বাংলা বর্ণমালার প্রতি অসম্মান আর নয়

| বৃহস্পতিবার , ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ at ৭:১৪ পূর্বাহ্ণ

বাংলা আমাদের প্রিয় মাতৃভাষা। জন্মের পর থেকে শিশু তার মায়ের মুখ থেকে যে ভাষা শেখে তাই মাতৃভাষা। আমরা বাঙালি। তাই আমাদের মাতৃভাষা বাংলা। ১৯৫২ সালে পাকিস্তান সরকার সংখ্যাগরিষ্ঠ বাঙালির মাতৃভাষা বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা না করে সংখ্যালঘিষ্ঠের মাতৃভাষা উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করার দুরভিসন্ধি করছিল। যা বাঙালিদের জন্য ছিল চরম অপমান। এই অপমানের প্রতিবাদস্বরূপ মাতৃভাষা বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি বাংলা মায়ের দামাল ছেলেরা আন্দোলন করে। এই আন্দোলনে পাকিস্তানের পুলিশ গুলি চালায়। এই গুলিতে নিহত হন সালাম, রফিক, জব্বার, বরকত শফিকসহ নাম না জানা আরও অনেকে। যাদের রক্তের বিনিময়ে বাংলা পায় রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা। শুধু তাই নয়, ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কো সাধারণ অধিবেশনে একুশে ফেব্রুয়ারি ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে পালনের স্বীকৃতি পায়। যে দিবসটি কেবল ভাষা শহীদ দিবস হিসেবে পালন হতো, আজ তা ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’। এই দিনটি দেশ-বিদেশের সকল মানুষ আনন্দের সাথে পালন করে। এর ফলে অন্যান্য দেশের মানুষও আমাদের দেশের প্রতি ও ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়। আমাদের উচিত বাংলার সাহসী বীরদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এই মাতৃভাষা বাংলাকে যথার্থ সম্মান ও শ্রদ্ধা করা, এর মর্যাদা রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব। কিন্তু আমাদের দেশের অনেক জায়গায় বাংলা ভাষার অবমাননা করা হচ্ছে।
দেশের অনেক জায়গায় যেখানে- সেখানে বাংলা ভাষায় লেখা কাগজ ফেলে দেওয়া হয় এবং এটি মানুষের পায়ের নিচে দলিত হয়। এটি আমাদের মাতৃভাষার প্রতি চরম অবমাননা। বিভিন্ন মার্কেটের সিঁড়ি, ঘরবাড়ির সিঁড়ি, রাস্তায় বাংলা বর্ণমালা লেখা থাকে। এটি মানুষের পায়ের নিচে দলিত হয়। যা বাংলা ভাষার প্রতি চরম অপমান। বাংলা ভাষায় লেখা কাগজকে অনেকে ঠোঙ্গা বানিয়ে ব্যবহার করে। এটির মাধ্যমে বাংলা ভাষার প্রতি অপমান করা হয়। যা বন্ধ করা অত্যন্ত জরুরি। এইসব কাজ বন্ধ করা না গেলে আমরা কখনই সত্যিকার অর্থে বাঙালি হতে পারব না। রাস্তায়, মার্কেটের সিঁড়ি এবং ঘর বাড়ির সিঁড়িতে বাংলা বর্ণমালায় লেখা কিছু যাতে না থাকে সেদিকে আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে। পবিত্র বাংলা ভাষার বর্ণমালা যেন মানুষের পায়ের নিচে দলিত না হয় সেদিকেও আমাদের সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। যে বাংলা ভাষার জন্য বাংলার দামাল ছেলেরা জীবন উৎসর্গ করেছেন সেই বাংলা ভাষা ও পবিত্র বর্ণমালার অবমাননা যাতে না হয় এবং বাংলা ভাষাকে যেন যথাযোগ্য সম্মান দেওয়া হয় সেদিকে আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে। মনে রাখবেন, বাংলাভাষা আমাদের। এর মর্যাদা আমাদেরকেই রক্ষা করতে হবে।
নূরতাজ তাফহিমা খান, শিক্ষার্থী (দশম শ্রেণি- বিজ্ঞান), অপর্ণাচরণ সিটি কর্পোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, নন্দনকানন, চট্টগ্রাম।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকৌতুক কণিকা
পরবর্তী নিবন্ধকরোনা মহামারী থমকে দিয়েছে শিক্ষা ব্যবস্থাকে