বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেছেন, আমাদের একটি মজ্জাগত দোষ হল, ভালো জিনিসটা দেখি না। কালো দাগটা দেখি। এক শ্রেণির বন্ধু আছে, যারা ভালো খবর চোখে দেখেন না। তিনি বৈশ্বিক সংকটের যে প্রভাব বাংলাদেশের জনজীবনে পড়েছে, তা সাময়িক দাবি করে তা সামনে আনার সমালোচনা করেন।
গত ২৬ মার্চ বিকালে স্বাধীনতা দিবস পালনপোলক্ষে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে নগরীর এক কনভেশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নত–সম্পৃদ্ধশালী দেশের পথে এগিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে হুইপ স্বপন বলেন, চট্টগ্রামে এসে টেলিভিশনে একটি সংবাদ দেখলাম। একজন দিনমজুরের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হচ্ছে, তিনি মাছ–মাংস কেনার স্বাধীনতা চান। তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে আমার দেশের মানুষ মাছ–মাংস কেনার স্বপ্ন দেখতে পারেনি। তিন বেলা পেট ভরে ভাত খাবার স্বপ্ন দেখতে পারেনি। যারা বয়োজ্যেষ্ঠ আছেন, তারা বলতে পারবেন, এক কেজি চাল রান্না করে ৫–৮ জন খেতেন। আবার পরের দিনের জন্য কিছু রাখতেন। সেই চিত্র বাংলাদেশ পেছনে ফেলে এসেছে। এখন বাংলাদেশ উন্নয়ন আর সমৃদ্ধির পথে এগুচ্ছে। তিনি বলেন, সমপ্রতি তেল সমৃদ্ধ দেশগুলো তেলের দাম বাড়ানোয় সারা বিশ্বে খাদ্যের দাম বেড়েছে। মানুষের সাময়িক কষ্ট হচ্ছে। কিছু মিডিয়া এগুলো ফলাও করে প্রচার করে। সাদা চামড়ার লোক দেখলে মাইক নিয়ে দৌড়ায়। সে কোন পদের লোক, তা দেখে না। আমার লজ্জা লাগে। বন্ধুরা আমাদের পরামর্শ দিতে পারে, ভুল ধরিয়ে দিতে পারে, কিন্তু নির্দেশ দিতে পারে না।
হুইপ স্বপন বলেন, জাতির ‘সবচেয়ে বড় সম্পদ নাম শেখ হাসিনা’। যদি কোনো কারণে শেখ হাসিনার নেতৃত্ব বাংলাদেশ না থাকে, তাহলে আমাদের লক্ষ্য অর্জিত হবে কি? তাই আমাদের দায়িত্ব এমনভাবে কাজ করা, যাতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারি।
নগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, আমরা সম্মেলন করব, সম্মেলন করতেই হবে। সম্মেলনের মাধ্যমে মহানগর আওয়ামী লীগকে শক্তিশালী সংগঠনে পরিণত করব। আগামী দুই মাসের মধ্যে, এপ্রিল ও মে মাসের মধ্যে ওয়ার্ড সম্মেলন শেষ করবো। কারণ শোকের মাসে অগাস্টে আমরা জাতির পিতাকে হারিয়েছি। সে মাসে আমরা কোনো সম্মেলন করি না। সে কারণে জুলাইয়ের মধ্যে আমরা সব সম্মেলন শেষ করব। আপনাদের অনুরোধ সে লক্ষ্যে কাজ করুন। কোথাও যদি সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক না আসেন অথবা সম্মেলন করতে না চান, তাহলে সহ–সভাপতি ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সম্মেলন আয়োজন করবেন বলেন তিনি।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন। প্রধান অতিথির বক্তব্যের পর দেওয়া বক্তব্যে নাছির ওয়ার্ড ও থানা সম্মেলনের বিষয়ে তার অনড় অবস্থানের কথা জানান।
সভাপতির বক্তব্যে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দীন চৌধুরী বলেন, পবিত্র রমজানুল মোবারকের মধ্যেই আমরা স্বাধীনতা দিবস পালন করছি। যা আমাদের জন্য পরম সৌভাগ্যের। আমাদেরকে মনে রাখতে হবে, ক্ষমতায় ছিলাম, আছিও থাকবো। তবে আমাদেরকে পরিচ্ছন্ন হতে হবে। নেতৃত্বের আসনে ত্যাগী ও পরীক্ষিতরা আসতে হবে।
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আলহাজ্ব শফিকুল ইসলাম ফারুকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি আলহাজ্ব খোরশেদ আলম সুজন, এম. জহিরুল আলম দোভাষ, উপদেষ্টা শেখ মোঃ ইছহাক, সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ, শফিক আদনান, সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য এড. শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী, চন্দন ধর, মশিউর রহমান চৌধুরী, প্রমুখ।