলেন, আমি তেকোটা অনেক বার এসেছি মৌলভী সৈয়দের সাথে দেখা করতে। ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন, ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে এবং ৭৫ পরবর্তী সময়ে সক্রিয় আমাদের পরিবার এবং আমার পিতা জগদীশ চৌধুরী। সমৃদ্ধ ইতিহাস ও আদর্শ দিয়ে আমার ভিত রচিত।
১৯৭৩ সালে জাতীয় চার নেতার অন্যতম, তৎকালীন বাণিজ্য মন্ত্রী এ এইস এম কামরুজ্জামানকে ধলঘাটের বৌদ্ধ সেবাসদনে প্রধান অতিথি হিসেবে আনেন এবং তাঁত শিল্প ভিত্তি প্রস্তর দেন বাণিজ্যমন্ত্রী। যাতে ছয়টি পেণ্ডুলাম মেশিন প্রদান করা হয় এবং বাংলাদেশ বৌদ্ধ সেবাসদন সোসাইটি নামে একটি সরকারি রেজিস্ট্রেশন প্রদান করেন।
ধলঘাট ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক থাকাকালীন (২০০৪-২০০৬) আওয়ামী লীগে প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক পুলিন দে নাগরিক শোকসভা কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে জগদীশ চৌধুরীর সভাপতিত্বে দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে তৎকালীন মন্ত্রী এম এ মান্নান, মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব মোছলেম উদ্দিন আহমদ এর নেতৃত্বে বিশাল আয়োজন সম্পন্ন করেন। আমার বাবা ছিলেন এমনই একজন যিনি সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে ছিলেন অনন্য। সমাজের উন্নয়ন ও দেশ মাতৃকার সেবায় তিনি কাটিয়েছেন আজীবন। আজ আমাদের কাছে তিনি কেবলই স্মৃতি। পরম সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা বাবা যেন নির্বান লাভ করেন।