বাদ পড়ল কল্পলোক, বাকলিয়া

ওয়াসার ভান্ডালজুড়ি প্রকল্প ।। ব্যয় বেড়ে যাওয়ার অজুহাত ঠিকাদারের শহর অংশে পাইপলাইন বসানো হয়নি

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ১১ জানুয়ারি, ২০২৩ at ৪:১০ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম ওয়াসার ভান্ডালজুড়ি প্রকল্পের পানি নগরীর বাকলিয়া কল্পলোক আবাসিক এলাকায় সরবরাহের কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত এই এলাকা বাদ পড়েছে। ঠিকাদারের অনিচ্ছার কারণে কল্পলোক আবাসিক এলাকাসহ বাকলিয়া এলাকার বিশাল অংশের জনগণ এই প্রকল্পের পানি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। কাজের ব্যয় বেড়ে যাওয়ার কথা বলে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার বেঁকে বসায় শহরের অংশে পাইপলাইন বসানো হয়নি। এখন এই প্রকল্প থেকে উপশহরগুলোতে বিশেষ করে পটিয়া, বোয়ালখালী, কর্ণফুলী ও আনোয়ারা উপজেলার আবাসিকসহ বিভিন্ন শিল্প কারখানায় পানি সরবরাহ দেয়ার জন্য পাইপলাইন বসানো হয়েছে।

প্রকল্প পরিচালকের দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে শুরু হওয়া এ প্রকল্পের মেয়াদ চলতি বছরের জুন পর্যন্ত। মেয়াদের ভেতরে প্রকল্পের কাজ শেষ হবে এবং বোয়ালখালী, পটিয়া, কর্ণফুলী ও আনোয়ারা শিল্পাঞ্চলে পানি যাবে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প পরিচালক। ইতোমধ্যে পুরো প্রকল্পের ১৩০ কিলোমিটার পাইপলাইনের কাজ শেষ হয়েছে। ভান্ডালজুড়ি প্রকল্প এলাকায় ট্রিটমেন্ট প্লান্টের কাজ শেষ পর্যায়ে। বোয়ালখালীর ভান্ডালজুড়ি প্রকল্প এলাকা থেকে পটিয়া পর্যন্ত ২৫ কিলোমিটার সরবরাহ লাইন বসানোর কাজ শেষ। অন্যদিকে পটিয়া পৌরসভাসহ আশপাশের এলাকায় ৬০ কিলোমিটার সার্ভিস লাইনের কাজও শেষ হয়েছে। বোয়ালখালী পৌর এলাকায়ও পাইপলাইন বসানোর কাজ শেষ হয়েছে।

চট্টগ্রাম ওয়াসার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ মাহবুবুল আলম আজাদীকে বলেন, ভান্ডালজুড়ি প্রকল্পের পানি এখন শহরে আসছে না। পরে যদি এই প্রকল্পের পানি শহরের অংশে দেয়া হয় তাহলে আমরা কল্পলোকসহ বাকলিয়ায় সংযোগ দেব। এখন আপাতত বোয়ালখালী, পটিয়া, কর্ণফুলী ও আনোয়ারাসহ শিল্প এলাকাগুলোতে দেয়া হবে।

তিনি বলেন, ভান্ডালজুড়ি পানি সরবরাহ প্রকল্পের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। এখন ইলেকট্রিকের কাজ চলছে। পাইপলাইনের কাজও প্রায় শেষ হয়েছে। শুধুমাত্র পটিয়া বাইপাস এলাকায় ১ কিলোমিটারের মতো কাজ বাকি আছে। উৎপাদনে আসতে ৪ মাসের মতো লাগতে পারে।

চট্টগ্রাম ওয়াসা সূত্রে জানা গেছে, ২০০৯ সালে কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় দাতা সংস্থা কোরিয়ান ইন্টারন্যাশনাল কোঅপারেশন এজেন্সি (কোইকা) চট্টগ্রামের পানি সরবরাহ বৃদ্ধি ও পয়ঃনিষ্কাশনের জন্য একটি মাস্টার প্ল্যান তৈরি করে। ওই প্ল্যান অনুযায়ী চট্টগ্রাম ওয়াসা বিভিন্ন প্রকল্প হাতে নেয়। তার মধ্যে বোয়ালখালী ভান্ডালজুড়ি পানি সরবরাহ প্রকল্প ছিল অন্যতম।

পরে চট্টগ্রাম ওয়াসা দৈনিক ৬ কোটি লিটার পানি সরবরাহের জন্য ওই প্রকল্পটি গ্রহণ করে। এ প্রকল্পের জন্য কর্ণফুলী নদী থেকে পানি এনে প্রকল্পে শোধন করে ওই পানি চার উপজেলা পটিয়া, আনোয়ারা, বোয়ালখালী ও কর্ণফুলী উপজেলার শিল্পাঞ্চলে ৮০ ভাগ, আবাসিকের জন্য ২০ ভাগ পানি সরবরাহের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

প্রকল্পটি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০১৫ সালের ২৬ নভেম্বর চট্টগ্রাম ওয়াসা ও কোরিয়ান এক্সিম ব্যাংকের সাথে ১ হাজার ৩৬ কোটি টাকার একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। পুনরায় সমীক্ষা শেষে প্রকল্প ব্যয় সংশোধন করে ১ হাজার ৯৯৫ কোটি টাকা করা হয়। কোরিয়ান এক্সিম ব্যাংকের সাথে নতুনভাবে চুক্তি সম্পাদনের পরে প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। প্রকল্প ব্যয়ের মধ্যে কোরিয়ান এক্সিম ব্যাংক ৮২৫ কোটি টাকা ও অবশিষ্ট টাকা বাংলাদেশ সরকারের তহবিল থেকে দেয়া হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধট্রেনিং স্কুলে অনুশীলনে মিসফায়ারে ৩ কনস্টেবল আহত
পরবর্তী নিবন্ধচবিতে ভর্তি কার্যক্রম শেষ হওয়ার ১ মাস পরেও খালি ২৩৮ আসন