বানের পানিতে তলিয়ে যাওয়া দুই শিশু ও এক বৃদ্ধের মরদেহ উদ্ধার

লোহাগাড়া দোহাজারী সাতকানিয়া ।। নিখোঁজ আরও চার

লোহাগাড়া, চন্দনাইশ ও বাঁশখালী প্রতিনিধি | বৃহস্পতিবার , ১০ আগস্ট, ২০২৩ at ৪:৪৬ পূর্বাহ্ণ

বানের পানির স্রোতে তলিয়ে গিয়ে নিখোঁজ হওয়া লোহাগাড়ার আমিরাবাদে বৃদ্ধ এবং সাতকানিয়া ও দোহাজারীতে দুই শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। লোহাগাড়ায় উদ্ধার বৃদ্ধের নাম আসহাব মিয়া (৬০)। গতকাল বুধবার সকাল ১০টার দিকে পদুয়া ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের চুনতি পাড়ার এক ব্রিজের পাশ থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সাতকানিয়ায় উদ্ধার শিশুর নাম জন্নাতুল ফেরদৌস ()। সে দক্ষিণ চরতীর ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মো. সেলিমের কন্যা। এ শিশুটি মঙ্গলবার নৌ ডুবির শিকার হয়েছিল। এ ঘটনায় তার ভাইসহ এখনও দুই শিশু ও এক ব্যক্তি নিখোঁজ রয়েছে। দোহাজারীতে উদ্ধার শিশুর নাম মো. আনাচ। সে মঙ্গলবার দাদার সঙ্গে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যাচ্ছিল। বানের স্রোতে পড়ে দুইজনই তলিয়ে যায়। একদিন পর শিশুটির মরদেহ উদ্ধার হলেও দাদা এখনও নিখোঁজ রয়েছে।

লোহাগাড়া প্রতিনিধি জানান, গত সোমবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে তারা পিতাপুত্র পদুয়া তেওয়ারিহাট বাজার থেকে চট্টলাপাড়া বাড়িতে যাচ্ছিলেন। এসময় ঘটনাস্থলে পানির স্রোতে তারা তলিয়ে যায়। এর কিছুক্ষণ পর ঘটনাস্থলের অদূরে বৃদ্ধের ছেলেকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হলেও নিখোঁজ থাকে পিতা আসহাব মিয়া। আজ বুধবার সকালে বানের পানিতে মাছ ধরতে স্থানীয়রা জাল মারলে তার মরদেহ পাওয়া যায়। পরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিবারের লোকজন তার মরদেহ শনাক্ত করেন।

আমিরাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম ইউনুচ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, বানের পানির স্রোতে নিখোঁজ আসহাব মিয়ার মরদেহ পাওয়া গেছে। একইদিন দুপুরে নামাজে জানাজা শেষে সামাজিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়েছে।

বাঁশখালী প্রতিনিধি জানান, সাতকানিয়া উপজেলায় চরতী ইউনিয়নের দক্ষিণ চরতী এলাকায় বন্যার পানিতে নৌ ডুবিতে নিখোঁজ চার জনের মধ্যে জন্নাতুল ফেরদৌস () এর লাশ গতকাল বুধবার বিকেলে দুরদুরি এলাকা থেকে উদ্ধার করেছে।

স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, টানা কয়দিনের প্রবল বর্ষণের ফলে সাতকানিয়ার বেশ কিছু এলাকায় আশংকাজনকভাবে পানি বৃদ্ধি পায়। এ পানিতে নৌকা নিয়ে নিজ নিজ গন্তব্যে যাওয়ার সময় মঙ্গলবার বিকেলে চরতী ইউনিয়নের চরতী থেকে সুইপুরা যাওয়ার সময় চরতী ও সুইপুরার মধ্যবর্তী এলাকায় নৌকা ডুবির ঘটনা ঘটে। এ সময় নৌকায় থাকা বেশ কয়জনকে উদ্ধার করা সম্ভব হলেও নিখোঁজ থাকে দক্ষিণ চরতীর ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মো. সেলিমের কন্যা জন্নাতুল ফেরদৌস (), মো. শহিদুল ইসলাম (), মো. আরিফের কন্যা সানজিদা আক্তার () ও আবদুর রহিম (৪৫) নামে এক ব্যক্তি।

নিখোঁজ শিশু সানজিদা আক্তারের পিতা আরিফুল ইসলাম বলেন, সানজিদাকে নিয়ে তিনি দক্ষিণ চরতীর শ্বশুরবাড়ি গিয়েছিলেন। বিকেলের দিকে নৌকায় নিজ বাড়ি কাঞ্চনায় ফেরার সময় স্রোতের তোড়ে নৌকাটি ডুবে যায়। অনেক খোঁজাখুঁজির পরও কন্যার সন্ধান মেলেনি।

চন্দনাইশ প্রতিনিধি জানান, স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার স্রোতে দাদানাতি ভেসে যাওয়ার ৩১ ঘণ্টা পর নাতির লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেল ৪টার দিকে দোহাজারী রেলওয়ে স্টেশন সংলগ্ন মাদরাসার পাশে স্থানীয়রা বন্যার পানিতে জাল দিয়ে মাছ শিকারের সময় একটি গাছে আটকে থাকা অবস্থায় তার লাশ উদ্ধার করে। শিশুটির নাম মো. আনাচ (১০)। তার দাদা আবু ছৈয়দ (৮৩) এখনো নিখোঁজ রয়েছে। গত মঙ্গলবার দোহাজারী পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডস্থ আফজল সওদাগর বাড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিখোঁজ আবু ছৈয়দের ছেলে মাওলানা মোক্তার হোসাইন শিবলী জানান, বন্যার পানি বাড়তে থাকায় দোহাজারী পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ড আফজল সওদাগর বাড়ি এলাকা থেকে তার পিতা আবু ছৈয়দ নাতি আনাচকে নিয়ে জামিজুরীস্থ তার বাসায় যাচ্ছিলেন। পথে তারা বন্যার স্রোতে পড়ে ভেসে যায়। এরপর থেকে তারা নিখোঁজ ছিল।

পূর্ববর্তী নিবন্ধভাটিয়ারি শীপ ব্রেকার্সের চেয়ারম্যানসহ তিনজনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা
পরবর্তী নিবন্ধযাঁর ধ্যান-জ্ঞান, স্বপ্ন-কর্ম সবই ছিল জনগণের মঙ্গলের জন্য