বান্দরবান পৌরসভা নির্বাচনে ত্রিমুখী লড়াইয়ের ইঙ্গিত দিচ্ছে ভোটাররা। নৌকার প্রার্থী মো. ইসলাম বেবী, ধানের শীষের প্রার্থী মো. জাবেদ রেজা এবং নারিকেল গাছ প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. নাছির উদ্দিনের মধ্যে প্রচার-প্রচারণার লড়াইটাও জমে উঠেছে।
নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির প্রার্থীর বিরোধী নেতাকর্মীরা গোপনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে ততই সক্রিয় হচ্ছেন।
আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির দলীয় অন্তঃকোন্দলে স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. নাছির উদ্দিনের ভোট ব্যাংক ভারী করছে বলে দাবি স্থানীয়দের।
পোস্টার আর লিফলেটে ছেয়ে গেছে পৌরসভার নয়টি ওয়ার্ডের রাস্তা-ঘাট এবং হাট-বাজার।
আজ শনিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) নির্বাচনী আচরণবিধি লংঘনের দায়ে নৌকা এবং নারিকেল গাছ প্রতীকের ২ মেয়র প্রার্থীকে জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের মেম্বার পাড়া এলাকায় আচরণবিধি না মেনে সকালবেলায় প্রচার-প্রচারণায় হ্যান্ডমাইক ব্যবহার করায় নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মো. ইসলাম বেবীর সমর্থকদের ৫ হাজার টাকা এবং নারিকেল গাছ প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. নাছির উদ্দিনের সমর্থকদের ৩ হাজার টাকা জরিমানা করেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কায়েসুর রহমান।
প্রার্থী ও ভোটাররা জানায়, আজ শনিবার আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. ইসলাম বেবী প্রচারণা-গণসংযোগ চালিয়েছেন মেম্বারপাড়া, ওয়াবদাব্রীজ সহ আশপাশের এলাকায়।
তখন তার সাথে ছিলেন ৮নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী হাবিবুর রহমান খোকন (টেবিল ল্যাম্প), ৭,৮,৯ মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থী শাহানারা আক্তার (চশমা)। এছাড়াও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আব্দুর রহিম চৌধুরী, আওয়ামী লীগের পৌরশাখা সাধারণ সম্পাদক সামশুল আলম সহ আওয়ামী লীগ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
অপরদিকে বিএনপি মনোনীত ধানের শীষের প্রার্থী ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. জাবেদ রেজা প্রচারণা ও গণসংযোগ চালিয়েছেন পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের বনরুপা পাড়া সহ আশপাশের এলাকাগুলোতে। তার সাথে জেলা বিএনপির সভানেত্রী মাম্যাচিং, সাংগঠনিক সম্পাদক জসিম উদ্দিন, স্বেচ্ছাসেবকদল নেতা রিটল বিশ্বাস সহ সংগঠনের শীর্ষ নেতাকর্মীরা।
অন্যদিকে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ সমর্থিত নারিকেল গাছ প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. নাছির উদ্দিন প্রচারণা ও গণসংযোগ চালিয়েছেন মেম্বার পাড়া সহ আশপাশের এলাকাগুলোতে।
প্রার্থীর সাথে ছিলেন নাগরিক পরিষদের ৮নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী মো. কামরুল হাসান বাচ্চু (উট পাখি) এবং ৭,৮,৯ মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থী মোসা. রাহিমা বেগম (আনারস) সহ সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
অপরদিকে নয়টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থীরাও ছুটে বেড়াচ্ছে ভোটারদের ঘরে ঘরে। বসে নেই প্রার্থীদের আত্মীয়স্বজনরাও। জোরে শোরে চলছে প্রার্থীদের মাইকিং। গণসংযোগ, পথসভা, উঠান বৈঠকে আশ্বাস-প্রতিশ্রুতি দেয়ার মাধ্যমে ভোটারদের মন জয়ের চেষ্টা চালাচ্ছেন।
নির্বাচন অফিসের তথ্যমতে, ১৯৮৪ সালে প্রতিষ্ঠিত বান্দরবান পৌরসভার আয়তন ২৫.৮৮ বর্গ কিলোমিটার। মোট ভোটার সংখ্যা হচ্ছে ২৯ হাজার ৭২৯ জন। তাদের মধ্যে পুরুষ ১৬ হাজার ৬০৯ জন এবং নারী ১৩ হাজার ১২০ জন। ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ১৩টি, বুথকক্ষের সংখ্যা থাকবে ৮১টি। আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। মেয়র পদে লড়ছেন ৫ জন প্রার্থী। কাউন্সিলর পদে ৯টি ওয়ার্ডে ২৯ জন এবং সংরক্ষিত তিনটি পদে ৭ জন নারী প্রার্থী লড়ছেন।
রিটার্নিং অফিসার ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা রেজাউল করিম জানান, নির্বাচনী আচরণবিধি লংঘনের অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। মাঠে রয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে প্রয়োজনীয় সব ধরনের ব্যবস্থাই গ্রহণ করা হচ্ছে।