বাজারে বেড়েছে দেশী পেঁয়াজ

তবুও পাইকারিতে কেজি প্রতি ৩৫ টাকা, খুচরায় ৫০ কঠোর তদারকির দাবি ভোক্তাদের

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ২৩ মে, ২০২২ at ৫:৫৯ পূর্বাহ্ণ

সরবরাহ বৃদ্ধি হওয়ায় পাইকারিতে কমছে পেঁয়াজের দাম। তবে পাইকারিতে গত কয়েকদিন ধরে পেঁয়াজের দরপতন হলেও খুচরা বাজারে এর কোনো প্রভাব পড়ছে না। খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা বলছেন, এই মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রয়েছে। ব্যবসায়ীদের দোকান-গুদামে পেঁয়াজের মজুদ শেষের দিকে। এখন দেশী পেঁয়াজে পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। ফলে দামও কমতির দিকে রয়েছে। এদিকে গতকাল খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পেঁয়াজের দাম গত কয়েকদিনে ৫ টাকা দরপতন হয়েছে। বর্তমানে খাতুনগঞ্জের আড়তে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩২ টাকা কেজিতে। তবে খুচরা বাজারে বর্তমানে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। যা পাইকারি বাজারের তুলনায় কেজিতে ১৮ টাকা বেশি।

কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, বর্তমানে দেশে তাহেরপুরী, বারি-১ (তাহেরপুরী), বারি-২ (রবি মৌসুম), বারি-৩ (খরিপ মৌসুম), স্থানীয় জাত ও ফরিদপুরী পেঁয়াজ উৎপাদন হয়। ফলে বছরজুড়েই কোনো না কোনো জাতের পেঁয়াজ উৎপাদন হচ্ছে। দেশে বছরে পেঁয়াজের চাহিদা ২২ লাখ টন। এর মধ্যে ১৮ লাখ টন স্থানীয়ভাবে উৎপাদন করা হয়। আর আমদানি করা হয় বাকি চার লাখ টন। মূলত এই আমদানিকৃত চার লাখ টন পেঁয়াজ বাজারের ওপর খুব বড় প্রভাব ফেলে।

জানতে চাইলে চাক্তাইয়ের আফরা ট্রেডিংয়ের স্বত্বাধিকারী আলাউদ্দিন আলো বলেন, বাজারে দেশী পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। মাসের শুরুতে ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ হওয়ার পর সবখানে একটা আতঙ্ক কাজ করছিলো। এই আতঙ্কের কারণে মূলত হঠাৎ করে পেঁয়াজের দাম বেড়ে যায়। খাতুনগঞ্জের হামিদুল্লাহ মিয়া বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইদ্রিস দৈনিক আজাদীকে বলেন, গত কয়েকদিন ধরে পেঁয়াজের বাজার নিম্নমুখী। প্রত্যেক ব্যবসায়ীর দোকানে-গুদামে পর্যাপ্ত পেঁয়াজ রয়েছে। তবে বর্তমানে ভারতীয় পেঁয়াজের মজুদ প্রায় শেষের পথে। দেশী পেঁয়াজের আধিক্য রয়েছে। ফলে দাম কমছে। পেঁয়াজ কাঁচাপণ্য। চাইলেও বেশিদিন মজুদ করে রাখা যায় না। তারওপর এখন খুব বেশি গরম পড়ছে। গরমেও পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে যায়।

গতকাল নগরীর কয়েকটি খুচরা বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, খুচরা পর্যায়ে বর্তমানে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ৪৫ টাকায়। এছাড়া দুই সপ্তাহ আগে বিক্রি হয়েছে ৩৫ টাকায়। কাজীর দেউরি ভান্ডার স্টোরের খুচরা বিক্রেতা মো. মিজানুর রহমান বলেন, আমরা প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৫০ টাকায় বিক্রি করছি। পাইকারি থেকে দুই এক বস্তা পেঁয়াজ এনে বিক্রি করি। আমাদের এসব পেঁয়াজ আগের দরে কেনা। তাই পাইকারিতে দাম কমার সাথে সাথে কমিয়ে দিলে লোকসান দিতে হবে। পরবর্তীতে কম দামে কিনলে আমরা কম দামে বিক্রি করবো।

বেসরকারি চাকরিজীবী ফরিদ উদ্দিন বলেন, ভোগ্যপণ্যের প্রত্যেকটি পণ্যের দামই চড়া। চাল-ডাল, তেল থেকে শুরু করে এমন কোনো পণ্য নেই যে, দাম বাড়েনি। পণ্যের দাম বৃদ্ধির মধ্যে একমাত্র স্বস্তি ছিল পেঁয়াজের বাজার। কিন্তু গত দুই সপ্তাহ ধরে পেঁয়াজের দামও বাড়া শুরু করে। তবে শুনলাম, এখন পাইকারিতে দাম কমছে। কিন্তু এখন পাইকারির তুলনায় খুচরা বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ কিনতে হচ্ছে ১৮ টাকা বেশি দামে। এটা সম্পূর্ণ অস্বাভাবিক। আমরা প্রশাসনের কাছে অনুরোধ জানাবো-খুচরা পর্যায়ে পেঁয়াজের বাজারটা যেন তদারকি করা হয়। কারণ পাইকারির তুলনায় বড়জোর খুচরা বাজারে ৫-৭ টাকা বেশি হতে পারে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ২৯ কর্মকর্তা পেল উত্তরা মোটর্সের গাড়ি
পরবর্তী নিবন্ধসাকিবের কোম্পানিকে বিএসইসির নোটিশ