বহুতল ভবন নির্মাণ হয়ে গেলেই সব সমস্যার সমাধান হবে : নওফেল

আউটডোরের টিকিট মূল্য ৫ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব বৈদ্যুতিক সাব-স্টেশন উদ্বোধন

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ২৮ ডিসেম্বর, ২০২১ at ৬:২২ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের আউটডোরে (বহিঃবিভাগে) চিকিৎসা নিতে আসা রোগীর টিকিট বা ইউজার ফি আরো ৫ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রস্তাব অনুমোদন হলে বর্তমান ইউজার ফি ৫ টাকার সাথে বাড়তি এই ৫ টাকা পরিশোধ করতে হবে রোগীদের। হাসপাতাল উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণ ফি বাবদ এ টাকা (বাড়তি ৫ টাকা) আদায়ের বিষয়ে প্রস্তাব করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে বিষয়টি যাচাই-বাছাইয়ে একটি কমিটি গঠনে অভিমত দেন
হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। পরে হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. আবুল হোসেন শাহীনকে প্রধান করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। ইউজার ফি বাড়ানোর প্রস্তাবনার বিষয়টি যাচাই-বাছাই করে হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির পরবর্তী বৈঠকের আগে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে কমিটিকে। গতকাল সোমবার হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় এ সংক্রান্ত প্রস্তাবনা ও এর প্রেক্ষিতে কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়।
সভাপতির বক্তব্যে ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেছেন, চট্টগ্রাম ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়নে সরকার যথেষ্ট আন্তরিক। কোভিডকালীন সারাদেশে চিকিৎসার সেবার দিক থেকে এ হাসপাতাল একটি বিশেষায়িত হাসপাতালে পরিণত হয়েছিল। জেনারেল হাসপাতালটি শহরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত। এ হাসপাতালকে ২৫০ শয্যা থেকে ৫০০ শয্যায় উন্নীত করে শীঘ্রই পূর্ণাঙ্গ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রূপান্তর করতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এজন্য গুরুত্ব বিবেচনা করে এখানে প্রথমত নতুন ১০ তলা বহুতল ভবন ও পরবর্তীতে ২০ তলা বিশিষ্ট বহুতল নির্মাণের অনুমোদনের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। একইসাথে প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির ব্যাপারেও মন্ত্রণালয়কে অবহিত করা হয়েছে। বহুতল ভবন নির্মাণ হয়ে গেলে পর্যায়ক্রমে সব ধরনের সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে।
তিনি বলেন, অবকাঠামোই শুধু হাসপাতাল নয়, চিকিৎসাসেবাই মূল বিষয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হাসপাতালের সার্বিক উন্নয়নে আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। জেনারেল হাসপাতালকে যেন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পরিণত করতে পারি সেই চেষ্টা চলছে। এ সরকারের মেয়াদে তা করতে পারবো বলে আশা করছি।
চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সেখ ফজলে রাব্বি হাসপাতালের বিরাজমান সমস্যা সমাধানে শিক্ষা উপমন্ত্রীর মাধ্যমে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এর আগে ফিতা কেটে হাসপাতালে স্থাপন করা বৈদ্যুতিক সাব-স্টেশন উদ্বোধন করেন শিক্ষা উপমন্ত্রী। পরে শিক্ষা উপমন্ত্রীর মাধ্যমে জেনারেল হাসপাতালের জন্য বেড ও অন্যান্য চিকিৎসা সরঞ্জামাদি প্রদান করেন চট্টগ্রাম ফিল্ড হাসপাতালের উদ্যোক্তা ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. বিদ্যুৎ বড়ুয়া।
স্বাগত বক্তব্য দেন, চট্টগ্রাম ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সেখ ফজলে রাব্বি। বক্তব্য দেন, বিএমএ, চট্টগ্রাম সভাপতি অধ্যাপক ডা. মুজিবুল হক খান, চসিক প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সেলিম আকতার চৌধুরী, চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী, চমেবির উপ-পরিচালক ডা. বিদ্যুৎ বড়ুয়া, জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. আব্দুর রব, সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. আবুল হোসেন শাহীন, হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য মোজাফফর আহমদ, কাউন্সিলর জহর লাল হাজারী, কাউন্সিলর রুমকি সেনগুপ্ত, পরিবার পরিকল্পনা চট্টগ্রামের উপ-পরিচালক সুব্রত কুমার চৌধুরী প্রমূখ। জেনারেল হাসপাতা ব্যবস্থাপনা কমিটির অন্যান্য সদস্যরা সভায় উপস্থিত ছিলেন।
চট্টগ্রাম ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের উপ-পরিচালক ও তত্ত্বাবধায়ক ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, জেনারেল হাসপাতালে মোট ১৮টি আইসিইউ বেড রয়েছে। এ বেডগুলো আগে করোনা আক্রান্ত মুমূর্ষু রোগীর জন্য ব্যবহার হতো। বর্তমানে করোনার সংক্রমণ পরিস্থিতি অনেকটা নিয়ন্ত্রণে থাকায় হাসপাতালে রোগীর সংখ্যাও কমেছে। ফলে আইসিইউর অধিকাংশ বেড শূন্য থাকছে। কিছু কিছু নন-কোভিড রোগীর আইসিইউ বেড জরুরি। এ বিষয়টি বিবেচনায় এনে এখন থেকে ১০টি আইসিইউ বেডে নন-কোভিড জটিল রোগীদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। বাকী ৮টি আইসিইউ বেড কোভিড ইউনিটে রোগীদের জন্য রাখা হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ৫০ হাজার টাকা চাঁদা না পেয়ে পর্যটককে ধর্ষণ
পরবর্তী নিবন্ধযেভাবে পাওয়া যাবে চট্টগ্রামে আজ শুরু বুস্টার ডোজ