বর্ষাকালে শিশুর পানিতে ডুবে মারা যাওয়া: প্রয়োজন সচেতনতা

প্রতিমা দাস | শুক্রবার , ৮ জুলাই, ২০২২ at ৭:২৮ পূর্বাহ্ণ

কিছু দিন আগে পটিয়া থানার ১০ নং ধলঘাট ইউনিয়ন এর ৫নং ওয়ার্ডের স্থায়ী বাসিন্দা সুজন মল্লিকের বড় ছেলে পানিতে ডুবে মারা যায়। সে দক্ষিণ সমুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র। তার নাম নিশান মল্লিক, বয়স ৯ বছর, স্কুল চলাকালীন সময়ে খেলতে গিয়ে পুকুরে পড়ে মারা যায়। তারপর স্কুল ছুটির পর ছেলে বাড়িতে না আসাতে পরিবারের সবাই চারিদিকে খোঁজ নেয়া শুরু করে। পরবর্তীতে স্থানীয় লোকজন নিশানকে পুকুর থেকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করে। তখন এক মর্মান্তিক দৃশ্যের অবতারণা হয়। সন্তান হারানো মায়ের কান্নায় আশেপাশে বাতাস ভারী হয়ে উঠে। গ্রামে বড় হওয়া অনেকেই জানেন, বর্ষার এই সময়ে গ্রাম বাংলায় বেশীরভাগ শিশুরা পানিতে ডুবে মারা যায়। বাবা, মা তাদের কাজকর্ম নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। সন্তানকে সারাক্ষণ পাহারা দেয়া তাদের পক্ষে সম্ভব হয় না। সেই সুযোগে গ্রামের বাড়িতে অবারিত মাঠে পুকুরে খেলতে গিয়ে পানিতে পড়ে ডুবে যাওয়ার মৃত্যুটা ঘটে বেশি।
কিন্তু দুর্ভাগ্য হলেও সত্যি, অসতর্কতা, মা-বাবার দায়িত্বহীনতা এর জন্য দায়ী। বাচ্চা পানিতে পড়ে ডুবে যাওয়ার সময় কেউ দেখলে হয়তো বেঁচে যায় আর তা না হলে জলের স্রোতে হারিয়ে গিয়ে মৃত্যুবরণ করে। তবে এই ব্যাপারে সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয় জোরালো ভূমিকা নিতে পারে, যেমন স্কুল পরিচালনা কমিটির সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশে পুকুর, খাল, নালা, কুপ আছে সেখানে নিরাপত্তামূলক বাউণ্ডারি দেয়ালের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। আর যদি স্কুলের সাথে লাগোয়া পুকুর থাকে, তাহলে সে ব্যাপারে স্থানীয় লোকজন এবং অভিভাবকদেরকে তার সন্তানের ব্যাপারে সতর্ক করে দেয়া উচিত এবং সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে রাস্তাগুলোতে স্পীড বেকার দেওয়া হয় যাতে এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা আর না হয়। এছাড়াও টিফিন পিরিয়ডের পর সকল শিক্ষার্থী উপস্থিত আছে কিনা শিক্ষক যেন সেদিকে নজর রাখে। গ্রামের প্রতিটি পরিবারের বাবা মা বড়ো ভাই যেন দায়িত্ব নিয়ে ছোটদেরকে সাঁতার শেখায়। তাহলে আর কোনো মায়ের বুক খালি হবে না। অকালে কোনো ফুল ঝরে যাবে না।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকোরবানিতে মেয়ের বাপের বাড়ি হতে পশু আনা থেকে বিরত থাকুন
পরবর্তী নিবন্ধমধ্যবিত্তের নীরব কান্না