বসন্ত জড়িয়ে ভালোবাসা দিবস, চাঙা ফুলের বাজার

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ at ৫:৫৮ পূর্বাহ্ণ

আজ পহেলা ফাল্গুন। ঋতুরাজ বসন্ত এলেই মনে পড়ে যায় রবীন্দ্রনাথের সেই পরিচিত গান ‘আহা আজি এ বসন্তে, এত ফুল ফুটে,/এত বাঁশি বাজে, এত পাখি গায়।’ বসন্ত মানে বাঙালির প্রাণের উৎসব। এদিন তরুণ-তরুণীরা বাসন্তী রঙের পাঞ্জাবি-শাড়ি পরে বসন্ত উৎসবে সামিল হয়। বিশেষ করে তরুণীরা মাথায় রিং ও খোঁপায় গাঁদা ফুল গুঁজে দিনভর খুনসুটিতে মেতে থাকে। অপরদিকে ভালোবাসা দিবসে প্রেমিক-প্রেমিকা ও দম্পতিরা লাল শাড়ি-পাঞ্জাবি ও সেলোয়ার-কামিজ পরে দিনটি উপভোগ করে থাকেন। তবে ভালোবাসা দিবসের প্রধান অনুষঙ্গ হচ্ছে ফুল। ফুল ছাড়া ভালোবাসা দিবসকে যেন কল্পনা করা যায় না। এই দিবস দুটিকে কেন্দ্র করে নগরীর ফুলের দোকানগুলো ফুলে ফুলে ভরে গেছে। ফুল ব্যবসায়ীরা বলছেন, বসন্ত উৎসবে সাধারণত গাদা ফুলের চাহিদাই বেশি থাকে। তবে ফুলের প্রধান বিক্রি হয় ভালোবাসা দিবসে। স্বাভাবিকভাবে ভালোবাসার প্রতীক ‘লাল গোলাপ’ এর চাহিদা থাকে সবচেয়ে বেশি।
গতকাল নগরীর কয়েকটি ফুলের বাজারে ঘুরে দেখা যায়, দোকানগুলোতে বাহারি রঙের ফুলের পসরা সাজিয়ে বসেছেন বিক্রেতারা। দোকানের কর্মচারীরা এসব ফুলে পানি ছিটিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। কেউ আবার ফুলের গহনা, মাথার রিং ও খোঁপায় পরার নানান ধরনের ফুলের লহর তৈরি করছেন।
ফুল বিক্রেতারা জানান, বসন্ত উৎসব ও ভালোবাসা দিবসে গাঁদা এবং গোলাপ ফুলের প্রচুর চাহিদা থাকে। গোলাপের মধ্যে রয়েছে লাল, সাদা, অরেঞ্জ, হলুদ রঙের গোলাপ। ভালোবাসা দিবসে লাল গোলাপের চাহিদা একটু বেশি থাকে। প্রতিটি দেশী গোলাপ বিক্রি হচ্ছে ১৫-২০ থেকে টাকা দরে। তবে চীনা গোলাপ বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৫০ টাকায়। প্রতিটি চীনা লিলি ৩৫০-৪০০ টাকা, দেশী চন্দ্রমল্লিকা স্টিক ২০-২৫ টাকা, জারবেরা প্রতিটি ২০-২৫ টাকা, প্রতিটি দেশি গ্লাডিওলাস ২০-৩০ টাকা, প্রতি বান্ডেল জিপসি ফুল ৪০-৫০ টাকা, রজনীগন্ধা স্টিক ১৫-২০ টাকা, ফুলের লহর ১৫-২০ টাকা, মাথার রিং ১০০-১৫০ টাকা, গাঁজরা ফুল ৪০-৫০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে।
ব্যবসায়ীরা জানান, ভালোবাসা দিবসকে কেন্দ্র করে তরুণ-তরুণীরা চন্দ্রমল্লিকা, জারবেরা, গ্লাডিওলাস, লিলি ফুলই বেশি কিনছে। বসন্ত উৎসবের জন্য তরুণীরা গাঁদা ফুলের পাশাপাশি মাথার রিঙের অর্ডার দিয়েছে বেশি। গত বছর করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে ফুলের বাজার হারায় ব্যবসায়ীরা। তবে এ বছর করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় বেচাবিক্রির অবস্থাও ভালো।
জানতে চাইলে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ইসরাত নুর মাহিয়া বলেন, ভালোবাসার আসলে কোনো নির্দিষ্ট দিন হয় না। তারপরেও ১৪ ফেব্রুয়ারিকে ভালোবাসা দিবস হিসেবে জেনে আসছি। আমার ভালোবাসা আমার আব্বু-আম্মু, তাই তাদের দুজনকে ফুলের শুভেচ্ছা জানানোর জন্য ফুল কিনতে এসেছি। এছাড়া নিজের জন্য একটি মাথার রিং অর্ডার দিয়েছি। হলুদ শাড়ি পরে বন্ধুদের সাথে বসন্ত উৎসব পালন করার পরিকল্পনা আছে।
নগরীর মোমিন রোড়ের খাজা ফ্লাওয়ার নার্সারির স্বত্বাধিকারী মো. মনসুর আলম বলেন, করোনা পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হওয়ায় ফুলের বেচাবিক্রিও বেড়েছে। এটি ব্যবসায়ীদের জন্য আনন্দের বিষয়। এ বছর বসন্ত ও ভালোবসা দিবসকে কেন্দ্র করে ফুল ব্যবসায়ীরা পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নিয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধগণতন্ত্রের প্রতি অশ্রদ্ধা থেকেই বিএনপির সংলাপ বর্জন : তথ্যমন্ত্রী
পরবর্তী নিবন্ধ৭৮৬